পুরভোটে শাসক-বিরোধী সংঘাত পঞ্জাবে। ফাইল ছবি।
কৃষক আন্দোলনে তপ্ত পঞ্জাবের রাজনীতি। এই পরিস্থিতিতে পঞ্জাব রাজনীতিকে আরও উত্তপ্ত করে তুলল পুরভোটে শাসক-বিরোধী সংঘাত। আজ পঞ্জাবের ৮টি পুর-নিগম এবং ১০৯টি পুর পরিষদ ও নগর পঞ্চায়েতে ভোটগ্রহণ হয়। পুরভোটকে কেন্দ্র করে বহু জায়গায় বিরোধীদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে রাজ্যের শাসক দল কংগ্রেস। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, সংঘর্ষে সাত জন আহত হয়েছেন। ভোট গণনা হবে আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি।
পুরভোটে ‘গণতন্ত্রকে হত্যা’ করা হয়েছে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের পদত্যাগ দাবি করেছে আম আদমি পার্টি
(আপ)। শিরোমণি অকালি দলের অভিযোগ, ভোটে জিততে পুরোদস্তুর প্রশাসনকে কাজে লাগিয়েছে কংগ্রেস সরকার। প্রত্যাশিত ভাবেই বিরোধীদের যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে কংগ্রেস।
কৃষক আন্দোলন পঞ্জাবের রাজনৈতিক সমীকরণ বদলে দিয়েছে। অকালি দল এনডিএ-র শরিক হিসেবে নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভাতেও অংশ নিয়েছিল। কিন্তু মোদী সরকার তিনটি কৃষি আইন সংসদে আলোচনা ছাড়া পাশ করিয়ে নেওয়ার পরে অকালি দলের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্কে ফাটল ধরে। কৃষকেরা ‘দিল্লি চলো’ অভিযান শুরুর পরে অকালি দল তাকে সমর্থন করে মোদীর মন্ত্রিসভা থেকে বেরিয়ে আসে। এর পরে বিজেপি কার্যত জমি হারিয়ে ফেলেছে পঞ্চনদের দেশে। বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি নেতাদের বাড়ি ঘেরাও করে কৃষি আইন বাতিলের দাবিতে সরব হয়েছেন কৃষকেরা। রাজ্যের নেতারা দিল্লিতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে নালিশ করেছেন— চলতি পরিস্থিতিতে রাজনীতি করা তো দূরের কথা, বাড়িতে বাসবাস করাই দুষ্কর হচ্ছে তাঁদের পক্ষে। এ বারের পুরভোটে অনেক বিজেপি প্রার্থীকে ‘বিশেষ নিরাপত্তা’ দেওয়া হয়েছে।
পঞ্চনদের তীরে গৈরিক শিবির যে কার্যত কোণঠাসা তা আরও স্পষ্ট হয়েছে পুরভোটে। আজ শাসক কংগ্রেসের সঙ্গে একাধিক জায়গায় সংঘাতে জড়ায় আপ ও অকালি দলের কর্মী-সমর্থকেরা। রূপনগর পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেস এবং অকালি দলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় সাত জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশের তরফে জানানো হয়।
এছাড়াও বাটলা, ফিরোজ়পুর, গুরদাসপুর-সহ ১২টি এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান শাসক এবং বিরোধী দলের কর্মী সমর্থকেরা। সামানা, রাজপুর, ধুরি-সহ বেশ কিছু জায়গায় কংগ্রেসের কর্মীদের সঙ্গে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন আপের কর্মীরা। রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে আপের অভিযোগ, বহু জায়গায় প্রশাসনকে কার্যত ঠুঁটো করে বুথ দখল করা হয়েছে। অবাধে ছাপ্পা ভোটও দেওয়ার অভিযোগ তুলেছে আপ। বিধানসভায় আপের পরিষদীয় নেতা হরপাল সিংহ চিমার অভিযোগ, বুথ দখলে বাধা দেওয়ার জন্য তাঁদের এক কর্মীকে গুলি করেছে কংগ্রেস। প্রত্যাশিত ভাবেই কংগ্রেস সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পুলিশের তরফেও জানানো হয়েছে, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি। চিমার দাবি, অবাধ ভোট করাতে ব্যর্থ হয়েছে রাজ্য প্রশাসন। মুখ্যমন্ত্রী অমরেন্দ্র সিংহের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।
অকালি দলের নেতা বিক্রম সিংহ মাজিথিয়ার অভিযোগ, ভোটে জিততে মরিয়া কংগ্রেস। তাই প্রশাসনকেও ব্যবহার করতে পিছপা হয়নি
রাজ্য সরকার।