রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।
বিচারপতি লোয়াকে নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় আসার পরেই অমিত শাহের নির্দেশে রাহুল গাঁধীর বিরুদ্ধে আক্রমণে নামল গোটা বিজেপি। রাহুল পাল্টা বললেন, অমিত শাহের ‘সত্য’ উদ্ঘাটিত হবেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রকে ইমপিচ করা নিয়েও ফের নড়েচড়ে বসেছে বিরোধীরা।
এ দিন অমিত নিজে কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু তাঁর নির্দেশে রাজনাথ সিংহ, রবিশঙ্কর প্রসাদ থেকে শুরু করে যোগী আদিত্যনাথও আসরে নামেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘নিম্ন আদালত যখন টু-জি মামলায় ছাড় দিল, তখন কংগ্রেস মিষ্টি বিতরণ করল। আজ কিনা সুপ্রিম কোর্টের রায় নিয়ে সংশয় প্রকাশ করছে তারা!’’ বিজেপির অভিযোগ, অমিত শাহকে বদনাম করার ষড়যন্ত্র করেছিলেন রাহুলই। তাঁর ক্ষমা চাওয়া উচিত। ক্ষমা চাওয়া দূর অস্ত্। রাতে টুইট করে রাহুল পাল্টা বললেন, ভারতীয়রা যথেষ্ট বুদ্ধিমান। তাঁরা অমিত শাহের ‘সত্য’ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল। অমিতের মতো ব্যক্তিকে সত্যের কাছে ধরা দিতেই হবে।
বিজেপির তোলা অভিযোগগুলি নিয়ে এ দিন নিজেদের জবাব পেশ করে কংগ্রেস। যেমন, কংগ্রেসের দাবি, রাহুল গাঁধীর আত্মীয় বলে মামলাকারী তহেসিন পুণাওয়ালাকে কংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ বলে বিজেপি দাবি করছে। আসলে পুণাওয়ালা বিজেপির হয়েই কাজ করছেন। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালা আরও খোঁচা দিয়ে বলেন, বিজেপি আজ সুষমা স্বরাজ আর রাজনাথকে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলন করতে বলেছিল। কিন্তু সুষমা সামনে আসেননি। তার মানেই স্পষ্ট, বিজেপিতেও এই নিয়ে বিবাদ আছে। তাঁর কথায়, ‘‘তদন্ত ছাড়া আদালত ঠিক করতে পারে না মৃত্যু স্বাভাবিক কি না। আজ কী করে বিজেপি এক বিচারকের মৃত্যু নিয়ে নিজেদের জয় দেখছে?’’
আরও পড়ুন: আচমকাই বিকল সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইট
সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে ইমপিচ করার প্রস্তাব নিয়েও ফের আলোচনা শুরু হয়েছে বিরোধী শিবিরে। আগামিকাল এই নিয়ে একটি বৈঠকও ডাকা হয়েছে। কংগ্রেসের এক নেতার মতে, অনেক দলই লোয়া-মৃত্যুর রায় পর্যন্ত অপেক্ষা করতে চাইছিলেন। কংগ্রেসের বক্তব্য, রবিবার আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ প্রধান বিচারপতির বাড়ি গিয়ে দু’ঘণ্টারও বেশি বৈঠক করেছিলেন।
এই নিয়ে পাঁচ বার স্পর্শকাতর মামলায় নিরপেক্ষ তদন্তের আর্জি খারিজ হল সুপ্রিম কোর্টে। এর আগে সহারা-বিড়লা ডায়েরি, অরুণাচলের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী কালিখো পুল-এর আত্মহত্যা, এসএসসি প্রশ্ন-ফাঁস আর মেডিক্যাল কলেজের ঘুষ-মামলার তদন্তের আর্জি খারিজ হয়েছে। যার মধ্যে শেষটিতে খোদ প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নামও জড়িত ছিল।
হায়দরাবাদ থেকে সিপিএমও আজ বিবৃতি দিয়ে রায় ‘দুর্ভাগ্যজনক’ অ্যাখ্যা দিয়েছে। দলের বক্তব্য, এটিকে বৃহত্তর বেঞ্চে পাঠানো উচিত। সিপিএমের সীতারাম ইয়েচুরিই সবার আগে ইমপিচের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। যদিও তৃণমূল এই বৈঠকে না যাওয়ার কথা জানিয়েছে। ডিএমকে-এসপির মতো দলও গড়িমসি করছে। তৃণমূলের একটি অংশের মতে, এখন অনেকটা দেরি হয়ে গিয়েছে।