জায়গায় জায়গায় তল্লাশি চলছে এখনও। —ফাইল চিত্র।
কাশ্মীরে জঙ্গিদের সঙ্গে একই গাড়িতে যাত্রা করার সময় গ্রেফতার হলেন সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদকজয়ী এক পুলিশ অফিসার। উপত্যকা থেকে জঙ্গিরা দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিচ্ছিল বলে স্থানীয় পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। কিন্তু ওই পুলিশ অফিসার তাদের সঙ্গে কী করছিলেন তা এখনও স্পষ্ট নয়। যদিও তাঁকেও জঙ্গি হিসাবেই ধরা হবে বলে জানিয়েছে উপত্যকার পুলিশ।
শনিবার শ্রীনগর-জম্মু হাইওয়ে হয়ে যাওয়ার পথে কুলগামের ওয়াংপো-তে ওই গাড়িটি আটকায় পুলিশ। সেই সময় হিজবুল মুজাহিদিন জঙ্গি নাভেদ বাবু ও তার এক সহযোগীর সঙ্গে ওই গাড়িতেই ছিলেন শ্রীনগর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর সংলগ্ন এলাকার ডেপুটি সুপারিনটেন্ডেন্ট দেবেন্দ্র সিংহ।
কাশ্মীর থেকে বহিরাগতদের হটাতে গত বছর অক্টোবর এবং নভেম্বরে কাশ্মীরে ধারাবাহিক নাশকতা চালায় জঙ্গিরা। তাতে বাংলা থেকে আপেল বাগানে কাজ করতে যাওয়া পাঁচ শ্রমিক-সহ মোট ১১ জনের মৃত্যু হয়। উপত্যকার প্রাক্তন স্পেশাল পুলিশ আধিকারিক (এসপিও) তথা হিজবুল জঙ্গি এই নাভেদ বাবুর নেতৃত্বেই সেই হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। তার পর থেকেই তার গতিবিধির উপর নজর ছিল পুলিশের।
শনিবার ফোনে নিজের দাদার সঙ্গে কথা বলে নাভেদ। তাতেই তার অবস্থান জানতে পারে পুলিশ। সেইসঙ্গে নাভেদরা গাড়িতে চেপে ওয়াংপো যাচ্ছে, তা-ও জানা যায়। সেই তথ্যের সূত্রেই তল্লাশি চালিয়ে নাভেদ, তার সহযোগী আসিফ এবং দেবেন্দ্র সিংহকে গ্রেফতার করা হয়।
গত বছর স্বাধীনতা দিবসে সাহসিকতার জন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পদক নিয়েছিলেন দেবেন্দ্র। গ্রেফতারির পর তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। তাঁর বয়ানের ভিত্তিতে ইতিমধ্যেই শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের একাধিক জায়গায় হানা দিয়ে বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে। জঙ্গিদের সঙ্গে মিলে দেবেন্দ্র সেগুলি মজুত করে রেখেছিলেন বলে পুলিশ সূত্রে খবর। শ্রীনগরের বাদামিবাগ ক্যান্টনমেন্টে দেবেন্দ্রর বাড়ি থেকেও একটি একে-৪৭ এবং দু’টি পিস্তল উদ্ধার হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। নাভেদকে জেরা করে আরও একটি একে-৪৭ এবং পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
তবে জঙ্গিরা কী উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল, তা এখনও স্পষ্ট হয়নি। রবিবার থেকে চার দিনের ছুটির জন্য আবেদন করেছিলেন দেবেন্দ্র। জঙ্গিদের সঙ্গে তিনি কোনও পরিকল্পনায় যুক্ত ছিলেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এর আগে, ২০১৩ সালে খবরের শিরোনামে উঠে আসেন দেবেন্দ্র। ফাঁসির আগে একটি চিঠিতে তাঁর কথা উল্লেখ করেছিলেন সংসদ ভবন হামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আফজল গুরু। হামলায় অভিযুক্ত এক ব্যক্তির দিল্লিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিতে দেবেন্দ্র তাঁকে অনুরোধ করেছিলেন বলে দাবি করেছিলেন আফজল।