জ্বলছে কাশ্মীর, গুলি-আগুন-সংঘর্ষে নিহত ৮, আহত ৯৪ পুলিশকর্মী

হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার ফের রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উপত্যকা। এ দিন বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়, নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৯ জুলাই ২০১৬ ১০:৫১
Share:

হিজবুল জঙ্গি বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শনিবার ফের রণক্ষেত্রের চেহারা নিল উপত্যকা। এ দিন বিক্ষুব্ধ জনতা পুলিশ চৌকিতে হামলা চালায়, নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে ইট, পাথর ছুড়তে থাকে। পাল্টা জবাব দেয় পুলিশও। শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ বাধে স্থানীয় বাসিন্দাদের। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে গুলি চালাতে হয়। মৃত্যু হয় আট জনের। ৯৪ জন পুলিশ আহত হন। পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। কুলগানের বিজেপি অফিসেও হামলা চালায় জনতা। বুরহানের মৃত্যুতে শুক্রবার থেকেই ক্ষোভে ফুঁসছিল শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকা। শনিবার তা আছড়ে পড়ে নিরাপত্তারক্ষীদের উপর। কার্ফু জারি সত্ত্বেও হিজবুল জঙ্গি বুরহানের শবদেহ নিয়ে রাস্তায় নামেন ৫০ হাজার বাসিন্দা। যখনই কোনও স্থানীয় জঙ্গি সেনার গুলিতে নিহত হয়েছে, বাসিন্দারা রাস্তায় নেমেছেন, বিক্ষোভ প্রতিবাদ করেছেন। এমনকী সেনার সঙ্গে সংঘর্ষেও জড়িয়েছেন। বুরহানের ক্ষেত্রেও সেই একই ছবি ধরা পড়েছে শুক্রবার এবং শনিবারেও।

Advertisement

বুরহান ওয়ানির মৃত্যুকে কেন্দ্র করে শুক্রবারেই রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় শ্রীনগর এবং দক্ষিণ কাশ্মীরের বেশ কিছু এলাকা। ওয়ানির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় বাসিন্দারা বিক্ষোভ সামিল হন। শ্রীনগর-অনন্তনাগ জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গেলে নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে দফায় দফায় গণ্ডগোল হয় তাঁদের। পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে এমন আঁচ পেয়েই রাজ্য প্রশাসন শ্রীনগর ও দক্ষিণ কাশ্মীরের বেশ কিছু জায়গায় কার্ফু জারি করে। রাজ্যের উত্তেজনা প্রবণ জায়গাগুলিতে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। স্থগিত করে দেওয়া হয় অমরনাথ যাত্রা। এক পুলিশ আধিকারিক জানান, পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে জম্মুর ভগবতী নগর যাত্রী নিবাস থেকে অমরনাথ যাত্রার জন্য পূণ্যার্থীদের অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। বারামুলা থেকে বানিহাল পর্যন্ত রেল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

বুরহানের মৃত্যুর প্রতিবাদে হুরিয়ত চেয়ারম্যান সৈয়দ আলি গিলানি এবং জেকেএলএফ চেয়ারম্যান ইয়াসিন মালিক শনিবার হরতালের ডাক দিয়েছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভূস্বর্গ যেন ফের উত্তপ্ত না হয়, সে কারণে হুরিয়তের একাধিক শীর্ষ নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা এ দিন সকালে টুইট করেন, “এটা যদি সত্যি হয়, তাহলে বড় ঘটনা। উপত্যকায় কয়েক দিন উত্তেজনা থাকবে। বুরহানই বন্দুকের শিকার প্রথম নয়, আবার শেষও নয়।”

Advertisement


বুরহান ওয়ানি (ডান দিকে)।

শুক্রবার সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে বুমডুরা গ্রামে কাশ্মীরে হিজবুলের ‘পোস্টার বয়’ বুরহান ওয়ানি-সহ তিন জঙ্গিকে খতম করে। স্কুল শিক্ষকের ছেলে বুরহান কাশ্মীরের এক জন হাই প্রোফাইল হিজবুল জঙ্গি ছিল। সম্প্রতি সৈনিক কলোনিতে হামলা চালানোর হুমকিও দিয়েছিল সে। গত মাসে তার এক শাগরেদ তারিক পণ্ডিত পুলওয়ামাতে আত্মসমর্পণ করার পরেই ওয়ানির নেটওয়ার্ক একটু দুর্বল হয়ে পড়ে। তারিককে কাজে লাগিয়ে বুরহানের গতিবিধির উপর নজর রাখতে শুরু করেছিল পুলিশ। ২০১৪-য় সোশ্যাল মিডিয়ায় বন্দুক হাতে বুরহান-সহ বেশ কয়েক জন কাশ্মীরি যুবককে দেখা গিয়েছিল। তারিকও তাদের মধ্যে একজন ছিল।

বুরহানের মৃত্যুর পর সেনার এক মুখপাত্র জানান, যে ভাবে উপত্যাকায় তার নেতৃত্বে নতুন মোড়কে সন্ত্রাসবাদ মাথা চাড়া দিচ্ছিল সে দিক থেকে দেখতে গেলে এটা একটা বিরাট সাফল্য সেনা ও জম্মু-কাশ্মীর পুলিশের।

আরও খবর...

খতম সন্ত্রাসের নয়া মুখ বুরহান

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement