রাহুল গাঁধী।
নরেন্দ্র মোদীকে ‘অর্ডার’ করেন অম্বানী ও আদানি, আর তিনি সেই মোতাবেক কাজ করেন। আজ আবারও সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুললেন রাহুল গাঁধী।
কেন্দ্রের নয়া কৃষি আইনের বিরোধিতায় পঞ্জাব-হরিয়ানায় ‘খেতি বাঁচাও যাত্রা’-য় আজ রাহুল বলেন, ‘‘এটা তিন জনের দল— আদানি, মোদী, অম্বানী। নরেন্দ্র মোদীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে আপনি ছোট ব্যবসায়ী, চাষি, শ্রমিকদের শেষ করে আমাদের জন্য রাস্তা খুলুন।’’
লোকসভা নির্বাচনের আগে রাহুল রাফাল-চুক্তিতে অনিল অম্বানীর সংস্থাকে বরাত পাইয়ে দিয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রীর দিকে আঙুল তুলেছিলেন। তাতে রাজনৈতিক ফয়দা মেলেনি। মোদীর দিকে সরাসরি আঙুল তোলা সঠিক কৌশল ছিল কি না, তা নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু রাহুল নিজের অবস্থানে অনড়। পঞ্জাব-হরিয়ানায় ট্র্যাক্টর-যাত্রা শুরুর পরেই বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা তাঁকে ‘ভিআইপি চাষি’ বলে কটাক্ষ করেছিলেন। কারণ, রাহুলের ট্র্যাক্টরে বসার আসনে গদি লাগানো ছিল। আজ হরিয়ানায় ট্র্যাক্টর নিয়ে ঢোকার সময় এই কংগ্রেস নেতা নিজেই স্টিয়ারিং হাতে নিয়েছেন। তার আগে বিজেপির কটাক্ষ নিয়ে তাঁর পাল্টা, ‘‘এই প্রশ্ন কখনও করা হবে না, নরেন্দ্র মোদী কেন ৮ হাজার কোটি টাকার ভিভিআইপি বিমান কিনলেন। তাতে তো গদি ছাড়ুন, হয়তো ৫০টা পালঙ্ক রয়েছে। ওঁর বন্ধু ট্রাম্পের কাছে এমন বিমান রয়েছে, তাই ওঁরও চাই।’’
আরও পড়ুন:চিনা আগ্রাসন নিয়ে চার দেশের কথা
কৃষি ক্ষেত্রের সংস্কার করে মোদী সরকার বেসরকারি সংস্থাগুলিকে চুক্তি-চাষ করিয়ে চাষিদের থেকে সরাসরি ফসল কেনার রাস্তা খুলে দিয়েছে। যত ইচ্ছে ফসল মজুত করারও ছাড়পত্র দিয়েছে। রাহুলের অভিযোগ, অম্বানী-আদানির মতো সংস্থাকে ফয়দা পাইয়ে দিতেই মোদীর এই পদক্ষেপ। রাহুলের চাষআবাদ নিয়ে কতটা বোধ রয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বিজেপি নেতারা। আর রাহুল আজ বলেন, ‘‘ফেব্রুয়ারিতে বলেছিলাম, করোনা ভারতে, দেশের অর্থনীতিতে বিরাট ধাক্কা দেবে। আর এক জন বলেছিলেন, ২১ দিনে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয় হবে। কার বোধশক্তি কতখানি, বুঝে নিন। মোদী জানেনই না, করোনা কী, দেশ কী, তা কী ভাবে চলে।’’
আরও পড়ুন:উপনির্বাচন, বিহার ভোটে বিজেপির চিন্তা দলিত ক্ষোভ
সনিয়া-পুত্রের মতে, প্রধানমন্ত্রী শুধু নিজের ভাবমূর্তি নিয়ে চিন্তিত। সে কারণেই চিন ১২০০ বর্গকিলোমিটার জমি দখল করে নিলেও তিনি বলেন, কেউ জমি দখল করেননি। তাই তিনি অটল টানেলে একা একা গিয়ে হাত নাড়েন। হাথরসে নির্যাতিতার পরিবারকে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনই আক্রমণ করে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী একটা শব্দও বলেন না।
আজ পঞ্জাব থেকে হরিয়ানায় ঢোকার মুখে রাহুলের ট্র্যাক্টর-যাত্রা আটকে দেওয়া হয়। তিনি সেখানেই দলীয় নেতাদের নিয়ে ধর্নায় বসেন। পরে কয়েক জন কংগ্রেস নেতাকে হরিয়ানার বিজেপি-জেজেপি জোট সরকার রাজ্যে ঢোকার অনুমতি দেয়।
তবে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামলেও আখেরে রাহুল কংগ্রেসের ঝুলিতে ভোট টানতে পারবেন কি না, সে প্রশ্নও উঠছে। যদিও রাহুল আজ বলেন, ‘‘আমাকে স্বাধীন সংবাদমাধ্যম, নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান দিন। এই সরকার বেশি দিন টিকবে না। আমি ধৈর্যশীল। অপেক্ষা করব।’’