প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কখনও বললেন, হলুদ খেতে ভুলছেন কি না, গুজরাত থেকে ফোনে সেই খবর নেন মা। আবার কখনও গোপন রহস্য ফাঁসের ঢঙে জানালেন, সপ্তাহে এক-দু’দিন ডাঁটার পরোটা এখনও তাঁর বাঁধা। বৃহস্পতিবার ‘ফিট ইন্ডিয়া মুভমেন্ট’-এর প্রথম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে এ ভাবেই বলিউড তারকা, পুষ্টিবিদদের মতো বিভিন্ন পেশার বিখ্যাতদের সঙ্গে অনলাইন-গল্পে মাতলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাস্থ্য-ফিটনেসকে জরুরি মেনেও বিরোধীদের অবশ্য কটাক্ষ, অর্থনীতি রসাতলে। কাজ খুইয়ে নাভিশ্বাস বহু জনের। এক দিন আগেই কোভিডে প্রয়াত হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী। আর এই পরিস্থিতিতে নিজের পরোটা খাওয়ার গল্প শোনাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী!
অভিনেতা মিলিন্দ সোমানের সঙ্গে আলাপচারিতার সময়ে রসিকতা করে মোদীর প্রশ্ন, ‘‘অনলাইনে (সোশ্যাল মিডিয়ায়) আপনার যে বয়স দেখা যায়, সত্যিই কি তা-ই?’’ পঞ্চান্ন বছরের মিলিন্দ নিজের আশি-পেরোনো মায়ের ফিটনেসের কথা বলতেই মোদী জানান, তাঁর ফিটনেসের ভিডিয়ো পাঁচ বার দেখেছেন। তাজ্জব বনে গিয়েছেন ‘পুশ-আপে’। কিন্তু এক ফাঁকে তেমনই দাবি করেছেন, নিজের স্বার্থে কিছু না-করে নির্লিপ্ত ভাবে শুধু সকলের ভালর জন্য কাজ করে যান বলেই সমালোচনা বড় একটা স্পর্শ করতে পারে না তাঁকে।
পুষ্টিবিদ রুজুতা দিবেকরের সঙ্গে কথায় প্রধানমন্ত্রী হাসিমুখে জানিয়েছেন, করোনার সময়ে মায়ের খোঁজ নিতে সপ্তাহে এক-দু’বার ফোন তিনি করেনই। প্রতি বার উদ্বিগ্ন মায়ের প্রশ্ন, “হলুদ খাচ্ছিস, নাকি খাচ্ছিস না?” উল্লেখ্য, কোভিডের এই সময়ে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলুদ-দুধ খাওয়ার কথা বলেছে আয়ুষ মন্ত্রকও। এই খাওয়ার গল্পের সূত্রেই মোদী জানিয়েছেন, ছোটবেলা থেকেই পুষ্টিকর জেনে ডাঁটার পরোটা খেতেন তিনি। নিজেও বানাতেন এই পরোটা। ৭ লোককল্যাণ মার্গের বাসিন্দা হয়েও এখনও সপ্তাহে এক-দু’বার ওই মেনু তাঁর বাঁধা। আগামী দিনে আলাদা হ্যাশট্যাগে এই রেসিপি জনপ্রিয় করতেও চান তিনি। চর্চা অবশ্য চলল, অনেকে ডাঁটার পাতা দিয়ে যে পরোটা বানান— তার কথাই কি বলতে চেয়েছেন মোদী?
এই অনুষ্ঠানে আইআইটি এবং মার্কিন মুলুকের এমআইটি থেকে পাশ করার পরেও সন্ন্যাসী হয়ে যাওয়া স্বামী শিবধ্যানম সরস্বতীর সঙ্গে যেমন প্রধানমন্ত্রী কথা বলেছেন, তেমনই মুকুল কানিতকরের কাছে তিনি জানতে চেয়েছেন গীতায় লুকিয়ে থাকা ফিটনেসের রহস্য।
বিরোধীরা বলছেন, কোভিডের সময়ে স্বাস্থ্য-সচেতনতা আরও বেশি করে জরুরি ঠিকই। কিন্তু সেই কোভিডেই সদ্য মন্ত্রী মারা গিয়েছেন। প্রয়াত আরও তিন সাংসদ। দেশে মৃত্যু-মিছিল। অর্থনীতি বিপর্যস্ত। এটা কি গল্পগাছার সময়!