রাফালের দাম নির্ধারণের নথি জমা দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র
এবার আর শুধু সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া বিষয়ক নয়, কেন্দ্রকে রাফাল চুক্তির দাম সংক্রান্ত নথিপত্রও জমা দিতে বলল সুপ্রিম কোর্ট। পাশাপাশি অনিল অম্বানীর সংস্থা কীভাবে বরাত পেল, সেই সংক্রান্ত নথিও চেয়েছে শীর্ষ আদালত। প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দিয়েছে, ১০ দিনের মধ্যে লিখিত আকারে সিল করা খামে ওই নথি জমা দিতে হবে। তবে জনসমক্ষে আনা হবে না সেই সব নথি। শীর্ষ আদালতের নয়া নির্দেশের জেরে রাফাল নিয়ে আরও চাপে পড়ল কেন্দ্র তথা মোদী সরকার।
কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়া হয়েছিল, চুক্তির নথি অত্যন্ত স্পর্শকাতর এবং গোপনীয়। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা সংক্রান্ত আগের কোনও চুক্তির নথিও আদালতে বা সংসদে প্রকাশ্যে আনা হয়নি। তাই নথি জমা দেওয়া হবে না। সরকারের এই বক্তব্যও লিখিত আকারে জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
আগের শুনানিতে সুপ্রিম কোর্টই বলেছিল, রাফাল চুক্তির সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রক্রিয়ার নথিপত্র জমা দিতে। উল্লেখ করে বলেছিল, দাম নির্ধারণ নিয়ে শীর্ষ আদালত মাথা ঘামাতে চায় না। তবে আগের শুনানি হয়েছিল তৎকালীন প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রর বেঞ্চে। এদিন বর্তমান প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ-এর বেঞ্চ উল্লেখ করেছে, ‘‘আমরা চাই রাফালের দাম নির্ধারণের প্রক্রিয়া এবং দাম একটি সিল করা খামে সুপ্রিম কোর্টে জমা দিক কেন্দ্র। দশ দিনের মধ্যেই এই তথ্য ও নথিপত্র জমা দিতে হবে।’’
আরও পড়ুন: বিশ্বের উচ্চতম! সর্দার বল্লভভাই পটেলের মূর্তি উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী
ভারত-ফ্রান্স রাফাল চুক্তিতে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন দুই প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা এবং অরুণ শৌরি। চুক্তিতে অনিল অম্বানী সংস্থা কীভাবে যুক্ত হয়, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। সেই মামলার শুনানিতেই বুধবার প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ অবশ্য উল্লেখ করে, রাফালের প্রযুক্তিগত বিষয় নিয়ে কোনও আপত্তি বা অভিযোগ নেই। অভিযোগ শুধুই চুক্তির প্রক্রিয়া, দাম নির্ধারণ—এই সব বিষয় নিয়ে।
নির্দেশের পর অরুণ শৌরি বলেন, ‘‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’’ তাঁর যুক্তি, ‘‘গোপনীয়তার সঙ্গে দামের কোনও সম্পর্ক নেই। প্রযুক্তিগত দিক জনসমক্ষে এলে তাতে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে। কিন্তু দাম প্রকাশ্যে এলে নিরাপত্তায় ত্রুটি হবে, যুক্তি খাটে না। এ নিয়ে ফের সওয়াল করা হবে।’’
আরও পড়ুন: কেন্দ্র-আরবিআই সংঘাত চরমে, ইস্তফা দিচ্ছেন গভর্নর উর্জিত! জল্পনা তুঙ্গে
২০১৬ সালে ৫৯০০০ হাজার কোটি টাকায় ফ্রান্সের দাসো এভিয়েশনের কাছ থেকে ৩৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার কথা প্যারিসে ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এই চুক্তি নিয়ে গোড়া থেকেই প্রশ্ন তুলেছে কংগ্রেস। রাহুল গাঁধী অভিযোগ করে আসছিলেন, বেআইনি ভাবে চুক্তিতে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বেআইনি সুবিধা পাইয়ে দিতেই কোনও অভিজ্ঞতা না থাকা সত্ত্বেও অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছে মোদী সরকার।