সিবিআই সদর দফতরের সামনে কংগ্রেস বিক্ষোভের নেতৃত্বে রাহুল। ছবি: পিটিআই।
সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মাকে রাতারাতি ছুটিতে পাঠানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে বিক্ষোভ ঘিরে উত্তাল দিল্লি। রাফাল দুর্নীতির তদন্ত শুরু হওয়াতেই সিবিআই অধিকর্তাকে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে, এই অভিযোগ জানিয়ে শুক্রবার সকাল থেকেই দেশ জুড়ে কংগ্রেস কর্মীরা বিক্ষোভে যোগ দেন।
রাজধানীতে কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে শুরু হয় বিক্ষোভ। তবে শুধু দিল্লিই নয়, কংগ্রেস নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন চণ্ডীগড়, লখনউ-সহ উত্তরপ্রদেশের অন্যান্য শহরগুলিতেও। চণ্ডীগড়ে মিছিলের জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান ব্যবহার করে পুলিশ।
কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গাঁধী ও কংগ্রেস নেতারা দক্ষিণ দিল্লির লোদি রোডে সিবিআই সদর দফতরের বিপরীতে বিক্ষোভ সমাবেশ অংশগ্রহণ করেন। এক সময় রাহুল গাঁধীকে দেখা যায় ব্যারিকেডের উপরে উঠে সমবেত কর্মী সমর্থকদের উৎসাহিত করতেও। কর্মীরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। যদিও পুলিশ তাঁদের বাধা দেয়। এর পরই পুলিশ থানায় ঢুকে পড়েন রাহুল গাঁধী। থানায় ঢুকে এক ঘণ্টারও বেশি সময় কাটান তিনি। বাইরে তখন বিক্ষোভে উত্তাল ছিলেন কংগ্রেস সমর্থকেরা।
আরও পড়ুন: অলোক বর্মার বিরুদ্ধে তদন্ত দুই সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
সিবিআই অধিকর্তাকে ছুটিতে পাঠানোয় দেশজুড়ে বিক্ষোভ। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার কাজকর্ম পছন্দ না হওয়ায় হস্তক্ষেপ করছে কেন্দ্র। কংগ্রেস সভাপতি বলেন, সরকার স্বাধীন ভাবে কাজ করতেই দিচ্ছে না সংস্থাকে। অলোক বর্মার অপসারণকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন রাহুল। অবিলম্বে ‘নির্বাসিত’ সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মাকে তাঁর পদে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি জানান কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক অশোক গেহলট।
‘নির্বাসিত’ সিবিআই অধিকর্তা অলোক বর্মার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ নিয়ে ১০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করতে হবে। তদন্ত করবে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ কে পট্টনায়েক নেতৃত্বাধীন একটি কমিটি। কেন্দ্রীয় ভিজিল্যান্স কমিশনকে এই নির্দেশ দিয়েছে দেশের শীর্ষ আদালত। সদ্য ভারপ্রাপ্ত অন্তর্বর্তী সিবিআই অধিকর্তা নাগেশ্বর রাওকে আপাতত কাজ চালানোর নির্দেশ দেওয়া হলেও কোনও গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত সিদ্ধান্ত তিনি নিতে পারবেন না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
তৃণমূল কংগ্রেস, আম আদমি পার্টি, সিপিএম, সিপিআই ও লোকতান্ত্রিক জনতা দলের নেতাকর্মীরাও দয়াল সিংহ রোড থেকে লোদি রোডের এই মিছিলে যোগ দেন। রাফাল বিমানের পোস্টার নিয়ে সমাবেশের একেবারে সামনেই ছিলেন রাহুল। রাহুলের সঙ্গে ছিলেন কংগ্রেস নেতা অশোক গহলৌত, সিপিআই-এর ডি রাজা, এলজেডি শরদ যাদব এবং তৃণমূল নেতা নাদিমুল হক।
গত কালই সাংবাদিক সম্মেলনে রাহুল বলেন, ‘‘রাফাল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতির তদন্ত শুরু হচ্ছিল বলেই রাত ২টোয় সিবিআই ডিরেক্টরকে সরিয়ে দিলেন তিনি। কারণ প্রধানমন্ত্রী জানেন, তদন্ত শুরু হলেই তিনি শেষ।’’
আরও পড়ুন: সিবিআইয়ে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, যুযুধান দুই সেনাপতিকে ছুটিতে পাঠাল কেন্দ্র
লোকসভায় বৃহত্তম বিরোধী দলের নেতা মল্লিকার্জুন খাড়্গেকে দিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠিও লিখিয়েছেন রাহুল। কারণ, নিয়মমাফিক প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে গঠিত কমিটিই সিবিআই প্রধান নিয়োগ করে। তাঁকে হটানোর এক্তিয়ারও শুধু এই কমিটির। ‘‘সিবিআইয়ের নতুন কার্যনির্বাহী অধিকর্তার বিরুদ্ধেও দুর্নীতির অভিযোগ আছে,’’এমনটাও বলেন রাহুল।
দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।