লখনউয়ে এক দলিত এলাকায় সাফাই অভিযানে কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরা। শুক্রবার। পিটিআই
উত্তরপ্রদেশ পুলিশ তাঁকে সরকারি অতিথিশালায় আটক করে রাখার পর প্রিয়ঙ্কা গাঁধী সেখানকার ঘর ঝাঁট দিয়ে সাফ করেছিলেন। আজ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ তা নিয়ে কটাক্ষ করে বললেন, ‘‘জনতা ওঁকে এরই যোগ্য করে তুলতে চায়।’’
যোগীর এই মন্তব্যকে রাজনৈতিক হাতিয়ার করতে প্রিয়ঙ্কা আজ একটুও দেরি করেননি। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যের ৪৫ মিনিটের মধ্যেই তিনি লখনউয়ের ইন্দিরা নগরে দলিতদের লবকুশ বস্তিতে পৌঁছে যান। ওই এলাকায় মূলত সাফাই কর্মীদের বসবাস। সেখানে বাল্মীকি মন্দিরে ফের ঝাঁটা হাতে তুলে নিয়ে প্রিয়ঙ্কা মন্দির পরিসর সাফ করেন। যোগীর মন্তব্যকে ‘দলিত বিরোধী’ আখ্যা দিয়ে বলেন, ‘‘যোগী আদিত্যনাথ এই কথা বলে তিনি নিজের দলিত বিরোধী মানসিকতা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সাফ-সাফাই, ঝাঁট দেওয়া, ঘর মোছা ছোট কাজ নয়। যোগী এই মন্তব্য করে দেশের কোটি কোটি মহিলা ও দলিত সমাজের অপমান করেছেন।’’
এক সময় নরেন্দ্র মোদী নিজে ঝাঁটা হাতে রাস্তা সাফ করতে নেমে জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছিলেন। কংগ্রেস নেতারা আশা করছেন, প্রিয়ঙ্কা যে ভাবে দলিতদের বস্তিতে গিয়ে ঝাঁটা হাতে তুলে নিয়েছিলেন, তারও রাজনৈতিক ফল মিলবে। সরকারি অতিথিশালায় প্রিয়ঙ্কার ঘর ঝাঁট দেওয়ার ভিডিয়ো ইতিমধ্যেই ‘ভাইরাল’ হয়ে গিয়েছে। প্রসঙ্গত, রবিবারই মোদীর কেন্দ্র বারাণসীতে গিয়ে সভা করবেন প্রিয়ঙ্কা।
লখিমপুর খেরিতে কৃষক হত্যার পরেই প্রিয়ঙ্কা ঘটনাস্থলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। তাঁকে পুলিশ আটক করে সীতাপুরে সরকারি অতিথিশালায় আটক করে। তার পরে চাপের মুখে রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে লখিমপুরে যেতে দেওয়া হয়। গোটা ঘটনায় কংগ্রেস নেতাকর্মীরা যখন উজ্জীবিত, তখন আজ যোগী রাহুল-প্রিয়ঙ্কাকে নিশানা করে বলেন, তাঁরা নেতিবাচক মানসিকতা তৈরি করে লখিমপুরের ঘটনায় রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে চাইছে। যোগী আজ এসপি প্রধান অখিলেশ যাদব, দলিত নেত্রী মায়াবতীর দলকেও নিশানা করেন। অখিলেশের সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘‘উনি বড় বাপের বড় ছেলে। দুপুরে ঘুম থেকে উঠে বেলা দুটোয় সাইকেল চালাতে বের হন।’’ বিএসপি-র সতীশ মিশ্র লখিমপুরের ঘটনায় নিহত দুই ব্রাহ্মণের বাড়ি যাননি কেন, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন যোগী।
প্রিয়ঙ্কা বলেন, যোগীর এই সব জাতবিরোধী মন্তব্য বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার উত্তরপ্রদেশের সমস্ত জেলা কংগ্রেস কমিটি বাল্মীকি মন্দিরে সাফাইয়ের কাজ করবেন। অখিলেশ যাদবের জবাব, “বিজ্ঞাপনে যেমনটা বলা হয় এই সরকার ‘দমদার’ (শক্তিশালী)। এই দমদার সরকার শুধুমাত্র ‘তাকতওয়ার’ (বাহুবলী)-দের জন্য।” বিজেপির পুরনো শরিক শিরোমণি অকালি দলের নেত্রী, প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরসিমরত কৌর বাদল নিহত কৃষকদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে দেখা করতে আজ লখনউ পৌঁছেছেন। তিনি বলেন, ‘‘ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার হচ্ছে। বিজেপি যদি ভাবে, তারা পার পেয়ে যাবে, তা হলে তারা ভুল ভাবছে।’’