আরও আগ্রাসী রাহুল গাঁধী।
‘অজ্ঞাতবাস’ থেকে ফিরে আসার পরেই তিনি কখনও কৃষক, কখনও আবার শহুরে মধ্যবিত্তের সমস্যা নিয়ে সরব। তাঁর নিশানায় নরেন্দ্র মোদী-র ‘স্যুট-বুট কি’ সরকার। আজ সংসদে সরাসরি নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে ‘বদলার রাজনীতি’-র অভিযোগ তুলে আক্রমণে গেলেন রাহুল। যুক্তি, তাঁর লোকসভা কেন্দ্র অমেঠিতে মেগা ফুড পার্ক তৈরির প্রকল্প বাতিল করে দিয়েছে মোদী সরকার।
রাহুল গাঁধী মোদী সরকারকে আক্রমণ করবেন, সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আজ রাহুল সংসদে যে ভাবে কৃষকের প্রশ্ন তুলে এনেছেন, তাতে অনেকেই নেহরুর সমাজতন্ত্রের ছায়া দেখতে পাচ্ছেন। রাহুলের কথায়, ‘‘কৃষকেরা আমাকে প্রশ্ন করেছিলেন, চাষির কাছ থেকে দু’টাকা কেজি দরে আলু কেনার পর কোন জাদুতে একটা আলু দিয়ে তৈরি পট্যাটো চিপ্স ১০ টাকা দামে বিক্রি হয়?’’
রাহুলের দাবি, মেগা ফুড পার্ক তৈরি হলে তাঁর লোকসভা কেন্দ্রের চাষিরা সরাসরি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থাগুলির কাছে শাকসব্জি বিক্রি করতে পারতেন। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি করতে গিয়েই ওই ফুড পার্ক বাতিল করেছে।
রাহুলের আক্রমণে আজ মোদী সরকারকে নড়েচড়ে বসতে হয়েছে। লোকসভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহ নিজে জবাব দিয়েছেন, খুব সম্ভবত যে সংস্থা ফুড পার্ক তৈরির বরাত নিয়েছিল, তারাই সরে এসেছে। তা সত্বেও তিনি নিজেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে রাহুলকে জানাবেন। পরে সংসদের বাইরে রাহুল বলেন, ‘‘এর মধ্যে আর দেখার কিছু নেই। হয় এই প্রকল্প মঞ্জুর করা হবে না হলে বাতিল হবে। দেখা যাক।’’
রাজনাথ অবশ্য রাহুলের অভিযোগ খারিজ করে দিয়ে বলেন, ‘‘এর মধ্যে রাজনীতির কোনও প্রশ্নই আসছে না।’’ লোকসভায় বিতর্কের সময় রাহুলকে খোঁচা দেওয়ার চেষ্টায় রাজনাথ বলেন, ‘‘আমিও কৃষকের সন্তান। রাহুল কম জানেন। চিপ্সের দাম ৭০ টাকায় পৌঁছে যায়।’’
লোকসভার মধ্যেও বিজেপির সাংসদরা রাহুলের বক্তৃতায় সময়ে ক্রমাগত বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে গিয়েছেন। যা দেখে রাহুল কটাক্ষ করেছেন, ‘‘আমি স্যুট নিয়ে বলছি না, আলু নিয়ে বলছি। আপনারা ভয় পাচ্ছেন কেন!’’ এরপর স্মৃতি ইরানিকে সামনে রেখে আক্রমণে গিয়েছে বিজেপি। তিনি লোকসভা ভোটে রাহুলের বিরুদ্ধে অমেঠিতে লড়েছিলেন। স্মৃতি প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘ফুড পার্ক ২০১০ সালে ছাড়পত্র পেয়েছিল। ৪ বছর কংগ্রেস কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও ওই প্রকল্প রূপায়িত হয়নি কেন?’’