সভানেত্রী রাজি, তবু সেনা-সঙ্গে আপত্তি রাহুলের

সূত্রের দাবি, উদ্ধব চেয়েছিলেন তাঁর শপথ অনুষ্ঠান হোক বিরোধী ঐক্যের শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। তাই তিনি সনিয়ার পাশাপাশি রাহুলের উপস্থিতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল গোঁ ধরে থাকেন, যাবেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৯ ০৩:০৯
Share:

রাহুল গাঁধী।—ছবি পিটিআই।

এসপিজি নিরাপত্তা নেই। তাঁকে এখন অন্য সাংসদদের মতো সাধারণ গেট দিয়ে সংসদে ঢুকতে হচ্ছে। রেগেমেগে ঢুকছেন রাহুল গাঁধী। সাংবাদিকরা ঘিরে ধরলেন, ‘‘শিবসেনার সঙ্গে জোট হচ্ছে বলে কি আপনি রেগে আছেন? তাই কি উদ্ধবের শপথে যাচ্ছেন না?’’

Advertisement

এ’টি গত কালের ঘটনা। কোনও জবাব না-দিয়ে সটান লোকসভায় চলে গেলেন রাহুল। কংগ্রেসের নেতারা তখনই জানিয়েছিলেন, ‘‘গোড়া থেকেই শিবসেনাকে সঙ্গে নেওয়ায় আপত্তি রয়েছে রাহুলের। সভাপতি পদে থাকার সময়েই বলতেন, মহারাষ্ট্রে জোট শুধু শরদ পওয়ারের সঙ্গেই। আর এ বারে যখন সেনার সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গড়ার প্রক্রিয়া এগোল, রাহুল বিদেশে। সনিয়া মহারাষ্ট্রে আপসের পথে হাঁটলেও রাহুলের সায় নেই।’’

সূত্রের দাবি, উদ্ধব চেয়েছিলেন তাঁর শপথ অনুষ্ঠান হোক বিরোধী ঐক্যের শক্তি প্রদর্শনের মঞ্চ। তাই তিনি সনিয়ার পাশাপাশি রাহুলের উপস্থিতিও চেয়েছিলেন। কিন্তু রাহুল গোঁ ধরে থাকেন, যাবেন না। শরদ পওয়ারের মধ্যস্থতায় স্থির হয়, উদ্ধব না হলে অন্তত আদিত্য ঠাকরে গিয়ে গাঁধী পরিবারকে আমন্ত্রণ জানান। রাতে আদিত্য দিল্লি আসেন। ১০ জনপথে প্রথম বার ঠাকরে পরিবারের কারও পা পড়ে। কিন্তু রাহুল বলে দিয়েছিলেন, আদিত্য যেন তাঁর সঙ্গে দেখা না করেন। সনিয়া ও মনমোহন সিংহের বাড়ি ঘুরে রাত দুটোয় মুম্বই ফেরেন আদিত্য।

Advertisement

সেনার সঙ্গে জোট বাঁধা নিয়ে কংগ্রেসের ভিতরেও দ্বিমত রয়েছে। ক’দিন আগেই মুম্বইয়ের সঞ্জয় নিরুপম বলেন, ‘‘শিবসেনার সঙ্গে যাওয়া উচিত নয়। যাঁরা সনিয়াকে ভুল বোঝাচ্ছেন, তাঁদের সরিয়ে দেওয়া উচিত। আর রাহুল গাঁধীরও উচিত, দলের দায়িত্ব নেওয়া।’’ সেনা-সঙ্গে আপত্তি রয়েছে মহারাষ্ট্রের শিবরাজ পাটিল থেকে কেরলের এ কে অ্যান্টনিরও। অনেকের আশঙ্কা, সেনা-সঙ্গে সংখ্যালঘু ভোট কমবে।

কিন্তু কংগ্রেস শিবির বলছে— কেন শিবসেনাকে সমর্থন, সনিয়া বোঝান রাহুলকে। রাহুলের সঙ্গে আলোচনায় স্থির হয়, আদিত্য এলেও সনিয়া মুম্বই যাবেন না। আজ সকালে সনিয়াকে মুম্বই যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। সনিয়া বলেন, ‘‘গলা খারাপ, এখনও ঠিক করিনি।’’ আর রাহুল ছিলেন খোশমেজাজে। সংসদে ঢোকার সময়ে মুম্বই যাওয়া নিয়ে প্রশ্নে রাহুল বলেন, ‘‘একটু সাসপেন্স থাক না।’’

সন্ধেয় উদ্ধবের শপথের ঠিক আগে অবশ্য উদ্ধবকে লেখা সনিয়া, রাহুল ও মনমোহনের চিঠি প্রকাশ করা হল। মনমোহন জানালেন ‘ঐতিহাসিক’ দিনের শুভেচ্ছা। সনিয়া লিখলেন, আদিত্য গত কাল এলেও তিনি যেতে পারছেন না। কিন্তু আশা করেন, বিষাক্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি, ভেঙে পড়া অর্থনীতি, কৃষিসঙ্কটে তিনটি দল অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মানুষের সুরাহা করবে। রাহুলও চিঠিতে কবুল করলেন, তাঁকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। সঙ্গে মহারাষ্ট্রে বিজেপির সরকার গড়াকে গণতন্ত্রের বিপদের লক্ষণ বলে বিজেপিকে পরাস্ত করার কথা শোনালেন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement