প্রতীকী ছবি
রাস্তায় পড়ে সাহায্যের জন্য কাতরাচ্ছেন এক যুবক। দুর্ঘটনার ক্ষতবিক্ষত। রক্তে ভেসে যাচ্ছে সারা শরীর। দেখেও না দেখার ভান করে চলে যাচ্ছেন পথচলতি মানুষ। কেউ দেখে আবার ছবি তোলায় ব্যস্ত। আর এ ভাবেই পড়ে থেকে, অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে মরে যেতে হল পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার ওই যুবককে। বুধবার এমনই অমাবিক ঘটনার সাক্ষী থাকল মহারাষ্ট্রের পুণে শহরের ভোসারি এলাকা।
আরও পড়ুন: মেঘভাঙা বৃষ্টি, জম্মুতে মৃত ৬
ইন্দ্রাণীনগর কর্নারের ভোসারিতে গত বুধবার সন্ধ্যায় চলন্ত গাড়ির ধাক্কায় গুরুতর জখম হন বছর পঁচিশের সতীশ প্রভাকর মেটে। রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তায় পড়ে সাহায্যের জন্য আকুতি জানাতে থাকেন। ইতিমধ্যেই তাঁকে ঘিরে ভিড় জমান পথচলতি মানুষ। কিন্তু কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেননি। বরং সাহায্যের জন্য কাতরাতে থাকা যুবকের ভিডিও তুলতে শুরু করেন কেউ কেউ। দীর্ঘ ক্ষণ এই ভাবে রাস্তায় পড়ে থাকার পর সাহায্য মেলে। এগিয়ে আসেন এক দন্ত চিকিৎসক। কিন্তু তত ক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে।
কার্তিকরাজ কাটে নামে ওই চিকিৎসক জানিয়েছেন, ওই দিন সন্ধে সাড়ে ৬টা নাগাদ তিনি ভোসারিতে তাঁর ক্লিনিকে যাচ্ছিলেন। রাস্তায় ভিড় দেখে গাড়ি থামিয়ে এগিয়ে গিয়ে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় এক যুবক পড়ে আছেন। তাঁর কথায়, ‘‘তখনও যুবকের জ্ঞান ছিল। তাঁর হাত পা নড়ছিল। সেখানে অনেকেই তাঁকে ঘিরে ছবি তুলছিলেন। কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কথা কেউ ভাবেননি।’’ একটি অটোরিকশা করে তৎক্ষণাৎ তিনি সতীশকে যশবন্ত রাও চহ্বান মেমোরিয়াল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা।
কাটে জানিয়েছেন, যুবকের আঘাত খুবই গুরুতর ছিল। তাঁর কান ও নাক গিয়ে রক্ত বেরোচ্ছিল। পেটের উপর গাড়ির চাকার দাগও পাওয়া গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন (বুকে পাম্প করে কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করার চেষ্টা)-এর সাহায্যে তাঁর প্রাণ বাঁচানোরও চেষ্টা করেন। কিন্তু বহু সময় পেরিয়ে যাওয়ায় সেই প্রক্রিয়াও ঠিকঠাক কাজ দেয়নি। ধীরে ধীরে নিথর হয়ে আসতে থাকে ওই যুবকের দেহ। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই তাঁর মৃত্যু হয়।