ছবি: সংগৃহীত
দিল্লির রামলীলা ময়দানে রাহুল গাঁধী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতারা সম্মিলিত ভাবে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিরুদ্ধে জনসভা করতে চলেছেন।
এই বিষয়ে রাহুল এবং অন্যান্য বিরোধী নেতাদের সঙ্গে মমতার কথা হয়েছে। ঠিক হয়েছে, রাজ্যে-রাজ্যে কৃষকদের চরম সঙ্কটকে প্রধান কর্মসূচি করে অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রচারে নামবে বিরোধীরা। আগামিকাল মমতা দিল্লি এলে এ নিয়ে সবিস্তার কথা হবে। নোট বাতিলের পরে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হয়েছিলেন মমতা। তার পর পশ্চিমবঙ্গে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় দিল্লির অধ্যায়ে কিছুটা ভাটা পড়েছিল। তৃণমূল সূত্র বলছে, এ বার কৃষক আত্মহত্যার মতো স্পর্শকাতর বিষয়কে সামনে রেখে জাতীয় রাজনীতিতে সক্রিয় হবেন মমতা।
সংসদের বাদল অধিবেশন শেষ হচ্ছে ১১ অগস্ট। চাষিদের সমস্যাকে নিয়ে সংসদেও মোদী সরকার তথা বিজেপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে বিরোধীরা। কৃষকদের বিভিন্ন সংগঠনও স্বতস্ফূর্ত ভাবে দিল্লির যন্তরমন্তরে পৌঁছে বা দেশের অন্য প্রান্তে আন্দোলন শুরু করেছে। মমতা বলেন, ‘‘কৃষকদের সঙ্কট একটি রাজ্যের বা একটি দলের সমস্যা নয়। গোটা দেশের জ্বলন্ত সমস্যা। পরিস্থিতি মোকাবিলায় মোদী সরকার ব্যর্থ হয়েছে। কৃষি উৎপাদনের বৃদ্ধির হার কমেছে। বেড়েছে কৃষক আত্মহত্যা।’’
মধ্যপ্রদেশের মন্দসৌর থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে কৃষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। রামলীলায় জনসভা করে একে হাতিয়ার করতে চায় বিরোধীরা। বিরোধী শিবিরের এক শীর্ষ নেতার ব্যাখ্যা, রামলীলা ময়দান অনেক নতুন রাজনৈতিক অধ্যায়ের সাক্ষী। জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলন থেকে শুরু করে বিজেপির জয়যাত্রার সূচনাও শুরু হয়েছিল এখান থেকে। এ বার মোদী সরকারের তিন বছরে এসে ইতিহাসের নীরব সাক্ষী সেই রামলীলা ময়দান থেকেই পরিবর্তনের সূচনা করতে চান বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: ফি মাসে ইস্তফা উদ্যাপন, মায়ার নজরে দলিতরা
বিরোধীদের কৃষক-সভায় কংগ্রেস, তৃণমূল, বামেরা ছাড়াও জাঠ নেতা অজিত সিংহ, আপের শীর্ষনেতা অরবিন্দ কেজরীবালও থাকবেন। রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতি ভোটকে সামনে রেখে যে দলগুলিকে পাশে পাওয়া যাচ্ছে, তাদের সবাইকেই রামলীলার মঞ্চে আনার চেষ্টা হবে। দিল্লির পরেই জনসভা করতে মমতা যাবেন পটনায়। বাকি বিরোধী দলের সঙ্গে তিনিও থাকবেন লালুর মঞ্চে। এর পরে মমতা পৌঁছবেন ঝাড়খণ্ডে।
কৃষকদের সমস্যা নিয়ে বিরোধীরা একজোট হলেও নীতীশ কুমার কী করেন, সেটা দেখার। বিহারের জোটের ভবিষ্যতের উপর সব কিছু নির্ভর করছে। নীতীশ রাহুল গাঁধীর সঙ্গে দেখা করে লালু-পুত্রকে মন্ত্রিসভা থেকে সরাতে চাপ দিচ্ছেন। কিন্তু বিজেপির সঙ্গে যাবেনই, এমন আশ্বাস মোদী শিবিরকে এখনও পর্যন্ত দেননি। তাতেই আশাবাদী কংগ্রেস। দলের নেতা অজয় মাকেনের মন্তব্য, ‘‘মোদী সরকারের বিরুদ্ধে অসন্তোষ যে বাড়ছে, তা মায়াবতী বুঝতে পারলে নীতীশ কুমার বুঝতে পারবেন না, এমনটা হতে পারে না।’’a