প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
জি২০ ভুক্ত রাষ্ট্রগুলির সংসদীয় স্পিকারদের সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা আন্তর্জাতিক এবং ঘরোয়া রাজনৈতিক আক্রমণগুলির জবাব দিলেন। এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সূত্রের মতে, আজ এক দিকে মোদী দাবি করলেন, ভারতে বিবিধতা, বিভিন্ন ধর্মবিশ্বাস, সংস্কৃতি এবং বাক্স্বাধীনতাকে সম্মান করে তাঁর সরকার। অন্য দিকে দেশে নির্বাচনী স্বচ্ছতা রয়েছে বলে দাবি করে চব্বিশের লোকসভা ভোটে বিভিন্ন দেশের অতিথিদের আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, ইভিএম ব্যবহারের ফলে দেশে নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। প্রসঙ্গত প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং তৃণমূল সম্প্রতি মোদী সরকারের ইভিএম কারচুপির সম্ভাবনা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে।
মোদী জমানায় ভারতে ক্রমবর্ধমান মানবাধিকার লঙ্ঘন, সংখ্যালঘু পীড়ন, অসহিষ্ণুতা নিয়ে মাঝে মাঝেই সরব হয় আমেরিকা তথা পশ্চিমের বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি মঞ্চ। আজ মোদী বলেন, “ভারতের বিবিধতা, বিশালতার আয়না ভারতের সংসদ। এখানে বিভিন্ন বিশ্বাসের (ধর্ম) মানুষ রয়েছেন। রয়েছে বিভিন্ন খাদ্যাভ্যাস, আচার আচরণ, ভাষা। ভারত পাঁচ হাজার বছর আগে থেকেই গণতন্ত্রের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে।”
মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বারেবারে নিশানা করা হয়েছে স্বাধীন সংবাদমাধ্যমকে। সম্প্রতি সরকারের সমালোচক একটি সংবাদ প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন আইনে মামলা হয়েছে। যা দেশে এই প্রথম। ওই ঘটনায় সাংবাদিকদের বাড়িতে যথেচ্ছ হানা দিয়ে ল্যাপটপ-মোবাইল বাজেয়াপ্ত করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে থাকা দিল্লি পুলিশ। আজ অবশ্য মোদী তাঁর বক্তৃতায় এ সব এড়িয়ে বরং ভারতের সংবাদমাধ্যমের বৈচিত্র তুলে ধরতে চেয়েছেন।
নির্বাচনের স্বচ্ছতা সম্পর্কে তাঁর বক্তৃতায় মোদী বলেছেন, “প্রযুক্তির ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে নির্বাচনী প্রক্রিয়া আধুনিক হয়েছে। গত ২৫ বছর ধরে ইভিএম মেশিন ব্যবহার করা হচ্ছে। তার ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া অনেক স্বচ্ছ হয়েছে, অনেক কার্যকরও হয়েছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ফলাফল চলে আসছে। আগামী বছরের নির্বাচনে ১০০ কোটি মানুষ ভোট দেবেন। আমি পি ২০-র অভ্যাগতদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, তাঁরা লোকসভা ভোট দেখতে আসুন।”
গত অগস্টে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন ইভিএম হ্যাক করতে পারে বিজেপি। কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহও ইভিএম ‘হ্যাক’ করা সম্ভব বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেন সম্প্রতি। কংগ্রেসের অন্য নেতা মণীশ তিওয়ারি জানান, ইভিএম জাল করা হয়েছে কি না, সেটা বিষয় নয়। বিষয়টা হল, ইভিএম জাল করা সম্ভব।