জাতপাতের অঙ্ক পাল্টাতে হাতিয়ার মোদীর প্যাকেজ

নরেন্দ্র মোদীর প্যাকেজ দিয়ে বিহারের জাতপাতের রাজনীতি ঢাকার কৌশল নিচ্ছেন অমিত শাহ। বিহারে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার প্যাকেজ ঘোষণার পরে বিজেপি একটি সমীক্ষা করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল স্তরে এই প্যাকেজ যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০২:৫৪
Share:

নরেন্দ্র মোদীর প্যাকেজ দিয়ে বিহারের জাতপাতের রাজনীতি ঢাকার কৌশল নিচ্ছেন অমিত শাহ।

Advertisement

বিহারে ১ কোটি ২৫ লক্ষ টাকার প্যাকেজ ঘোষণার পরে বিজেপি একটি সমীক্ষা করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, তৃণমূল স্তরে এই প্যাকেজ যথেষ্ট সাড়া ফেলেছে। এ বারে সেটিকে বিহারের গ্রামে গ্রামে পৌঁছে দেওয়ার জন্য নতুন কৌশল নিচ্ছেন অমিত শাহ। রাজ্যের প্রতিটি বিধানসভায় পরিবর্তন রথ ইতিমধ্যেই চালু করেছে বিজেপি। আগামী পরশু থেকে সেই রথগুলিতে মোদীর প্যাকেজ ঘোষণার ভিডিও প্রচার করা শুরু হবে। তাতে বিহারের তীব্র জাত-পাতের সমীকরণ অনেকটাই বদলে ফেলা যাবে বলে মনে করছেন বিজেপি সভাপতি।

ঘনিষ্ঠ মহলে অমিত শাহ বলেছেন, এখনই বিহারে ২৫-৩০ শতাংশ ভোটার জাতপাতের ঊর্ধ্বে উঠে ভোট করার ব্যাপারে মনস্থির করেছেন। গত লোকসভা নির্বাচনেও ঠিক একই রকম রণকৌশল নেওয়া হয়েছিল। মোদী করেছিলেন উন্নয়নের রাজনীতি আর তৃণমূল স্তরে দল মাথা ঘামিয়েছে জাতপাতের সমীকরণ নিয়ে। এ বারেও প্রার্থী বাছাইয়ের সময় জাতপাতের সমীকরণ তো মাথায় রাখা হবেই। কিন্তু যে ভাবে লালুপ্রসাদ ও নীতীশ কুমার জোট বেঁধেছেন, তাতে জাতপাতের দৌড়ে বিজেপি অনেকটাই পিছিয়ে। সেই জন্যই প্যাকেজ ঘোষণার মাধ্যমে সেই খামতি ঢাকতে চাইছে বিজেপি।

Advertisement

বিহারকে চার ভাগে ভাগ করে নরেন্দ্র মোদীর চারটি জনসভার পরিকল্পনা আগেই করা হয়েছিল। এর মধ্যে তিনটি হয়ে গিয়েছে। চতুর্থটি হবে ১ সেপ্টেম্বর ভাগলপুরে। বিজেপি নেতৃত্বের ধারণা, দশমী ও দীপাবলির মাঝে বিহারের ভোট করানোর কথা ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। এক বার সেই ঘোষণা হয়ে গেলে নরেন্দ্র মোদীর আরও জনসভার দিন ঠিক করা হবে। প্রতিটি বিধানসভা কেন্দ্রে বড় নেতাদের নিয়ে সভা হবে। আপাতত রাজ্যের ৪৩ হাজার গ্রামে রথ ঘোরানো হবে মোদীর প্যাকেজ নিয়ে। সব গ্রামে ইতিমধ্যেই দেওয়াল লিখন ও ব্যানার লাগানো হয়েছে।

দিল্লিতে হারের পর বিহারের ভোটে জেতা এখন মোদী ও শাহের কাছে মরণ-বাঁচন লড়াই। সামনের বছরের নির্বাচনগুলিতে ভাল ফল করার কোনও আশা নেই বিজেপির কাছে। ফলে বিহারে যে কোনও মূল্যে জিততে হবে তাঁদের। নিজেদের রাজনৈতিক কর্তৃত্ব ও নেতৃত্ব বজায় রাখার তাগিদে। শত্রুঘ্ন সিংহের মতো দলের নেতারা প্রায়শই বেসুরো গাইছেন। কিন্তু অমিত শাহরা তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেন না, পাছে প্রচারের মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। তবে ভোটগণনা শেষ হলে শত্রুঘ্ন সিংহের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত আজ দেওয়া হয়েছে দলের শীর্ষ নেতৃত্বে তরফে।

অমিত শাহের মতে, বিজেপির এখন মূল লক্ষ্য হল লালু-নীতীশের জোট। নীতীশের থেকেও লালুর ভোটব্যাঙ্ক অনেক শক্তিশালী। কিন্তু নীতীশ নিজে মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য এখন লালুর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। সেটাই প্রচারের প্রধান বিষয় হবে বিজেপির। পাশাপাশি যে ভাবে নীতীশ গোড়া থেকে কংগ্রেসের বিরোধিতা করে এখন তাদের সঙ্গেই হাত মিলিয়েছেন, সেটাকেও কটাক্ষ করা হবে। নীতীশের হয়ে প্রচারে কেজরীবাল গেলে বিজেপি কী বলবে, তার কৌশলও স্থির হয়ে গিয়েছে। বরাবর দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলেও কী ভাবে নীতীশের সঙ্গী ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’ লালু ও কংগ্রেসের পক্ষে প্রচার করবেন, প্রশ্ন তোলা হবে তা নিয়ে। অমিত শাহের কথায়, ‘‘নীতীশ-লালু জোটকে নিশানা করলেই উন্নয়ন বিরোধিতা, আইন-শৃঙ্খলার অবনতি, বিদ্যুৎ না পৌঁছনো, জঙ্গলরাজ, দুর্নীতি— সব ইস্যু একসঙ্গে চলে আসবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement