—প্রতীকী চিত্র।
মানসিক অসুস্থতা বলে স্বীকৃতি দেয়নি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)। অথচ সেই ‘পিটার প্যান সিনড্রোম’-কে হাতিয়ার করেই নাবালিকার অপহরণ এবং যৌন নিগ্রহ মামলায় জামিন পেলেন অভিযুক্ত যুবক। যৌন নির্যাতন থেকে শিশু সুরক্ষা আইনে (পকসো)মামলা দায়ের হয়েছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কিন্তু সোমবার মুম্বইয়ের পকসো আদালতই শর্তসাপেক্ষে তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে।
নির্যাতিতার পরিবারের তরফে অপহরণের অভিযোগ জমা পড়লে, এপ্রিল মাসে গ্রেফতার হন ওই যুবক। অভিযোগ ওঠে, ১৪ বছরের মেয়েটিকে অপরহণ করে, তার উপর যৌন নির্যাতন চালান ২৩ বছরের ওই যুবক। যদিও অভিযুক্তের আইনজীবীর দাবি ছিল, দু’জনের মধ্যে আগে থেকেই সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির পরিবার তা মানতে পারেনি। তাই অভিযোগ দায়ের করেছে। কিন্তু সব জেনে শুনে, স্বেচ্ছায় তাঁর মক্কেলকে বিয়েও করে মেয়েটি।
অভিযুক্তের হয়ে সওয়াল করতে গিয়ে তাঁর আইনজীবী সুনীল পান্ডে জানান, তাঁর মক্কেল পিটার প্যান সিন্ড্রোমে ভুগছেন। মানসিক ভাবে পরিণত নন তিনি। প্রাপ্তবয়স্ত হিসেবে যে যে দায়িত্ব পালনের কথা, তা পালনে অসমর্থ্য। সোমবার এ নিয়ে শুনানি চলাকালীন, ২৫ হাজার টাকা বন্ডের বিনিময়ে, শর্তসাপেক্ষে অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেন বিশেষ বিচারপতি এসসি যাদব।
অভিযুক্তের জামিনের বিরোধিতা করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী বীণা শেলার। তিনি জানান, অপরাধের যথেষ্ট প্রমাণ তাঁদের হাতে রয়েছে। অসুস্থতার কোনও প্রমাণ দেখাতে পারেননি অভিযুক্ত। তার পরেও তাঁকে জামিন দিলে তিনি প্রমাণ লোপাট করতে পারেন। যদিও আদালত শেষ মেশ অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করে। বলা হয়, আগে কোনও অপরাধ মামলায় নাম ওঠেনি অভিযুক্তের। তাঁকে হেফাজতে রাখা অর্থহীন। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, মেয়েটির সম্মতিতেই সব কিছু ঘটেছে। নিজের ইচ্ছেয় সে অভিযুক্তের সঙ্গে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়।
কিন্তু যে অসুস্থতার ভিত্তিতে অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর হয়েছে, তার যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। শিশু-কিশোর সাহিত্যের একটি চরিত্রের নাম পিটার প্যান। এর স্রষ্টা জেমস ম্যাথিউ ব্যারি। বড় হতে না চাওয়া এক ছেলেকে নিয়ে তাঁর গল্প। পরবর্তী কালে পর নির্ভরশীল, দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যক্তিদের মানসিক অবস্থা বর্ণনা করার ক্ষেত্রে ‘পিটার প্যান সিনড্রোম’ শব্দবন্ধটির ব্যবহার শুরু হয়। যদিও এই ধরনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য মানসিক অসুস্থতা বলে স্বীকৃত নয়।