জন্মের পর থেকেই সে দুরারোগ্য লিভারের রোগে আক্রান্ত। ঘর-বাড়ি, জমি-জায়গা যা ছিল, চিকিৎসার খরচ জোগাতে গিয়ে সেই সবই বিকিয়ে দিতে হয়েছে। কাঁধের ওপর থেকে আত্মীয়-পরিজনেরাও হাত তুলে নিয়েছেন। এ দিকে যতই দিন যাচ্ছে, দুধের শিশুটির যন্ত্রণা ততই বাড়ছে।
চোখের সামনে ৮ মাসের এই শিশুটির কষ্ট আর দেখতে পারছিলেন না বাবা, মা। নিরুপায় হয়ে তাই শিশুর মৃত্যু চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটেছে হায়দরাবাদের চিত্তুরে।
৮ মাসের মেয়ে গেনা সাইয়ের বাবা রামানাপ্পা একটি মুদিখানার দোকানের কর্মচারী। জন্ম থেকেই গেনা দুরারোগ্য লিভারের সমস্যায় আক্রান্ত। অনেক চিকিৎসা করিয়েও কোনও ফল হয়নি। শেষে বেঙ্গালুরুর একটি নার্সিংহোমে গেনার চিকিৎসা করাতে নিয়ে যান তাঁরা। সেখানকার ডাক্তাররা জানান, ওষুধে কোনও কাজ হবে না। লিভার প্রতিস্থাপন করাতে হবে। সব মিলিয়ে যার খরচ ৫০ লক্ষ টাকারও বেশি।
আরও খবর: বাড়ির পিছনেই মহিলার দেহ, ধর্ষণ-খুনের নালিশ
এখানেই শেষ নয়। চিকিৎসকেরা এও জানান, অস্ত্রোপচারের পরেও আগামী ৬ বছর ধরে গেনার চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। এ কথা শোনার পর আর আগুপিছু ভাবার সময় ছিল না ওই শিশুটির মা, বাবার। মেয়েকে বাঁচাতে নিজেদের শেষ সম্বলটুকুও বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন তাঁরা। আত্মীয়দের কাছে ধার চেয়ে কয়েক দিন চিকিৎসা চালানো হয়েছিল। কিন্তু সেটাই বা আর কত দিন! আত্মীয়েরাও মুখ ফিরিয়ে নেন। তার ওপর যত দিন যাচ্ছিল, শিশুটির শারীরিক কষ্ট আরও বাড়ছিল। চোখের সামনে মেয়ের এই কষ্ট সহ্য করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত তাঁর মৃত্যু চেয়ে চিত্তুর জেলা কোর্টে আবেদন জানান তাঁরা। তাঁদের আবেদন, হয় সরকার গেনার চিকিৎসার খরচ বহন করুক, না হলে তার মৃত্যুর অনুমতি দেওয়া হোক। চিত্তুর জেলা কোর্টের বিচারক মামলাটি হায়দরাবাদ হাইকোর্টে পাঠিয়েছেন।