মোদীকে আক্রমণ করল কংগ্রেস। ফাইল চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ‘পাল্টি খেতে ওস্তাদ’ বলে আক্রমণ করল কংগ্রেস। তাদের বক্তব্য, ‘‘এত দিন জানা ছিল, মোদী ফেকু মাস্টার (মিথ্যা কথায় পটু), কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে তিনি ইউ টার্ন উস্তাদ (পাল্টি খেতে ওস্তাদ)ও।’’ কেন দেশের প্রধানমন্ত্রীকে এ কথা বলা হচ্ছে প্রমাণ-সহ তার কারণও ব্যাখ্যা করেছে দেশের রাজনীতির ঐতিহ্যবাহী এই দল।
রবিবার কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ মোদীকে ওই আক্রমণ করেছেন। তাঁর বক্তব্য, প্রধানমন্ত্রীর কথার কোনও স্থিরতা নেই। তিনি যখন-তখন নিজেরই বলা কথা থেকে সরে আসেন। এমনকি বিলকুল উল্টো কথাও বলেন। একটি সাম্প্রতিক ঘটনার উদাহরণ দিয়ে জয়রাম বলেছেন, সম্প্রতিই নিজের বলা এমনই একটি কথা গিলতে বাধ্য হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। শুধু তা-ই নয় আদালতে হলফনামা জমা দিয়ে তাঁকে বলতে হয়েছেন, এককালে যার সমালোচনা করেছিলেন, তা আসলে প্রশংসার্হ্য।
সুপ্রিম কোর্টে গত সপ্তাহেই ওই হলফনামা জমা দিতে হয়েছে কেন্দ্রের মোদী সরকারকে। সেই হলফনামায় কেন্দ্র বলেছে, দেশের খাদ্য সুরক্ষা বিল দারিদ্র দূরীকরণে সাহায্য করেছে। উল্লেখ্য এই বিল ২০১৩ সালে প্রণীত। অর্থাৎ কেন্দ্রে তখনও বিজেপি সরকার আসেনি। ক্ষমতায় তখনও ইউপিএ সরকার।
২০১৩ সালে ওই খাদ্য সুরক্ষা বিল প্রণয়ন নিয়ে তখন সরব হয়েছিলেন বিরোধীরা। মোদী তখন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী। তিনিও খাদ্য সুরক্ষা বিলের সমালোচনা করে বলেছিলেন, এই বিল দেশের মানুষের কোনও কাজে লাগবে না। বরং গরিব মানুষদের পেটের জ্বালা আরও বাড়াবে। এমনকি খাদ্য সুরক্ষা বিল হতদরিদ্রদের খাবার থালা থেকে খাবার ছিনিয়ে নেবে বলেও মন্তব্য করেছিলেন মোদী।
সম্প্রতি সেই মোদীরই নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টকে বলেছে, ২০১৩ সালে খাদ্য সুরক্ষা বিল কার্যকর হওয়ার পর থেকে দেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৩৩.৪ শতাংশ। শুধু তা-ই নয়, কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে খাদ্য সুরক্ষা বিলের উপকারিতা জানিয়ে আরও বলেছে যে দেশের একটি বড় অংশের নাগরিক অধিক রোজগেরে শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হয়েছে এই বিলেরই দৌলতে।
এই দু’রকম কথার জের টেনেই ৯ বছর আগে করা মোদীর মন্তব্যের একটি ভিডিয়ো সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করেছিলেন কেউ। কংগ্রেস নেতা জয়রাম রমেশ সেই ভিডিয়োটিকেই ট্যাগ করে লিখেছেন, ‘‘মোদী শুধু ফেকু মাস্টার নন, ইউ টার্ন ওস্তাদও।’’ পরে আলাদা একটি টুইটে জয়রাম লেখেন, ‘‘২০১৩ সালে এক মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের ইউপিএ সরকারের খাদ্য সুরক্ষা বিলের তীব্র সমালোচনা করেছিল। এখন সেই মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন। আর নিজের কথা সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা জমা দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে বাধ্য হয়েছেন। এই মানুষটিই ইউপিএ সরকারের মনরেগা প্রকল্পেরও সমালোচনা করেছিল। পরে অবশ্য সেই প্রকল্পকেই আত্মীকরণ করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে। তবে কৃতিত্ব দেওয়ার বেলায় তিনি বেশ কৃপণ।’’ অর্থাৎ জয়রাম বলতে চেয়েছেন, কংগ্রেস সরকারের প্রণীত আইনের প্রশংসা করলেও তাদের কৃতিত্ব দিতে চাননি মোদী।