সুশীল কুমার শিন্ডে
তিনি যে ইস্তফায় অনড়, কংগ্রেসশাসিত রাজ্যগুলির মুখ্যমন্ত্রীদেরও আজ তা জানিয়ে দিলেন রাহুল গাঁধী। কংগ্রেস সূত্রের দাবি, সুশীল কুমার শিন্ডের মতো কোনও প্রবীণ নেতাকে নিজের উত্তরসূরি হিসেবে বেছে নিতে পারেন রাহুল। তাঁর নাম নিয়েই দলের শীর্ষ স্তরে আলোচনা চলছে।
কংগ্রেস সূত্র বলছে, প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা এখন বিদেশে। রাহুলও ফের বিদেশে যেতে পারেন। ফিরে আসার পরেই কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক ডেকে নতুন সভাপতি নির্বাচনের সিদ্ধান্ত হতে পারে। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ৭৭ বছর বয়সি দলিত নেতা শিন্ডেকে যদি বেছে নেওয়া হয়, সেটি হবে গাঁধী পরিবারের প্রতি তাঁর আনুগত্যের জন্যই। শিন্ডে নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা কখনও প্রকাশ করেননি। এক বার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী না হতে পারায় রাজ্যপাল করে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। তাতেও টুঁ শব্দ করেননি। শরদ পওয়ারের সঙ্গেও তাঁর ঘনিষ্ঠতা রয়েছে। পওয়ারের এনসিপির সঙ্গে কংগ্রেসের মিশে যাওয়ার জল্পনা অনেক দিনের। পওয়ার নিজের কন্যা সুপ্রিয়া সুলেকে মহারাষ্ট্র কংগ্রেসের সভানেত্রী ও সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর মুখ হিসেবে তুলে ধরতে চান। সে সব মিলিয়েই এখন শিন্ডের নাম সভাপতির দৌড়ে এগিয়ে। শিন্ডে না হলে গহলৌত, মল্লিকার্জুন খড়্গে, গুলাম নবি আজাদের নামও তালিকায় রয়েছে বলে কংগ্রেস সূত্রের দাবি।
আজ পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহ, রাজস্থানের অশোক গহলৌত, মধ্যপ্রদেশের কমল নাথ, ছত্তীসগঢ়ের ভূপেশ বাঘেল ও পুদুচেরীর নারায়ণস্বামী একসঙ্গে রাহুলের বাড়িতে গিয়ে দেখা করেন। দুপুর সাড়ে তিনটেয় সেখানে যাওয়ার আগেই গহলৌত টুইট করে বলেন, ‘‘ভোটে হারের দায় আমরা স্বীকার করছি। আমরা রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আছি। সে কারণেই কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রীরা তাঁর বাড়িতে যাচ্ছি।’’ দুপুর গড়িয়ে বিকেল পর্যন্ত প্রায় দু’ঘণ্টারও বেশি মুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাহুল। বেরিয়ে এসে গহলৌত বলেন, ‘‘ভোটে হার-জিত থাকেই। আমরা আজ সকলে খোলা মনে নিজেদের ও দলের কর্মীদের মনের কথা রাহুল গাঁধীকে জানিয়েছি। তিনি মন দিয়ে শুনেছেন। আশা করি, আমাদের কথা ভেবে তিনি সময় মতো উপযুক্ত সিদ্ধান্ত নেবেন।’’ কিন্তু তার পরেও রাহুল সংসদ ভবন চত্বরে স্পষ্ট বলেন, ‘‘আমি তো আমার অবস্থান একাধিক বার জানিয়ে দিয়েছি। সেখান থেকে কোনও বদল হবে না।’’
গত কয়েক দিন ধরেই কংগ্রেসের নবীন নেতাদের ঢল নেমেছিল ইস্তফা দেওয়ার। মুখ্যমন্ত্রীরা যাতে পদত্যাগপত্র নিয়ে রাহুলের সঙ্গে দেখা করতে যান, সে দাবিও উঠেছিল দলের মধ্যে থেকে। গহলৌতের যুক্তি, ‘‘ভোটের ফল প্রকাশের দিনই আমরা সকলে ইস্তফা দিতে চেয়েছি। ওয়ার্কিং কমিটি রাহুল গাঁধীর হাতেই অধিকার দিয়েছে, তিনি যেমন চান সিদ্ধান্ত নিন। যদি পুনর্গঠন করতে চান, কাউকে সরাতে চান, সেটা তাঁরই সিদ্ধান্ত।’’