—প্রতীকী চিত্র।
উত্তরপ্রদেশের বরেলীতে মহিলাদের রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে। গত ১৪ মাসে পর পর ন’জন মহিলাকে খুন করা হয়েছে সেখানে। এখনও অধরা খুনি। পুলিশের অনুমান, কোনও এক জন ব্যক্তিই এই খুনের নেপথ্যে রয়েছেন। সিরিয়াল কিলারকে খুঁজছে পুলিশ। তবে গত ১৪ মাস ধরে তদন্ত চললেও এখনও সুরাহা হয়নি রহস্যের।
পুলিশ সূত্রে খবর, একই ধাঁচে সকলকে খুন করা হচ্ছে। খুনের জন্য বেছে নেওয়া হচ্ছে দুপুরের সময়টিকে। ন’জনের মধ্যে প্রত্যেককেই দুপুরে গলা টিপে হত্যা করা হয়েছে। প্রত্যেকের দেহই উদ্ধার হয়েছে গ্রামের মাঠ থেকে। তাঁদের পোশাক ছিল এলোমেলো। তবে কোনও মহিলার উপর যৌন নির্যাতনের চিহ্ন পাওয়া যায়নি।
ন’টি খুনের মধ্যেই এই নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য খুঁজে পেয়েছেন তদন্তকারীরা। প্রতিটি ঘটনা বরেলীর ২৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দু’টি থানার অধীনস্থ এলাকায় অবস্থিত গ্রামে ঘটেছে। নিহতের প্রত্যেকের বয়স ৪৫ থেকে ৫৫ বছর। খুনের কারণ নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।
গত বছরের জুন মাসে প্রথম খুন হয়েছিলেন এক মহিলা। এ বছরের জুলাইয়ে উদ্ধার হওয়া দেহটি নিয়ে মোট ন’টি খুন হয়ে গিয়েছে। এখনও পর্যন্ত তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। কিন্তু আদৌ তাঁরা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত নন বলে মনে করা হচ্ছে। কারণ, তাঁরা হেফাজতে থাকাকালীনই আরও খুন হয়েছে। অর্থাৎ, আসল খুনি পুলিশের নাগালের বাইরেই রয়েছে। সিরিয়াল কিলারের আতঙ্কে ত্রস্ত বরেলীর একাধিক গ্রাম। কেন পুলিশ এখনও একটি খুনেরও কিনারা করতে পারছে না, সেই প্রশ্নই ঘুরছে সকলের মনে।
পুলিশ জানিয়েছে, এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসিয়ে সব ধরনের নজরদারির বন্দোবস্ত করেও কোনও লাভ হচ্ছে না। বার বার তাদের হাত থেকে বেরিয়ে যাচ্ছে আততায়ী। বরেলীর এসএসপি অনুরাগ আর্য বলেছেন, ‘‘খুনের ধরন স্পষ্ট। দুপুরে গলা টিপে হত্যা। তার পর দেহ কোনও মাঠের মাঝে ফেলে যাওয়া। প্রতি ক্ষেত্রেই ময়নাতদন্তের রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, যৌন হেনস্থার চিহ্ন নেই। আমাদের তদন্ত থমকে গিয়েছে।’’
খুনের কিনারা করতে প্রাচীন পদ্ধতিও অবলম্বন করে দেখছে পুলিশ। আপাতত তিন জন সন্দেহভাজনের ছবি আঁকানো হয়েছে। সেই স্কেচ প্রকাশ করেছে পুলিশ। এলাকার অন্তত ৯০টি গ্রামে স্কেচ ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। কৃষক এবং গ্রামবাসীদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে।
যে সমস্ত গ্রাম থেকে কোনও না কোনও মহিলা খুন হয়েছেন, সেখানকার গ্রামপ্রধানেরা জানিয়েছেন, তাঁরা গ্রামের মহিলাদের একা একা রাস্তায় বেরোতে নিষেধ করেছেন। সবসময় একসঙ্গে অনেকে মিলে বেরোতে বলা হয়েছে মহিলাদের। সকলেই খুব ভয় পেয়ে আছেন। কী ভাবে এই রহস্যের সমাধান হবে, উত্তর নেই পুলিশের কাছেও।