গোপালের বিগ্রহের চিকিৎসা চলছে হাসপাতালে।
হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে হন্তদন্ত হয়ে হাসপাতালে ঢুকে সোজা চিকিৎসকদের কাছে হাজির হলেন এক পুরোহিত। হাতে কৃষ্ণের একটা ধাতব বিগ্রহ। পুরোহিতকে এমন অবস্থায় দেখে হতভম্ব হয়ে যান চিকিৎসকরা।
তাঁরা ভেবেছিলেন হয়তো পুরোহিতের বা তাঁর কোনও আত্মীয় গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে এসেছেন। কিন্তু পরের ঘটনার জন্য তাঁরা যেন কোনও ভাবেই প্রস্তুত ছিলেন না। কী হয়েছে তা জানতে চাওয়াতে চিকিৎসকদের প্রায় ভিরমি খাওয়ার মতো অবস্থা হয়।
পুরোহিত লেখ সিংহ কাঁদতে কাঁদতে চিকিৎসকদের বলেন, “আমার গোপালের হাত ভেঙে গিয়েছে। ওর হাতে প্লাস্টার করে দিন বাবু!” তখনও তাঁরা বোঝেননি লেখ সিংহ কোন গোপালের কথা বলছেন। ফের জিজ্ঞাসা করাতে কোলে রাখা কৃষ্ণের ছোট মূর্তিটি দেখিয়ে জানান, এর হাতেই প্লাস্টার করতে হবে। চিকিৎসকরা তো সকলেই থ!
সে কী! এই ধাতব মূর্তির হাতে প্লাস্টার! এমন ‘রোগী’ এবং রোগীর আত্মীয়ের এমন আজব আবদারে চিকিৎসকরা পড়লেন মহা বিড়ম্বনায়। কিন্তু পুরোহিত নাছোড়। প্লাস্টার যে করে দিতেই হবে। কাঁদো কাঁদো মুখে পুরোহিত তখন চিকিৎসকদের বলেন, “সকালে পুজো করছিলাম। লাড্ডু গোপালের বিগ্রহকে স্নান করাতে গিয়ে আচমকাই হাত থেকে পড়ে গিয়ে ওর হাতটা ভেঙে যায়। আমার সঙ্গে ওই বিগ্রহের আত্মার সম্পর্ক। তাই ছুটে এসেছি ওর চিকিৎসার জন্য।”
অনিচ্ছা সত্ত্বেও রোগীকে ‘শ্রী কৃষ্ণ’ নামে হাসপাতালে নাম নথিভুক্ত করান চিকিৎসকরা। সেই বিগ্রহের হাতে ব্যান্ডেজও করে দেন তাঁরা। পুরোহিত বলেন, “হাসপাতালে আমার অনুরোধে কেউ কান দেননি। ভিতর থেকে আমি মুষড়ে পড়েছিলাম। বিগ্রহের কী হবে এই ভেবে কাঁদতেও শুরু করি।”
জেলা হাসপাতালের সুপারিনটেন্ডেন্ট অশোককুমার আগরওয়াল সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানান, এক পুরোহিত কৃষ্ণের বিগ্রহ নিয়ে হাসপাতালে এসেছিলেন। সেই বিগ্রহের চিকিৎসার জন্য কান্নাকাটি জুড়ে দেন। তাঁর ভাবাবেগকে সম্মান জানিয়ে ‘শ্রী কৃষ্ণ’র নামে নথিভুক্ত করিয়ে চিকিৎসা করানো হয়েছে।