কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করল। ছবি পিটিআই।
রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে কংগ্রেসের পাঁচ সদস্যের এক প্রতিনিধি দল আজ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে দেখা করে উত্তরপ্রদেশে লখিমপুর খেরির ঘটনার বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবি করল। পাশাপাশি, কৃষকদের গাড়িচাপা দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত আশিস মিশ্রের বাবা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রকে সরানোর দাবিও তোলা হল। কংগ্রেসের প্রতিনিধি দলে রাহুল ছাড়াও ছিলেন প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা, মল্লিকার্জুন খড়্গে, গুলাম নবি আজাদ এবং এ কে অ্যান্টনি।
রাষ্ট্রপতিকে গোটা ঘটনা নিয়ে একটি স্মারকলিপি দেন কংগ্রেস প্রতিনিধিরা। পরে রাহুল বলেন, “আমরা রাষ্ট্রপতিকে জানিয়েছি যে, অভিযুক্তর বাবা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে, তাঁর পদ থেকে সরানো হোক। কারণ তাঁর উপস্থিতিতে ন্যায্য তদন্ত করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি আমরা দাবি করেছি, সুপ্রিম কোর্টের দু’জন কর্মরত বিচারপতিকে দিয়ে ঘটনার তদন্ত করা হোক।” প্রিয়ঙ্কার কথায়, “রাষ্ট্রপতি আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন, আজই তিনি এই বিষয়টি নিয়ে সরকারের সঙ্গে কথা বলবেন।”
কংগ্রেসের পক্ষ থেকে যে চিঠি রাষ্ট্রপতিকে দেওয়া হয়েছে, সেখানে লখিমপুর খেরির পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকারের আনা তিনটি কৃষি আইন, গত দেড় বছরের কৃষক আন্দোলনের কথা সবিস্তার বলা হয়েছে। রাজনৈতিক সূত্রের মতে, উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে হঠাৎ তৈরি হওয়া এই কৃষক মৃত্যুর ঘটনাকে দিল্লিতেও প্রচারের আলোয় আনতে চাইছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। সাধারণত প্রিয়ঙ্কাকে দিল্লিতে খুব একটা সক্রিয় দেখা যায় না। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বপ্রাপ্ত দলের সাধারণ সম্পাদক হিসাবে আজ তাঁকে দেখা গিয়েছে রাষ্ট্রপতির বাসভবনে যেতে। চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘তিনটি কালা কানুনের বিরুদ্ধে দেশের রাজধানীর দ্বারপ্রান্তে লক্ষ লক্ষ কৃষক আন্দোলন করছেন। বৃষ্টি, চরম গরম এবং ঠান্ডার মোকাবিলা করছেন সাহসের সঙ্গে। তাঁদের মনের জোর নষ্ট হয়নি। প্রায় হাজার চাষীর মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু ন্যায়বিচারের জন্য তাঁদের গাঁধীবাদী সংকল্প এখনও দৃঢ়। মোদী সরকার তাঁদের সঙ্গে সদর্থক বাক্যালাপে নারাজ। সরকারের নীতি, অন্নদাতাদের ক্লান্ত করিয়ে তাঁদের আন্দোলন তুলে নিতে বাধ্য কর। কিন্তু এই কৌশল ব্যর্থ হবে।’
এর পরেই লখিমপুর খেরি প্রসঙ্গ টেনে অজয় মিশ্রর দিকে তোপ দেগে চিঠিতে বলা হয়েছে, ‘এই প্রসঙ্গে ২৭ সেপ্টেম্বর ভারত বন্ধ ডাকা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি একটি প্রকাশ্য সমাবেশে আন্দোলনরত কৃষকদের সরাসরি হুমকি দেন। সেই ভিডিয়ো অনেকের কাছেই পৌঁছে গিয়েছে। আসল উস্কানি যখন খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর কাছ থেকেই এসেছে, তখন কী ভাবে ন্যায়বিচার সম্ভব?’ কংগ্রেসের অভিযোগ সত্ত্বেও মন্ত্রী পদে বহাল রয়েছেন টেনি। তাঁর বিরুদ্ধে পুরনো খুনের মামলাটিকেও সামনে নিয়ে এসে কংগ্রেস রাষ্ট্রপতিকে লিখেছে, ‘এ কথাও অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্র টেনি খুনের অভিযোগে অভিযুক্ত। জেলা আদালত তাঁকে ছাড় দিলেও ২০০৪ সাল থেকে ইলাহাবাদ হাই কোর্টে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা সেই ২০০৪ সাল থেকে ঝুলে রয়েছে।’