ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুল গান্ধী। ছবি: সমাজমাধ্যম।
অসমে ঢুকেই প্রথমে শিবসাগরে অঙ্কিতা-কাঁটায় বিদ্ধ হলেন রাহুল গান্ধী। পরে, যোরহাটে তাঁর পদযাত্রার সময় পদপিষ্ট হয়ে জখম হলেন হলেন বেশ কয়েক জন। সব মিলিয়ে অসম পর্বের প্রথম দিনে খানিক হোঁচট খেল রাহুল গান্ধীর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা।
এ দিন রাহুলের যাত্রাপথে আমগুড়ির বিভিন্ন স্থানে লাগানো হয় ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার আদলে তৈরি বেশ কিছু পোস্টার, যেখানে রাহুলের সঙ্গে বহিষ্কৃত কংগ্রেস নেত্রী অঙ্কিতা দত্তর ছবি দিয়ে অঙ্কিতার জন্য ন্যায় চাওয়া হয়েছিল! অঙ্কিতার বাবা অঞ্জন দত্ত ছিলেন কংগ্রেসের নেতা ও রাজ্যের মন্ত্রী। অঙ্কিতাও ছিলেন রাজ্য যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী। কিন্তু জাতীয় যুব কংগ্রেস সভাপতি বি ভি শ্রীনিবাসের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ আনায় অঙ্কিতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল। আজ আমগুড়িতে রাহুলের যাত্রাপথে ধর্নায় বসেন অঙ্কিতা। অঙ্কিতা এক্স-হ্যান্ডলে রাহুলকে আমগুড়িতে স্বাগত জানিয়ে লেখেন, ‘এই সেই আমগুড়ি, যেখানে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত আমার বাবা কংগ্রেসের পতাকা বহন করেন। কংগ্রেসকে নেতৃত্ব দেওয়ায় আলফার বহু আক্রমণের মুখেও বেঁচে ফেরেন। আশা করি, আজ এখানকার মানুষ ও এই নারী ন্যায় পাবেন।’ গত বার ভারত জোড়ো যাত্রায় রাহুলের সঙ্গে হাঁটার ভিডিয়োও আপলোড করেন তিনি। কিন্তু পদযাত্রা না করে অঙ্কিতার প্রতিবাদ মঞ্চের সামনে দিয়ে বাসেই বেরিয়ে যান রাহুল।
কান্নায় ভেঙে পড়া অঙ্কিতা রাহুলের কাছে দাবি করেন, তাঁর তোলা অভিযোগের তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত শ্রীনিবাসকে পদের বাইরে রাখা হোক ও তাঁর প্রাথমিক সদস্যপদ ফেরত দেওয়া হোক। বলেন, “স্থানীয় কংগ্রেসের সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে পরের পদক্ষেপ করব। রাহুলের সঙ্গে ফের দেখা করার চেষ্টা করব।”
অঙ্কিতা-কাণ্ডকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার মুখ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা বলেন, “যেখানে অসম আন্দোলনের ৯০০ শহিদ বিচার পাননি, অঙ্কিতা কী ভাবে কংগ্রেসের থেকে বিচার পাবেন?” মন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা বলেন, “জনতার প্রশ্নের মুখোমুখি হওয়ার ভয়ে আমগুড়িতে পদযাত্রার পরিকল্পনা বাতিল করে বাসে করে চলে যান রাহুল। মানুষকে ন্যায় দেওয়ার ক্ষমতা তাঁদের নেই।’’
বিরোধী দলনেতা দেবব্রত শইকিয়া, কংগ্রেসের কার্যবাহী সভাপতি রানা গোস্বামীদের দাবি, শাসকদলের পরিকল্পনাতেই অঙ্কিতা এই কাজ করেছেন। রাহুল যোরহাটের ভাষণে বলেন, “দেশের সবচেয়ে ভ্রষ্ট ও দুর্নীতিগ্রস্ত মুখ্যমন্ত্রী অসমের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি ও তাঁর স্ত্রী-সন্তানেরা-সহ সকলে দুর্নীতিতে জড়িত। যে হেতু তাঁকে টাকা দিয়ে কেনা যায়, তাই তিনি ভাবেন, গোটা অসমকেই টাকা দিয়ে কেনা সম্ভব।”
বাসে বিভিন্ন সামাজিক ও জনগোষ্ঠী সংগঠনের সঙ্গে মত বিনিময় করেন তিনি। আহোমরা এসটি মর্যাদা না পাওয়া, চা নেতারা দৈনিক মজুরি বাড়ানোর দাবি নিয়ে, অনেকে সীমানা পুনর্বিন্যাস নিয়ে রাহুলের কাছে অভিযোগ জানান।