পরের শুনানি ২২ তারিখ। ফাইল চিত্র।
ভোটারদের উদ্দেশে রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি দানের রেওয়াজকে আটকানো যায় না এবং এ প্রসঙ্গে খয়রাতির সংজ্ঞা ঠিক কী, সেটাও নির্ধারিত হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করল সুপ্রিম কোর্ট।
বুধবার খয়রাতি মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণার বেঞ্চ নিজেই প্রশ্ন তোলে যে, সার্বজনিক স্বাস্থ্য পরিষেবা, পানীয় জল কিংবা বিদ্যুতের প্রতিশ্রুতিকে কি আদৌ খয়রাতি বলা যায়? সেই সঙ্গে বেঞ্চের এ-ও পর্যবেক্ষণ, শুধু প্রতিশ্রুতির উপর ভর করেই ভোটের ফলাফল নির্ধারিত হয় না। প্রতিশ্রুতি দিয়েও অনেক প্রার্থীই হেরে যান।
বিজেপি শিবিরের আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করে আর্জি জানিয়েছেন, রাজনৈতিক দলের তরফে বিনামূল্যে পণ্য ও পরিষেবা দানের প্রতিশ্রুতি নিষিদ্ধ করা হোক এবং কোনও দল সেই রাস্তায় হাঁটলে নির্বাচন কমিশন সেই দলের স্বীকৃতি বাতিল করুক। কেন্দ্রেরও মত, খয়রাতির রাজনীতি অর্থনীতিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাবে। ঢালাও খয়রাতি অর্থনীতিতে ক্ষতিকর প্রভাব যে ফেলে, সে কথা এর আগে সুপ্রিম কোর্টও উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে আদালত এও বলেছে, রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করার প্রশ্ন ওঠে না। পরের শুনানি ২২ তারিখ।
আম আদমি পার্টি প্রথম থেকেই এই মামলায় বিরোধিতা করে আসছে। তাদের বক্তব্য, জনকল্যাণমূলক কর্মসূচিকে খয়রাতি বলাই যায় না। বুধবার সু্প্রিম কোর্টও বলল, ‘‘রাজনৈতিক দলের প্রতিশ্রুতি দানকে আটকানো যায় না। প্রশ্নটা হল, খয়রাতি কাকে বলে? নিখরচায় শিক্ষা বা প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রতিশ্রুতিকে কি খয়রাতি বলা চলে? এ বিষয়ে বিতর্ক এবং আলোচনা প্রয়োজন।’’ সুপ্রিম কোর্ট নিজেই উদাহরণ দিয়ে বলেছে, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্প জীবনধারণের মর্যাদা নিশ্চিত করে। তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দল ডিএমকে-ও এই মামলায় শরিক হতে চেয়ে বলেছে, ‘‘কোনও রাজ্য জনকল্যাণে প্রকল্প নিলে তাকে খয়রাতি বলে না। খয়রাতি নিয়ে আলোচনা যদি করতেই হয়, তা হলে কেন্দ্র যে ভাবে বিদেশি সংস্থাকে করছাড় দিচ্ছে, প্রভাবশালী শিল্পপতিদের ঋণ মকুব করছে, সেগুলো নিয়েও কথা বলা প্রয়োজন।’’