—ফাইল চিত্র।
প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের আসন্ন নাগপুর সফর নিয়ে রাজধানীতে বিতর্ক তুঙ্গে। প্রণববাবুকে চিঠি লিখছেন কংগ্রেস নেতারা, জানতে চাওয়া হচ্ছে আজীবন আরএসএসের বিরোধিতা করে কেন তিনি শেষপর্যন্ত সেই তাদেরই গড়ে পা দেবেন? গোটা বিষয়টি নিয়ে মুখ খুলতে চাইছেন না প্রণব মুখোপাধ্যায়। বলেছেন, ‘‘আমি যা বলার নাগপুরে গিয়ে আমার বক্তৃতাতেই বলব। বিভিন্ন চিঠি, আবেদন এবং ফোন পাচ্ছি। তবে কোনওটারই জবাব দিইনি।’’
কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ সম্প্রতি চিঠি লিখেছেন প্রণববাবুকে। প্রণবের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত এই নেতা কার্যত অনুযোগই করেছেন তাঁর চিঠিতে। সূত্রের খবর, জয়রাম লিখেছেন যে, রাজনৈতিক জীবনে একজন কংগ্রেসম্যান হিসাবে যা যা অর্জন করা সম্ভব সবই করেছেন এই প্রবীণ নেতা। তিনি দলের নতুন প্রজন্মকে শিখিয়েছেন কংগ্রেসের বহুত্ববাদ, দিয়েছেন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানকে সম্মান করা ও ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের পাঠ। জয়রামের প্রশ্ন, ‘‘আজ কী এমন হল যে আরএসএসের সদর দফতরে গিয়ে স্বয়ংসেবকদের সামনে বক্তৃতা দিতে হচ্ছে?’’ রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচনে প্রণবকে সমর্থন করেছিল সিপিএম। তাদের নেতা সীতারাম ইয়েচুরি আজ বলেছেন, ‘‘আমি ওঁর হয়ে কী করে বলব যে কেন তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করলেন। আমাকে যদি আমন্ত্রণ পাঠানো হত, আমি যেতাম না।’’ আগেই বিষয়টি নিয়ে ক্ষোভ জানিয়েছেন পি চিদম্বরম। তাঁর বক্তব্য, আমন্ত্রণ যখন গ্রহণই করেছেন, তখন দয়া করে সেখানে গিয়ে বলুন যে আরএসএসের আদর্শে কী কী ভুল রয়েছে! কংগ্রেসেরই রমেশ চেন্নিতালা চিঠিতে অনুরোধ করেছেন এই আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দিতে। তাঁর মতে, গোটা বিষয়টিই খুব আশ্চর্যজনক।
এই বিতর্কে আজ মুখ খুলেছেন উপরাষ্ট্রপতি বেঙ্কাইয়া নায়ডু। সাংবিধানিক পদে আসীন হলেও সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ বোঙ্কাইয়া ছিলেন বিজেপির নেতা। সঙ্ঘের দফতরে প্রণবের যাওয়াকে সমর্থনকরতে গিয়ে গিয়ে তিনি বলেছেন, ‘‘আরএসএসের ইতিবাচক দিকগুলিকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন গাঁধীজিও। ১৯৩০ সালে সঙ্ঘের শিবির দেখে এসে তিনি বলেছিলেন, আমি খুবই অবাক হয়েছিলাম ওখানকার শৃঙ্খলা দেখে ও অস্পৃশ্যতা নেই দেখে।’’ আরএসএসের সঙ্গে নিজের যোগের কথা টেনেই বেঙ্কাইয়ার বক্তব্য, ‘‘ভারতীয় আদর্শ-মূল্যবোধের ভিতে চরিত্র গঠন সঙ্ঘের উদ্দেশ্য। এর নীতিগত বিরোধিতার কারণ নেই।’’