National News

ট্রাক ভর্তি নথি পাচার করেছিল নীরব মোদীরা, পিএনবি কেলেঙ্কারিতে বিস্ফোরক তথ্য

সিবিআই সূত্রে খবর, একটি মিটিং রুমে প্রায় ৫০-৬০টি কার্টনে ভর্তি করে ডাঁই করে রাখা হয়েছিল নীরব মোদীর সংস্থার নথি। দু’দিন ধরে সেই নথি উদ্ধারের কাজ চালান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সিল করে দেওয়া হয় ওই ঘরটি। পরে গোয়েন্দারা পরীক্ষা করে দেখেন, তাতে রয়েছে ২৪,৬২৫ পাতার বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:০০
Share:

ট্রাক ভর্তি নথি পাচার করে দিয়েছিলেন নীরব মোদীরা।

পিএবি কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই বহু নথি পাচার করে দিয়েছিলেন নীরব মোদীরা। ৫০-৬০টি কার্টনে ভরে একটি ট্রাকে করে সেই নথি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। রাখা হয়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা ‘সিরিল অমরচাঁদ মঙ্গলদাস’ (ক্যাম) এর দফতরে। তল্লাশি চালিয়ে ওই সব নথি সিবিআই উদ্ধার করে। পিএনবি কেলেঙ্কারি আদালতে পেশ করা সিবিআই-এর তল্লাশি তালিকা থেকে সম্প্রতি এই তথ্য সামনে এসেছে। আর সেই সূত্রেই সিবিআই-এর আতসকাচের নীচে এই আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা। তবে সংস্থার তরফে অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

এ বছরের জানুয়ারির মাঝামাঝি পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩,৫০০ কোটির কেলেঙ্কারি নিয়ে চর্চা শুরু হয়। ২৯ জানুয়ারি ব্যাঙ্কের তরফে এফআইআর দায়ের করা হয়। তারপরই নীরব মোদী, মেহুল চোক্সীদের কেলেঙ্কারি সামনে আসে। এরপরই সংস্থার বস্তা বস্তা নথি পাচার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। নীরব মোদীর সংস্থার কয়েকজন কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদে সিবিআই সেই বিষয়টি জানতে পারে। এর পর ২১ ফেব্রুয়ারি রাত থেকে ক্যাম-এর দফতরে অভিযানে নামেন তদন্তকারী সংস্থার গোয়েন্দারা।

তল্লাশির সময় কার্যত চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় দুঁদে গোয়েন্দাদের। সিবিআই সূত্রে খবর, একটি মিটিং রুমে প্রায় ৫০-৬০টি কার্টনে ভর্তি করে ডাঁই করে রাখা হয়েছিল নীরব মোদীর সংস্থার নথি। দু’দিন ধরে সেই নথি উদ্ধারের কাজ চালান সিবিআইয়ের গোয়েন্দারা। সিল করে দেওয়া হয় ওই ঘরটি। পরে গোয়েন্দারা পরীক্ষা করে দেখেন, তাতে রয়েছে ২৪,৬২৫ পাতার বহু গুরুত্বপূর্ণ নথি।

Advertisement

আরও পড়ুন: নোটিস বদলে মোদীর হাত দেখছে কংগ্রেস

ক্যাম নীরব মোদীর সংস্থার আইনি পরামর্শদাতা ছিল না। তারপরও তাঁদের দফতরে কেন নথি নিয়ে যাওয়া হল এবং ওই সংস্থাই বা কেন তাতে রাজি হলেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। পাশাপাশি এর পিছনেও কোনও লেনদেন হয়েছিল কিনা, তা-ও সিবিআইয়ের তদন্তের আওতায়। আপাতত গোয়েন্দারা আলোচনা শুরু করেছেন, ওই সংস্থাকে তথ্য গোপন করার ধারায় অভিযুক্ত করা হবে, নাকি সাক্ষী হিসাবে দেখানো হবে। তাই আদালতে নথি উদ্ধারের কথা উল্লেখ করা হলেও সেগুলি এখনও পেশ করা হয়নি। তবে ওই সংস্থার একাধিক কর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বলে তদন্তকারী অফিসার এবং সিবিআই-এর আইনজীবী সূত্রে খবর মিলেছে বলে রয়টার্স দাবি করেছে।

সিবিআই-এর আইনজীবী কে রাঘবচারুলু বলেন, ক্যাম যে নীরব মোদীর সংস্থার আইনি পরামর্শদাতা ছিল না, এটা প্রায় ১০০ শতাংশ নিশ্চিত। তাই ‘অ্যাটর্নি ক্লায়েন্ট প্রিভিলেজ’ পাবে না ক্যাম। যদিও এটা শুধুমাত্র তদন্তকারীদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা এবং নিয়মিত ‘ব্রিফিং’-এর উপর ভিত্তি করে তিনি এরকম মনে করেন। পুরো নথি আদালতে পেশ হলে তবেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে। আরও বলেন, পরের অতিরিক্ত চার্জশিটে ক্যাম-কে অন্তর্ভূক্ত করা হতে পারে। এই সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।

আরও পডু়ন: ‘২০ লাখ দেব, বিজেপি নেত্রীদের কেউ ধর্ষিতা হবেন?’ বেলাগাম আপ নেতা

অন্যদিকে তাদের সংস্থার সঙ্গে নীরব মোদীর সংস্থার কী সম্পর্ক, সে বিষয়ে স্পষ্ট করে কিছু বলতে চায়নি ক্যাম। সংস্থার মুখপাত্র মধুমিতা পাল বলেন, ‘‘আইনি বিষয়ে সব সময়ই স্বচ্ছ এবং সবচেয়ে ভাল রীতিনীতি মেনে চলে। কিন্তু বিচারাধীন কোনও বিষয়ে মন্তব্য করব না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই সংস্থার এক শীর্ষকর্তা বলেন, অভিযোগ পুরোপুরি ভিত্তিহীন।

ক্যাম দেশের সবচেয়ে বড় আইনি পরামর্শদাতা সংস্থা। কর্মরত রয়েছেন প্রায় ৬০০ আইনজীবী। গুগল, মাইক্রোসফট, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাঙ্ক, আইসিআইসিআই ব্যাঙ্কের মতো দেশ-বিদেশের বহু বিখ্যাত সংস্থাকে টাকার বিনিময়ে আইনি পরামর্শ দেয় ক্যাম। এ হেন সংস্থার সঙ্গে এবার পিএনবি কেলেঙ্কারিতে নাম জড়ানোয় সংস্থার ভাবমূর্তিতে প্রভাব পড়বে বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement