মুখে এক গাল কাঁচা-পাকা দাড়ি নিয়ে সদ্য কালই তাঁকে দেখা গিয়েছিল নিজের জন্মদিনে। সাদা টি-শার্ট আর নীল জিনসে হাসি মুখে কর্মীদের শুভেচ্ছা স্বীকার করেছেন। আর আজ সকাল হতেই ফের উধাও হওয়ার বার্তা।
হ্যাঁ, আবার ছুটিতে যাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। এ বারেও বিদেশে। আর এ বারেও অজ্ঞাতবাসে!
ঘড়ির কাঁটায় সকাল ৯টার একটু পরেই রাহুল টুইট করে জানান, কিছু দিনের জন্য দেশের বাইরে যাচ্ছেন। একটি ছোট সফরের জন্য। এর পর তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান, যাঁরা তাঁকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কিন্তু কোথায় যাচ্ছেন রাহুল?
তা দলের সিংহভাগ নেতাই জানেন না। যদিও বা কেউ কেউ জানেন, তাঁরা এই নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটে বসে রয়েছেন। ঠিক যেমনটি জানা যায়নি গত বছরের এক দীর্ঘ অবকাশের সময়ও। টানা ৫৬ দিন দেশের বাইরে ছিলেন তিনি। সংসদের বাজেট অধিবেশনের সময় তাঁর অনুপস্থিতি নিয়ে খোদ বিজেপি-ই কটাক্ষ করেছিল। সুষমা স্বরাজের মতো নেত্রীও রাহুলের বিদেশ সফর নিয়ে খোঁচা দিয়েছিলেন।
রাহুল ঘনিষ্ঠ নেতারা আজ তাই সাফাই দিয়ে বলছেন, এ বারে কংগ্রেসের সহ-সভাপতি তাই আগেভাগে টুইট করেই সকলকে জানিয়ে গেলেন। আর এটিও বলে দিলেন, গতবারের মতো আর সুদীর্ঘ ছুটি নয়, খুবই ছোট একটি ছুটিতে যাচ্ছেন তিনি। খুব সম্ভবত এই সপ্তাহেই তিনি ফিরে আসবেন। ক’দিন আগে সনিয়া গাঁধীকেও দেখা গিয়েছিল মেয়ে প্রিয়ঙ্কার সঙ্গে শিমলায় ছুটি কাটাতে। কিন্তু রাহুল কখন কোথায় যান, সেটি কাউকে ঘুণাক্ষরেও জানতে দেওয়া হয় না।
আরও পড়ুন: প্রতিরক্ষা থেকে বিমান, বিদেশি বিনিয়োগের জন্য প্রায় সব দরজা হাট
দলের অনেকের ক্ষোভ, গতকালই রাহুলের ৪৬তম জন্মদিন ছিল। এই জন্মদিন উপলক্ষে রাহুল বড় কোনও কর্মসূচি হাতে নিতে পারতেন। বিশেষ করে পাঁচ রাজ্যে ফল ভাল না হওয়ার পর কর্মীদের চাঙ্গা করার জন্য। তাঁকে সভাপতি পদে উত্থানের কাজটিও এ মাসের মধ্যে সেরে ফেলা যেত। রাহুলকে শুভেচ্ছা জানাতে এমনিতেই নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। তারও ভরপুর সুযোগ নেওয়া যাতে পারত। উল্টে গতকাল শুভেচ্ছা জানাতে গিয়ে দিল্লি কংগ্রেসের সভাপতি অজয় মাকেন যে ভাবে এক কর্মীর প্রতি অপশব্দ ব্যবহার করেছেন, তা নিয়ে নতুন বিতর্ক তৈরি হয়েছে।
তার উপর সামনে উত্তরপ্রদেশের মতো বড় রাজ্যের নির্বাচন। নরেন্দ্র মোদী থেকে অখিলেশ, মায়াবতী সকলেই আসরে নেমে পড়েছেন। ফি-হপ্তায় গড়ে ৩-৪ দিন করে সেখানে যাচ্ছেন বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ। এই অবস্থায় কংগ্রেস এখনও যুদ্ধের কৌশলই স্থির করতে পারেনি। মুখ্যমন্ত্রীর মুখ নিয়েও জট কাটেনি। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ অবশ্য বলেন, ‘‘খুব শীঘ্রই রাহুল গাঁধী ছুটি কাটিয়ে ফিরে আসবেন। এসেই তিনি নির্বাচনী প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন।’’