পাঁচ রাজ্যের হারের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হননি। রাফালের রায় আসতেই তেড়েফুঁড়ে উঠলেন অমিত শাহ। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে রাহুল গাঁধী বধে সংসদের ভিতরে ও বাইরে নামিয়ে দিলেন বিজেপির ফৌজকে।
রাফালের রায় আসার পরেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন অমিত। অরুণ জেটলি, নির্মলা সীতারামনও দেখা করেন নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। মোদী নিজে কিছু না বললেও তাঁর ফৌজ নেমে পড়ে। রায় যখন এল, তখন সংসদ চলছে। পাঁচ রাজ্যের ফল প্রকাশের পর চুপসে থাকা বিজেপির সাংসদরা তিন দিন পর আজ সংসদের দুই সভাতে উঠে দাঁড়িয়ে হল্লা করলেন। রাহুল গাঁধীকে ক্ষমা চাইতে বললেন। এরপর একই ভাবে আক্রমণাত্মক হলেন অমিত শাহ।
কিন্তু পাঁচ রাজ্যের ফল নিয়ে অমিত শাহের মুখ থেকে তো একটি শব্দও শোনা গেল না? সাংবাদিক সম্মেলনে অমিতের শুধু আশ্বাস, ‘‘হবে হবে। কয়েক দিন পর।’’ কংগ্রেসের
নেতারা বলছেন, ‘‘রাফালের রায়ে বিজেপির উৎসবের কী হল? রাফাল দিয়ে হারের ক্ষত ঢাকতে চায় তারা। এই তদন্তের একটাই পথ যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি)। যেখানে সব ফাইলের চুলচেরা বিচার হবে, প্রধানমন্ত্রীকে জেরা করা হবে।’’ একই সুরে বিভিন্ন মঞ্চ প্রশ্ন তুলেছে, সুপ্রিম কোর্ট রায় দিয়েছে নিজের এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে। বাকি অনেক তথ্য রয়েছে সরকারের ঘরে। জেপিসি গড়া হলে তবেই সেই তথ্য পাবেন বিরোধী সাংসদেরা। সত্য সামনে আসবে।
কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের রায়কে অস্ত্র করেই অরুণ জেটলি জানান, জেপিসি হবে না। আদালতই শেষ কথা। কারণ, জেপিসিতে সব দলের সাংসদ থাকবে, তাতে রাজনীতি হবে। কংগ্রেসের রণদীপ সিংহ সুরজেওয়ালার প্রশ্ন, ‘‘তা হলে বফর্সে কেন জেপিসি চেয়েছিল বিজেপি? আর সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে নরেন্দ্র মোদীর যদি কোনও ভয় না-ই থাকে, তা হলে জেপিসি করতে ভয় কোথায়? সেখানে তো বিজেপিরও সাংসদ থাকবেন!’’
আরও পড়ুন: ‘নরেন্দ্র মোদীর জয় নয়, বলুন ভারতমাতার জয়’, নিজের জয়ধ্বনি শুনতে নারাজ প্রধানমন্ত্রী
উত্তর এড়াচ্ছে বিজেপি। কিন্তু ক্ষত মোকাবিলায় দলের নেতা-কর্মীদের কাছে রাফাল-হাতিয়ার তুলে দিয়েছে। অমিতের প্রশ্ন, রাফাল অভিযোগের পিছনে রাহুলের সূত্র কী? সুপ্রিম কোর্টে গেল না কেন কংগ্রেস? কেন ইউপিএ জমানায় রাফাল চুক্তি হল না? ঘুষের টাকা চূড়ান্ত হয়নি বলে? জাতীয় নিরাপত্তার নিয়ে ছিনিমিনি খেলে কার স্বার্থ চরিতার্থ করছেন? রবিশঙ্কর প্রসাদের প্রশ্ন, ‘‘রাহুলের অভিযোগে পাকিস্তান কেন বাহবা দেয়?’’ অরুণ জেটলির প্রশ্ন, ‘‘গাঁধী পরিবার কি সুপ্রিম কোর্টেরও উপরে?’’
মোদীর পক্ষে সওয়াল করে অমিত বলেন, ‘‘চোরেরাই ভয় পায় চৌকিদারকে। সব চোরের তাই এক রা ‘চৌকিদার চোর’। সুপ্রিম কোর্টের রায় সকলের মুখে সপাটে থাপ্পড়। কংগ্রেসের বি-টিম আদালতে গিয়েছে, কিন্তু সকলের মুখোশ খুলে গিয়েছে।’’ ‘মিথ্যা’ বলার জন্য কি রাহুলের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেবেন? আর অটল জমানার যে মন্ত্রী যশবন্ত সিন্হা, অরুণ শৌরিরা আদালতে গিয়েছেন, তাঁরাও কি কংগ্রেসের বি-টিম? অমিতের জবাব, ‘‘মিথ্যা বলার ছাড় তো সকলের, তার কী আইনি ব্যবস্থা? আর যাঁরা কংগ্রেসের সঙ্গে গিয়েছেন আপনা থেকেই বি-টিম।’’