NEET Paper Leak Case

মুর্মু-ভাষণে প্রশ্ন ফাঁস, আজ কি তপ্ত সংসদ

রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার পরে বিরোধীদের বক্তব্য, প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ড এত বড় আকার নিয়েছে যে, সরকারের তা সংসদে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও পথ ছিল না। বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, প্রশ্ন ফাঁস যে হয়েছে, এটা বাস্তব। কিছু লুকোনোর নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৪ ০৭:২৪
Share:

লোকসভায় বক্তৃতা দিচ্ছেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ছবি: পিটিআই।

অষ্টাদশ লোকসভার প্রথম যৌথ অধিবেশনে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর বক্তৃতায় উঠে এল সাম্প্রতিক প্রশ্ন ফাঁসের প্রসঙ্গ। তিনি জানালেন, প্রশ্ন ফাঁস ও পরীক্ষায় অনিয়মের তদন্ত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। আগামিকাল সংসদের উভয় কক্ষে প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে আলোচনার দাবি জানিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনার পরিকল্পনা করেছেন বিরোধীরা। বিজেপি জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান এর জবাব দিতে প্রস্তুত।

Advertisement

নিট-ইউজি-তে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি স্থগিত হয়ে গিয়েছে নেট এবং নিট-পিজি। এই আবহে রাষ্ট্রপতির আজকের বক্তৃতার পরে বিরোধীদের বক্তব্য, প্রশ্ন ফাঁস কাণ্ড এত বড় আকার নিয়েছে যে, সরকারের তা সংসদে মেনে নেওয়া ছাড়া কোনও পথ ছিল না। বিজেপির পাল্টা বক্তব্য, প্রশ্ন ফাঁস যে হয়েছে, এটা বাস্তব। সরকারের কিছু লুকোনোর নেই। তাই রাষ্ট্রপতির ভাষণে তা উঠে এসেছে।

আজ রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘‘সম্প্রতি কয়েকটি পরীক্ষার প্রশ্ন কিছু রাজ্যে ফাঁস হয়েছে। সরকার সেই সব ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করতে ও দোষীদের কঠোর শাস্তি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অতীতেও বিভিন্ন রাজ্যে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা দেখেছি আমরা। তাই দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে দেশ জুড়ে এ নিয়ে কঠোর পদক্ষেপের প্রয়োজন রয়েছে। পরীক্ষায় অনিয়ম রুখতে সংসদও কঠোর আইন পাশ করেছে। পরীক্ষা নেওয়ার কাজে যুক্ত সংস্থাগুলির কাজকর্ম এবং পরীক্ষা ব্যবস্থার সংস্কারে কাজ করে চলেছে সরকার।’’ আজ রাষ্ট্রপতি যখন প্রশ্ন ফাঁসের প্রসঙ্গে বলছেন, তখন ‘নিট’-‘নিট’ বলে সরব হন বিরোধীরা।

Advertisement

তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, শিক্ষামন্ত্রী ইস্তফা না দিলে নিরপেক্ষ তদন্ত অসম্ভব। এ দিন রাষ্ট্রপতির ভাষণের পরে রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বে বিরোধীদের একটি প্রতিনিধিদল স্পিকার ওম বিড়লার সঙ্গে দেখা করে। সেখানে কল্যাণ দাবি জানান, নিট কাণ্ডের মতো বিষয় নিয়ে আলাদা করে আলোচনা করতে দেওয়া হোক। বিরোধীদের দাবি, স্পিকার তখন তাঁদের জানান, সরকার সব সময়ে সব বিষয়ে আলোচনায় রাজি হয় না। কল্যাণ বলেন, অস্বস্তিকর বিষয় নিয়ে সরকার যে আলোচনা করতে চাইবে না, তা স্বাভাবিক। বিরোধীদের দাবি, স্পিকার তাঁদের পরামর্শ দিয়ে বলেন, রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার প্রেক্ষিতে বিতর্কে বিভিন্ন বিষয়ে বিরোধীদের তো বলার সুযোগ থাকেই।

আগামিকাল থেকে সংসদে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার প্রেক্ষিতে বিতর্ক শুরুর কথা থাকলেও বিরোধীরা পরিকল্পনা করেছেন, দু’টি কক্ষেই মুলতুবি প্রস্তাব এনে তাঁরা প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে আলোচনা দাবি করবেন। এ ভাবে রাষ্ট্রপতির বক্তৃতার বিতর্কে মুলতুবি প্রস্তাব অতীতে দেখা যায়নি। এখনও পর্যন্ত খবর, সরকার মুলতুবি প্রস্তাব মানবে না। সে ক্ষেত্রে আগামিকাল প্রবল হট্টগোলের আশঙ্কা রয়েছে দু’কক্ষেই। তবে সরকারের কৌশল হল, যেহেতু বিষয়টি রাষ্ট্রপতির বক্তৃতায় রয়েছে, তাই তার প্রেক্ষিতে বিতর্ক শুরু হলে বিবৃতি দিতে পারেন শিক্ষামন্ত্রী।

আজ যন্তর-মন্তরে যুব কংগ্রেসের বিক্ষোভে লাঠি চালায় পুলিশ। আহত হন একাধিক কর্মী। কাল এ নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করবেন রাহুল গান্ধী। আজ কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন এনএসইউআই-এর সদস্যেরা এনটিএ-র দফতরে ঢুকে পড়ে ভিতর থেকে তালা লাগিয়ে দেন। অভিযোগ তোলেন, বিভিন্ন সর্বভারতীয় পরীক্ষার উত্তরপত্র তালাবিহীন ট্রাঙ্কে, খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখা হয়েছে। সরকার এই অভিযোগ ‘অসত্য’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement