প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
একটা রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন হয়ে গেল। অথচ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একটি বারের জন্যও সেখানে প্রচারে গেলেন না। তিনি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরে এই প্রথম এমন ঘটনা ঘটল!
মঙ্গলবার মিজ়োরামে বিধানসভা নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হল। উত্তর-পূর্বে এনডিএ-র শরিক মিজ়ো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (এমএনএফ)-ই এখন ক্ষমতায়। তা সত্ত্বেও প্রধানমন্ত্রী এক বারও প্রচারে যাননি। গত সাড়ে ন’বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী বার বার উত্তর-পূর্বকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু ২০২৪-এর লোকসভা ভোটের সেমিফাইনাল হিসেবে যে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে দেখা হচ্ছে, তার মধ্যে একটি মাত্র উত্তর-পূর্বের রাজ্যে এক বারও প্রচারে যাননি মোদী। আজ কিন্তু ছত্তীসগঢ়ে গিয়ে মেরুকরণের চেষ্টার কোনও কসুর করেননি প্রধানমন্ত্রী।
কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র জয়রাম রমেশ আগেই কটাক্ষ করেছিলেন, আসলে প্রধানমন্ত্রী মিজ়োরামে যাওয়ার সাহস পাননি। কারণ, গত ছ’মাস ধরে উত্তর-পূর্বের রাজ্য মণিপুর হিংসায় জ্বলছে। কিন্তু মোদী এক বারও মণিপুরমুখো হননি। সেখানের হিংসাও থামাতে পারেননি। এখন ভোটের প্রচারে মিজ়োরামে গেলে সমালোচনার মুখে পড়তে হবে বুঝেই প্রধানমন্ত্রী তা এড়িয়ে গিয়েছেন।
বিজেপি সূত্র বলছে, আসলে মিজ়োরামের মুখ্যমন্ত্রী তথা এমএনএফের প্রধান জ়োরামথাঙ্গা জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি মোদীর সঙ্গে এক মঞ্চে উঠবেন না। অন্য আঞ্চলিক দল জ়েডপিএম-ও বিজেপির সঙ্গে দূরত্ব রাখার কথা বলছে। অথচ এমএনএফ হল এনডিএ-র শরিক। মোদী মিজ়োরামে গেলে জ়োরামথাঙ্গা তাঁর সঙ্গে মঞ্চে না উঠলে প্রধানমন্ত্রীর অপমান হত। তা ছাড়া এমনিতেই বিজেপির মিজোরামে তেমন শক্তি নেই। মোদী প্রচারে গেলেও বিজেপির ফলের বিশেষ ফারাক হত না। কংগ্রেস নেতারা অবশ্য মনে করছেন, ভোটের পরে দুই আঞ্চলিক দলই বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে পারে। কিন্তু তাঁদের মনে রাখতে হবে, বিজেপির নীতির জন্য মিজ়োরামের দশাও মণিপুরের মতো হতে পারে।
মিজ়োরামের সঙ্গে আজ ছত্তীসগঢ়ে প্রথম দফায় ২০টি আসনে ভোটগ্রহণ ছিল। মূলত মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় ভোটগ্রহণ হয়। মোদী মিজ়োরামে না গেলেও ছত্তীসগঢ়ে যে অঞ্চলে আজ ভোটগ্রহণ ছিল না, সেখানে প্রচার করেছেন। তিনি সেখান থেকে কংগ্রেসকে নিশানা করেন। রাজ্যে ‘কাকা’ বলে পরিচিত মুখ্যমন্ত্রী ভূপেশ বঘেলের বিরুদ্ধে মহাদেব অ্যাপ কেলেঙ্কারিতে টাকা নেওয়ার অভিযোগ নিয়ে মোদী ‘ত্রিশ টাকে কাক্কা, খুলে আম সাট্টা’ বলে কটাক্ষ করেছেন।
কংগ্রেসের আমলে মাওবাদী সমস্যা বেড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মোদী। আদিবাসীদের মন জিততে দ্রৌপদী মুর্মুকে রাষ্ট্রপতি করার কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন তিনি। মেরুকরণ উস্কে দিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কংগ্রেসের সংখ্যালঘু তোষণের রাজনীতির ফলে উৎসব পালন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।