ছবি সংগৃহীত ।
নতুন বিধানসভা ভবন ঘিরে তরজায় জড়াল হরিয়ানা এবং পঞ্জাব। সঙ্গে জুড়ে গেল কেন্দ্রও।
হরিয়ানার বিজেপি সরকারের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টর গতকাল জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি মেনে হরিয়ানার পৃথক বিধানসভা ভবনের জন্য চণ্ডীগড়ে জমি দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
বর্তমানে পঞ্জাব ও হরিয়ানা সরকার দু’পক্ষই কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়ে বিধানসভা কমপ্লেক্সকে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করে। গত এক বছর ধরেই হরিয়ানার বিজেপি সরকার পৃথক বিধানসভা ভবনের জন্য দাবি জানাচ্ছিল। শাহের ঘোষণার পরে গতকাল খট্টর টুইটারে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন।
খট্টর শাহকে ধন্যবাদ জানালেও বিষয়টি নিয়ে তরজা গড়িয়েছে পঞ্জাবে। সে রাজ্যের জন্যও পৃথক বিধানসভা গড়ার জমি চেয়ে শাহের কাছে আবেদন জানিয়েছেন পঞ্জাবের আম আদমি পার্টির মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান। টুইটারে তিনি একই সঙ্গে লিখেছেন, পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টকে আলাদা করার দাবি দীর্ঘদিনের। এর জন্যও চণ্ডীগড়ে পৃথক জমি দিক কেন্দ্র।
১৯৬৬ সালে পঞ্জাব ও হরিয়ানা পৃথক হলেও দুই রাজ্যেরই সচিবালয় ও বিধানসভা ভবন একই। খট্টরের বক্তব্য, ২০২৬ সালে আসন পুনর্বণ্টন নীতি চালু হওয়ার কথা এবং তার ভিত্তিতে ২০২৯ সালের লোকসভা নির্বাচন হবে। আসন পুনর্বণ্টন হলে বিধানসভার আসন সংখ্যা বাড়বে। বর্তমানে হরিয়ানায় ৯০ জন বিধায়ক আছেন। ‘ডিলিমিটেশন’ হলে সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ১২৬। খট্টরের বক্তব্য, বর্তমান বিধানসভার যে অংশটুকু তাঁরা ব্যবহার করেন, তাতে ৯০ জন বিধায়ককেই যথেষ্ট জায়গা দেওয়া সম্ভব হয় না। তা ছাড়া বর্তমান বিধানসভা ভবনটি ঐতিহ্যশালী হওয়ায় সেখানে বাড়ানোর কোনও অবকাশ নেই। ফলে কর্মীরাও যথেষ্ট জায়গা পান না।
এ দিকে কেন্দ্র যে ভাবে হরিয়ানাকে জমি বণ্টনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবং পঞ্জাব সরকার যে ভাবে কেন্দ্রের কাছে জমির জন্য দরবার করেছে, তাতে ক্ষুব্ধ পঞ্জাবের কংগ্রেস সভাপতি অমরিন্দর সিংহ রাজা। তাঁর বক্তব্য, চণ্ডীগড় নিয়ে পঞ্জাবের সরকার এবং সে রাজ্যের মানুষের অনুভূতির তোয়াক্কা না করেই অমিত শাহ হরিয়ানাকে আলাদা বিধানসভা ভবন গড়ার জমি বরাদ্দ করছেন। অবিলম্বে পুরো প্রক্রিয়া স্থগিত রেখে সব পক্ষকে নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হোক।
ভগবন্তের জমির আবেদন নিয়েও ক্ষুব্ধ বিরোধীরা। শিরোমণি অকালি দলের প্রধান সুখবীর সিংহ বাদল বলেন, ‘‘যিনি নিজেকে পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বলে দাবি করেন, তিনি কী ভাবে রাজধানী চণ্ডীগড়ের উপরে পঞ্জাবের অবিসংবাদিত অধিকারকে ছেড়ে দিতে পারেন! এই ঘটনায় আমি স্তম্ভিত।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুরো চণ্ডীগড় শহরটিই পঞ্জাবের এবং পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভা গড়তে এক টুকরো জমির জন্য ভিক্ষা করছেন! তিনি কী করে হরিয়ানার সুরে কথা বলছেন?’’ তাঁর বক্তব্য, চণ্ডীগড়ের এক ইঞ্চি জমিও হরিয়ানাকে দেওয়ার অধিকার কেন্দ্রের নেই। কংগ্রেস নেতা সুখপাল কৈরালার অভিযোগ, ভগবন্ত চণ্ডীগড়ের উপরে পঞ্জাবের দাবিকেই দুর্বল করে ফেলছেন।