দ্রৌপদী মুর্মু।
দেশের রাষ্ট্রপতি পদে তিনি প্রথম জনজাতি সমাজের মহিলা প্রতিনিধি। স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে নারীদের কথা উঠেও এল দ্রৌপদী মুর্মুর কথায়। ভারতের রাজনৈতিক ঐতিহ্যের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, “বেশির ভাগ গণতান্ত্রিক দেশেই ভোটাধিকার পাওয়ার জন্য মেয়েদের অনেক লড়াই করতে হয়েছে। কিন্তু দেশের গণতন্ত্রের গোড়ার দিন থেকেই এই দেশে সর্বজনীন ভোটাধিকারের ধারণা স্বীকৃতি পেয়েছে।” এর জন্য গণতন্ত্রে নারীশক্তির ভূমিকাকেও কুর্নিশ জানিয়েছেন তিনি।
দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্মরণ করে তিনি বলেন, “১৯৪৭ সালের ১৫ অগস্ট ঔপনিবেশিক শাসনের শিকল ছিন্ন করে আমরা স্বাধীন হয়েছিলাম। তাই যাঁদের জন্য আমরা এই দেশে মুক্ত শ্বাস নিতে পারছি, সেই সব বীর শহিদদের আত্মত্যাগকে আমরা যেন প্রত্যেকে স্মরণ করি।”
শুধু অতীতচারণ নয়, দেশের বর্তমান নিয়েও গর্বপ্রকাশ করেছেন দেশের রাষ্ট্রপতি। তিনি জানান, দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোভিড টিকা দিয়ে ভারত বৃহত্তম টিকাকরণ অভিযান সম্পন্ন করেছে। ২০০ কোটি ভ্যাকসিন দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারার জন্য ভারতের সকল নাগরিককে ধন্যবাদ জানিয়েছেন তিনি। কোভিড অতিমারি মোকাবিলায় বিশ্বের অনেক উন্নত দেশের তুলনায় ভারত অনেক ভাল কাজ করেছে বলেও দাবি করেছেন মুর্মু।
দেশের বর্তমান শাসকদলের বিরুদ্ধে যখন রাজনৈতিক একাধিপত্য চালানো এবং একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালানোর অভিযোগে সরব বিরোধী দলগুলি, তখন রাষ্ট্রপতির বক্তব্যে তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে উঠে এসেছে বিকেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থার কথা। মহাত্মা গাঁধীর কথা স্মরণ করতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, মহাত্মা গাঁধীর মতো নেতারা আধুনিক কালেও আমাদের প্রাচীন মূল্যবোধগুলিকে সযত্নে রক্ষা করেছেন। গাঁধী বিকেন্দ্রীভূত শাসনব্যবস্থা এবং জনগণের হাতে ক্ষমতা তুলে দেওয়ার জন্য সওয়াল করেছেন বলেও জানিয়েছেন মুর্মু।
প্রান্তিক আর্থ-সামাজিক অবস্থান থেকে দেশের প্রথম নাগরিক হওয়া দ্রৌপদী জানান, দেশের ভবিষ্যৎ লুকিয়ে আছে মেয়েদের মধ্যে। পুরনো ধ্যানধারণা ভেঙে মেয়েরাও যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের স্থান করে নিচ্ছে তারও উল্লেখ করেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের ‘হর ঘর তেরঙ্গা’ কর্মসূচির প্রশংসা করে তিনি জানান, দেশের প্রতিটি কোণায় জাতীয় পতাকা উড়তে দেখে তিনি গর্ব অনুভব করছেন।