(বাঁ দিকে) মঙ্গলে ‘বাংলাদেশ’ প্রসঙ্গ লেখা ব্যাগ নিয়ে সংসদে প্রিয়ঙ্কা গান্ধী। সোমে তাঁর ব্যাগে জায়গা পায় ‘প্যালেস্টাইন’ প্রসঙ্গ (ডান দিকে)। ছবি: এক্স।
সোমবার প্রিয়ঙ্কা গান্ধী সংসদে গিয়েছিলেন ‘প্যালেস্টাইন’ লেখা ব্যাগ নিয়ে। তা নিয়ে বিতর্ক ছড়াতে দেরি হয়নি। সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতি করার অভিযোগ তোলে বিজেপি। মঙ্গলবারও ব্যাগ কাঁধে সংসদে প্রবেশ করলেন প্রিয়ঙ্কা। তবে এ বার আর ‘প্যালেস্টাইন’ নয়। মঙ্গলে তাঁর ব্যাগে জায়গা পেয়েছে ‘বাংলাদেশ’।
পড়শি দেশে সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা লেখা রয়েছে সেই ব্যাগে। ঘিয়ে রঙের একটি ব্যাগ। তাতে উপরে লেখা, ‘বাংলাদেশ’। তার নীচে লেখা, “হিন্দু এবং খ্রিস্টানদের পাশে দাঁড়ান।” প্রিয়ঙ্কা একা নন, কংগ্রেসের অন্য সাংসদেরাও একই ধরনের ব্যাগ নিয়ে সংসদের বাইরে বিক্ষোভ দেখান।
গত ৭ অক্টোবর গাজ়া ভূখণ্ড থেকে ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস। তার জবাবে গাজ়ায় এবং প্যালেস্টাইনি ভূখণ্ড ওয়েস্ট ব্যাঙ্কে ধারাবাহিক হামলা এবং ‘গ্রাউন্ড অপারেশন’ চালিয়ে প্রায় ৫০ হাজার মুসলিমকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ইজ়রায়েলি সেনার বিরুদ্ধে। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের দাবি, মৃতদের মধ্যে অনেক নিরপরাধ সাধারণ মানুষ, মহিলা এবং শিশুও রয়েছে। এই আবহে সোমবার ‘প্যালেস্টাইন’-এর প্রতি প্রিয়ঙ্কার সংহতি জানানো নিয়ে খোঁচা দিতে শুরু করে বিজেপি। বিজেপির মুখপাত্র সম্বিত পাত্র বলেছেন, ‘তোষণের ঝুলি’ নিয়ে ঘুরে বেড়ান প্রিয়ঙ্কা। জাতীয়তাবাদ বা দেশপ্রেমের ঝুলি তাঁদের কাঁধে দেখা যায় না বলেও অভিযোগ তোলেন সম্বিত।
প্যালেস্টাইনের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিজেপির খোঁচার পরের দিনই বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা-সহ ব্যাগ নিয়ে সংসদে হাজির হলেন ওয়েনাড়ের সাংসদ। সোমবার সংসদের শীতকালীন অধিবেশনে বক্তৃতার সময়েও বাংলাদেশের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন প্রিয়ঙ্কা। বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারের অভিযোগগুলির বিষয়ে কেন্দ্রকে পদক্ষেপের জন্য চাপ দেন তিনি। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কেন্দ্রকে ঢাকার সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনারও প্রস্তাব দেন তিনি।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর থেকে সে দেশে সংখ্যালঘুদের উপর একের পর এক হামলার অভিযোগ উঠে এসেছে। ইসকনকে বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করতে আদালতে মামলা করেছে ইউনূসের তদারকি সরকার। যদিও তা খারিজ হয়ে গিয়েছে। সম্প্রতি সন্ন্যাসী চিন্ময়কৃষ্ণ দাসকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছে চট্টগ্রাম পুলিশ। এখনও জেলবন্দি রয়েছেন তিনি। সাম্প্রতিক এই ঘটনাগুলিতে ভারত-বাংলাদেশ উভয় প্রান্তেই সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রের তরফে ইতিমধ্যেই বাংলাদেশকে বলা হয়েছে। চিন্ময়কৃষ্ণের আইনি অধিকার যাতে অক্ষুণ্ণ থাকে, সেই বার্তাও ঢাকাকে দিয়েছে দিল্লি।