গুজরাতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ‘প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা’র ব্যাখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ফাইল ছবি।
গুজরাতের মাটিতে দাঁড়িয়ে ‘প্রকৃত ধর্মনিরপেক্ষতা’র ব্যাখ্যা দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সঙ্গে নতুন জাতীয় শিক্ষানীতির প্রসঙ্গ তুলে বললেন, পূর্বতন সরকারের (কংগ্রেস) ইংরেজি প্রীতিকে সরিয়ে এখন গ্রাম বা মফস্সলে সেখানকার মাতৃভাষায় পড়ানোর সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তাঁরদাবি, এর ফলে গ্রামের গরিব অথচ শিক্ষিত মানুষের চাকরির সুযোগ অনেক বাড়বে।
আজ গুজরাতে এক দিকে অখিল ভারতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সংঘের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অন্তর্গত ৪৪০০ কোটি টাকার প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন। তাঁর কথায়, “আগে গরিব মানুষের কাছে সরকারি যোজনার টাকা পৌঁছনোর আগেই দুর্নীতিতে তা উধাও হয়ে যেত। জনতা সেটাকে ভাগ্য বলে মেনে নিত। এখন সরকার নিজেই গরিবদের কাছে পৌঁছচ্ছে। সরকারের এই নীতিতে দুর্নীতি, পারস্পরিক বিভেদ সব ঘুচে গিয়েছে। কোনও ধর্ম বা জাতি দেখে সরকার তার যোজনার সুফল পৌঁছয় না। জাতি-ধর্ম-সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকলের সুবিধার জন্য ১০০ শতাংশ কাজ করে। এর থেকে সাচ্চা ধর্মনিরপেক্ষতা আর নেই। এর থেকে বড় সামাজিক ন্যায় আর নেই।”
ডিসেম্বরে গুজরাতে ভোটের আগে প্রচারের ঝড় তুলতে দেখা গিয়েছিল নরেন্দ্র মোদীকে। সে সময়ে ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের বহু প্রচার করেছিলেন তিনি। আজ সেই ‘ডাবল ইঞ্জিন’ সরকারের জয়গান করে তাঁর বক্তব্য, “এই ডাবল ইঞ্জিন সরকার দ্বিগুণ গতিতে কাজ করছে। গত ন’বছরে দেশবাসী পরিবর্তন টের পেয়েছেন। গুজরাতে কয়েক মাস আগেই ভোট হয়েছে। কিন্তু এর মধ্যেই বিকাশের গতি দেখে আমি আনন্দিত।” কংগ্রেস সরকারকে নিশানা করে প্রধানমন্ত্রী আজ বলেছেন, “সরকারি আবাস যোজনা বহু দিন ধরে চলে আসছে। কিন্তু ১০ বছর আগে আমাদের গ্রামগুলির ৭৫ শতাংশ পরিবারের পাকা শৌচালয় ছিল না। সে সময় সরকারের এই নিয়ে মাথাব্যথাও ছিল না। এটা মনে রাখতে হবে, ঘর শুধু মাথা ঢাকার ছাদ নয়, ভবিষ্যতের স্বপ্ন এখানে তৈরি হয়। আমরা এসে আবাস যোজনাকে গরিবের লড়াইয়ের, আত্মবিশ্বাসের ভিত হিসেবে তৈরি করেছি।”
শিক্ষকদের সম্মেলনে নিজেকে ‘আজীবন বিদ্যার্থী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন মোদী। আজকের এই পরিবর্তনশীল সময়ে ছাত্র এবং শিক্ষকদের সামনে তৈরি হওয়া নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের প্রসঙ্গে বিজেপি সরকারের আনা জাতীয় শিক্ষানীতি নিয়েও সরব হয়েছেন। কংগ্রেসের নীতির সঙ্গে তা কতটা পৃথক সে কথা স্পষ্ট করতে চেয়ে মোদী বলেন, “এত দিন ছাত্রছাত্রীদের শুধু কেতাবি শিক্ষা দেওয়া হত। নতুন শিক্ষানীতি পুরনো অপ্রাসঙ্গিক ব্যবস্থাকে বদলে দিয়ে শিক্ষাকে অনেক বাস্তবমুখী করছে। পাঠ্যক্রমে মাতৃভাষাকে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দুর্ভাগ্য আড়াইশো বছরের ইংরেজ শাসনের পর যে সরকার এল, সে-ও ইংরেজিতেই পঠনপাঠন বজায় রাখল। গ্রামগঞ্জে যাঁরা ইংরেজি শিক্ষার সুযোগ পাননি অথচ অন্য বিষয়ের ভাল শিক্ষক হতে পারতেন, তাঁরা সুযোগ পেতেন না। এ বার সময় বদলেছে।”