PM Narendra Modi

বাণিজ্য-মঞ্চে ‘গ্যারান্টি’ মোদীর

জি২০-র পর কিছুটা উথালপাথাল চলছে ভারতের বিদেশনীতিতে। কানাডা এবং আমেরিকা তাদের নাগরিককে হত্যা এবং হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে ভারতের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৯:৪৯
Share:

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।

নিজের রাজ্য গুজরাত থেকে আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচার কার্যত শুরু করে দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। এক দিকে নিজের সরকারের ভাবমূর্তিকে পাকাপোক্ত করতে চাইলেন বিদেশি অতিথিদের সামনে, অন্য দিকে উন্নত ভারতের ‘গ্যারান্টি’কে বারবার তুলে ধরলেন।

Advertisement

‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’-এর উদ্বোধনে দেশের শীর্ষ পর্যায়ের বাণিজ্যকর্তা এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির প্রধানমন্ত্রী-সহ বিভিন্ন বিদেশি নেতা ও বিনিয়োগ কর্তাদের সামনে মোদীর বক্তব্য, সমস্ত রেটিং সংস্থাগুলিই বলছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যেই ভারত বিশ্বের তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণত হবে। আত্মবিশ্বাসী প্রধানমন্ত্রীর কথায়, “বিশ্বের রেটিং সংস্থাগুলি যা বলার বলছে। কিন্তু এটা আমার গ্যারান্টি, যে ভারত তৃতীয় বৃহৎ অর্থনীতি হবেই।”

জি২০-র পর কিছুটা উথালপাথাল চলছে ভারতের বিদেশনীতিতে। কানাডা এবং আমেরিকা তাদের নাগরিককে হত্যা এবং হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে ভারতের বিরুদ্ধে। প্রতিবেশী বলয়ে অস্থিরতা চলছে। সম্প্রতি মলদ্বীপের তিনমন্ত্রী মোদী সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করার পর ঘরোয়া রাজনীতিতে সমালোচনার ঢেউ তৈরি হয়েছে। সব মিলিয়ে নিজের ‘বিশ্বগুরু’ ভাবমূর্তিকেও পোক্ত করতেচেয়ে মোদীর বক্তব্য, “দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বব্যবস্থায় ভারত বিশ্বমিত্র হিসাবে এগিয়ে চলেছে। স্থিতিশীলতার অন্যতম স্তম্ভ হিসাবে ভারতের দিকে চেয়ে রয়েছে বিশ্ব। ভারতকে এমন এক বন্ধু বলে ভাবা হয়, যাকে বিশ্বাস করা যায়, এমন অংশীদার, যে মানবমুখী উন্নয়নে বিশ্বাস করে, এমন কণ্ঠ যা মানবকল্যাণের বার্তা দেয়। আজ ভারত বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধির ইঞ্জিন, প্রযুক্তির প্রাণকেন্দ্র। ভারত বিশ্বকে এই ভরসা দিচ্ছে যে সবাই মিলে লক্ষ্য স্থির রাখলে তা অর্জন করা সম্ভব। ”

Advertisement

মোদী এই দাবি করলেও তাঁর নীতির বিরুদ্ধে সরব বিরোধী দলের নেতা মন্ত্রীরা। কর্নাটকের মন্ত্রী তথা কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গের পুত্র প্রিয়ঙ্ক এক্স হ্যান্ডল-এ লিখেছেন, “ভারত এক সময়ে ভারত মহাসাগরীয় এবং এশিয়ার দেশগুলির বন্ধু এবং অভিভাবক ছিল। কিন্তু ছোট দেশগুলির উপর দাদাগিরি করে ভারতের কোনও সুবিধা হচ্ছে না। গত কয়েক দশকে ভারতের যে ভাবমূর্তি তৈরি হয়েছিল ,তা ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে। দলের আইটি সেলকে সরকার অনুমতি দিচ্ছে, বিদেশ নীতির প্রশ্নে ট্রোলিং করতে।”

তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ সাকেত গোখলে আজ বলেছেন, “এটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক যে মোদী এবং জয়শঙ্করের নেতৃত্বে ভারতের বিদেশনীতি ক্রমশ উদ্ধত, মিথ্যাচারী, অন্যকে খেপানো এবং আক্রমণাত্মক হয়ে উঠছে। এর শুরু হয়েছিল মোদী সরকারের একটি মিথ্যে দাবি থেকে। দাবি করা হয়েছিল, মোদী নাকি রাশিয়া এবং ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এর পর রহস্যময় উৎস থেকে ছড়ানো হল, মোদীর সই চেয়েছেন বাইডেন, কোয়াড সম্মেলন চলার সময়ে।”

এরপর গোখলে কানাডার সঙ্গে প্রকাশ্য বিবাদের বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছেন। তাঁর কথায়, “প্রকৃত বিদেশনীতি কূটনৈতিক সংলাপে গুরুত্ব দেয়। কিন্তু মোদীর কাছে নিজের প্রচার এবং বিশ্বগুরুর ভাবমূর্তি তৈরিই শেষ কথা হয়ে গিয়েছে এখন।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement