ভোটের অঙ্কে দ্বিতীয় দফাতেও কপাল খুলতে পারে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের

রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুলাইয়ে। অবসর নেওয়ার পর তিনি কোথায় থাকবেন তা নিয়ে তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু পাশাপাশি ঐকমত্যের ভিত্তিতে তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য এই পদে নির্বাচিত হতে পারেন কি না, সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

অগ্নি রায়

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০৪:০৬
Share:

রাষ্ট্রপতি পদে প্রণব মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদ শেষ হচ্ছে জুলাইয়ে। অবসর নেওয়ার পর তিনি কোথায় থাকবেন তা নিয়ে তৎপরতাও শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারের তরফে। কিন্তু পাশাপাশি ঐকমত্যের ভিত্তিতে তিনি দ্বিতীয় বারের জন্য এই পদে নির্বাচিত হতে পারেন কি না, সেই সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

Advertisement

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের ভোটের বিচারে এখনই পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। উত্তরপ্রদেশের ভোট এ ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা হবে ঠিকই, কিন্তু সেখানেও আশাপ্রদ ফলাফল হবে না বলেই মনে করছেন দলের নেতারা। এই অবস্থায়, বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বও উঠে পড়ে লেগেছেন রাষ্ট্রপতির নাম নিয়ে বিরোধী ঐক্যে চিড় ধরিয়ে নিজেদের পক্ষে ভোট বাড়াতে। এক মাত্র তা হলেই সংঘ-ঘনিষ্ঠ কোনও প্রার্থীকে রাষ্ট্রপতি পদে বসাতে পারবেন নরেন্দ্র মোদী।

তবে এই গোটা সম্ভাবনার পিছনে রয়েছে নির্বাচনী পাটিগণিত। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতিটা যথেষ্ট জটিল। দেখা যাচ্ছে লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সংখ্যার হিসাবে ১ লাখ ৭০ হাজার ভোটে পিছিয়ে রয়েছে বিজেপি। আর এক মাস পরই স্পষ্ট হয়ে যাবে উত্তরপ্রদেশ-সহ পাঁচ রাজ্যে নির্বাচনের ফলাফল। পরিস্থিতি এখন এমনই যে, কেন্দ্রের শাসক দল উত্তরপ্রদেশে ভাল ফল না-করতে পারলে নিজেদের পছন্দের রাষ্ট্রপতি প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার ক্ষমতা তাদের থাকবে না।

Advertisement

আরও পড়ুন।

এক রকেটে ১০৪! রেকর্ড গড়বে ইসরো

এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রশ্নে বিরোধী ঐক্য ভাঙার জন্য মরিয়া চেষ্টা করা ছাড়া গতি নেই নরেন্দ্র মোদীর। শিবসেনার মতো অন্য কোনও শরিক যাতে ভিন্ন শিবিরে না ভিড়ে যায়, সেটাও নিশ্চিত করতে চাইছে বিজেপি। তামিলনাড়ুতে পনীরসেলভমকে তলে তলে সহায়তা করে এডিএমকে-কে এনডিএ-তে আনার যে চেষ্টা বিজেপি নেতৃত্ব করছেন, তার পিছনে একটি কারণ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন।

তবে সূত্রের খবর— এর পরেও মোদী যদি দেখেন যে বিরোধী ঐক্য অটুট রয়েছে, সে ক্ষেত্রে প্রণব মুখোপাধ্যায়কেই দ্বিতীয় বারের জন্য মেনে নিতে পারেন তিনি। রাষ্ট্রপতি হিসাবে প্রণববাবু এমন কিছু করেননি, যা মোদী ও তাঁর সরকারকে বিপাকে ফেলে। লালকৃষ্ণ আডবাণীকে রাষ্ট্রপতি করা নিয়ে এক সময়ে জল্পনা চলছিল। সে ক্ষেত্রে ঐকমত্যের সম্ভাবনাও থাকতো। কিন্তু আডবাণীর সঙ্গে মোদীর মতান্তর কমার লক্ষণ নেই। একাধিক বার মোদী-বিরোধী মন্তব্য করেছেন আডবাণী।

মোদী ইতিমধ্যেই বিজেপি শিবিরে বলেছেন, এ ব্যাপারে কংগ্রেস কী ভাবনাচিন্তা করছে তার খোঁজ রাখতে। স্বাভাবিক ভাবেই এখনও আস্তিনের তাস দেখায়নি সনিয়া গাঁধীর দল। উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে সেটা তারা দেখাবেও না। হামিদ আনসারিকে প্রার্থী করার ভাবনা হলেও অন্যরা এই নামে যে সহমত হবে না, সেটা কংগ্রেসও জানে। সর্বসম্মতি ক্রমে প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কংগ্রেসের বড় ভূমিকা থাকলেও অন্য আঞ্চলিক দলগুলি প্রণববাবুকে দ্বিতীয় বারের জন্য রাষ্ট্রপতি করার প্রশ্নে একমত হতে পারে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, নীতীশ কুমার, বাম দলগুলি, ডিএমকে, জেএমএম, সপা-বসপা-র সমর্থন পেতে পারেন প্রণব। এমনকী শিবসেনাও প্রণবের প্রতি নরম।

তবে প্রণববাবুর ঘনিষ্ঠমহল সূত্রে খবর, সর্বসম্মতিক্রমে মনোনয়ন হলে তবেই তিনি রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড়াবেন। ভোটাভুটির মধ্যে তিনি আর যাবেন না। সব মিলিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে কৌতূহল ক্রমেই বাড়ছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement