ক্লাস: রাহুল গাঁধীর সঙ্গে তাঁর আইকিডো গুরু পরিতোষ কর। টুইটার
নরেন্দ্র মোদী শুনলে কি আশ্বস্ত হবেন? রাহুল গাঁধীর মার্শাল আর্ট গুরু পরিতোষ কর বলছেন, আইকিডো কোনও আক্রমণাত্মক স্টাইল নয়। বরং জাপানি এই বিদ্যা শেখানো হয় আত্মরক্ষা করার জন্য। এবং, নিজেকে শান্ত রাখার জন্য। রাহুলও সেই লক্ষ্যেই নাকি আইকিডো শিখছেন, দাবি তাঁর গুরুর। রাজনীতির প্যাঁচপয়জারে যতই দক্ষ হতে হোক, এই মার্শাল আর্টে কোনও প্যাঁচের খেলাও নেই।
‘‘আইকিডো কোনও খেলা নয়। কারাটে, তাইকোন্ডো, জুডো বা কুস্তির মতো নয় বলেই এটাকে কখনও অলিম্পিক্স বা এশিয়ান গেমসে দেখা যায় না,’’ বৃহস্পতিবার বললেন পরিতোষ। গত কাল থেকে রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আইকিডো ক্লাসের ছবি টুইটারে ভাইরাল হয়ে যাওয়ার পরে যিনি কার্যত তারকা হয়ে গিয়েছেন। সারা দিন ধরে একাধিক সংবাদপত্র ও নিউজ চ্যানেলের ফোন পেয়েছেন। সন্ধে পর্যন্ত ব্যস্ত ছিলেন ইন্টারভিউ দিতে। অথচ, রাহুলকে তিনি হালফিলে মার্শাল আর্ট শেখাতে শুরু করেছেন, এমন নয়। ২০০৯ থেকে শেখাচ্ছেন। বোঝাই যাচ্ছে, আগে গোপন রাখা হলেও এখন আর টুইটার থেকে দূরে থাকছেন না তাঁরা।
পরিতোষ জানাচ্ছেন, রাহুল ক্লাসের ব্যাপারে ‘সিরিয়াস’। দিল্লিতে থাকলে এবং কাজে খুব ব্যস্ত না থাকলে সপ্তাহে দিন পাঁচেক ক্লাস করবেনই। ‘‘সকালে সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে ন’টা ক্লাস চলে,’’ বললেন আইকিডো গুরু। কী এই আইকিডো? জিজ্ঞেস করায় পরিতোষের বিশ্লেষণ, ‘‘এই মার্শাল আর্টে পায়ের ব্যবহার হয় না। হাত ব্যবহার করে আত্মরক্ষার কায়দা শিখতে হয়। আক্রমণাত্মক ভঙ্গি বা মারামারি বা প্যাঁচ দিয়ে ফেলে দেওয়া— কোনওটাই এতে নেই। এটা এক ধরনের আধ্যাত্মিক মার্শাল আর্ট (স্পিরিচুয়াল মার্শাল আর্ট)।’’
রাহুলের মাস্টার হওয়ার কাহিনি যদিও চমকপ্রদ। ২০০৯ সালে পরিতোষ একটি ফোন পান তাঁর অফিস থেকে। তাঁকে বলা হয়, রাহুল গাঁধী দেখা করতে চান। পরের দিন গিয়ে ইন্টারভিউ দেন পরিতোষ। কয়েকটি আইকিডো ভঙ্গি করেও দেখান। তার পরের দিনই আবার ফোন আসে যে, রাহুল তাঁর কাছে আইকিডো শিখতে চান। সেই অভিজ্ঞতা নিয়ে পরিতোষ বললেন, ‘‘ওঁর বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, খুব বেশি জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। তার পর ঠিক হল বাগানেই হবে ক্লাস।’’
রাহুল ফিট থাকতে পছন্দ করেন এবং খেলা খুবই ভালবাসেন বলেও জানাচ্ছেন তাঁর আইকিডো গুরু। যিনি জাপানে দশ বছর থেকে এই মার্শাল আর্ট শিখেছেন। ‘‘রাহুল নিজেকে ফিট রাখতে চায়। ভুরিওয়ালা রাজনীতিবিদ হওয়া একদম পছন্দ নয়। শুধু আইকিডো নয়, উনি জিমেও যান নিয়মিত,’’ বললেন পরিতোষ। জানাচ্ছেন, গুজরাতে গিয়েছেন বলে তাঁর ছাত্রের আইকিডো শিক্ষা আপাতত বন্ধ। পরের ক্লাস কবে হবে? পরিতোষ বলে দিলেন, ‘‘এসএমএস চলে আসবে।’’