প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সমাজমাধ্যমের পোস্ট কিছুটা হালকা চালেই— এমনটাই মনে করেছে কূটনৈতিক শিবিরের একাংশ। প্রধানমন্ত্রী পদের গাম্ভীর্য ঝেড়ে ওই পোস্টে যেন হালফিলের ‘ট্রোল’-এর মেজাজ! ওটিটি-র বিশ্ববিখ্যাত ব্যাঙ্ক ডাকাতির গল্প নিয়ে তৈরি সিরিজ ‘মানি হেস্ট’-কে আজ মোদী নিয়ে এলেন তাঁর এক্স হ্যান্ডলে করা পোস্টে। তবে আদানি প্রসঙ্গ টেনে তার জবাবও দিয়েছে কংগ্রেস।
সম্প্রতি ওড়িশায় রাজ্যসভার কংগ্রেস সাংসদ ধীরজ সাহুর বাড়ি এবং অন্যান্য জায়গায় হানা দিয়ে টাকার পাহাড়ের সন্ধান পেয়েছে আয়কর দফতর। বিজেপি এই সংক্রান্ত একটি ভিডিয়ো এক্স হ্যান্ডল-এ পোস্ট করার পরে প্রধানমন্ত্রী সেটি শেয়ার করেন। তিনি লেখেন, ‘ভারতে মানি হেস্ট-এর কাল্পনিক কাহিনির প্রয়োজনটাই বা কি! কংগ্রেস পার্টিই যখন রয়েছে, যাদের ডাকাতি কিংবদন্তির পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। ৭০ বছর ধরে যা চলছে তো চলছেই’।
আজ সকালে বিজেপি যে ভিডিয়োটি সমাজমাধ্যমে পোস্ট করে তাতে দেখা গিয়েছে, কংগ্রেস সাংসদের বাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের ছবির সঙ্গে নেপথ্য সঙ্গীত ‘মানি হেস্ট’ সিরিজের সুর। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খড়্গে এবং রাহুল গান্ধীর ছবিও তাতে রয়েছে। এই ভিডিয়োটিই শেয়ার করেন প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব ওই মন্তব্য সহযোগে। প্রসঙ্গত, আট দিন আগেই সমাজমাধ্যমে করা মোদীর পোস্টের ধাঁচ নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। গোবলয়ের তিন রাজ্যে পরাজিত কংগ্রেসের নাম না করে তীব্র ব্যঙ্গ করেছিলেন তিনি। সেখানে বহু ইমোজি ব্যবহার করেছিলেন তিনি
ওড়িশায় টাকা উদ্ধার নিয়ে আজ অবশ্য লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী বলেন, “এত টাকা উদ্ধারের কথা বলা হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু তা সাদা না কালো, অথবা আয়ের উৎস কী — এসব কিছুই বলা হচ্ছে না। ধীরজ সাহুর সংস্থা অনেক পুরনো। এই টাকা আয়কর দেওয়ার পর, রোজগারের অংশ কিনা তা বলা হয়নি। এর সঙ্গে কংগ্রেসের সম্পর্ক নেই। এখন যে ভাবে বিজেপি এই টাকার সঙ্গে কংগ্রেসকে জড়িয়ে দেখাচ্ছে, সে
রকম নীরব মোদীর সময় দেখা যায়নি। তখন কেন্দ্রই চুপ ছিল। মেহুল চোক্সির ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার। ধীরজ আর যাই হোক দেশ ছেড়ে পালাননি, এখানেই রয়েছেন।”
আজ প্রধানমন্ত্রীকে পাল্টা বিঁধেছেন কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ। পাল্টা এক্স হ্যান্ডলে লিখেছেন, ‘মাননীয় মোদীজি, ১৯৪৭ সাল থেকে বৃহত্তম মানি হেস্ট-এর ব্যাপারে দেশ আপনার মতামত জানতে চায়। আপনার ঘনিষ্ঠ বন্ধু আদানি আমদানি করা কয়লার দাম বাড়িয়ে দেশ থেকে ১৭,৫০০কোটি টাকা সরিয়ে নিলেন। বিদেশে করফাঁকির স্বর্গরাজ্যে তৈরি হওয়া ভুইফোঁড় সংস্থাগুলির মাধ্যমে যিনি আরও ২০ হাজার কোটি টাকা দেশে ফিরিয়ে এনেছেন। সেই সব প্রকল্পে বিনিয়োগ করেছেন যেগুলি তাঁর হাতে উপহার হিসাবে তুলে দিয়েছে ইডি, সিবিআই, ও আয়কর বিভাগ। যাঁর কিছু ছিল না আজ তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি। আমরা বুঝতে পারছি, এই সব থেকে দৃষ্টি ঘোরানোর জন্য মরিয়া হয়ে গিয়েছেন।”