প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ছবি: পিটিআই।
লোকসভা নির্বাচনের আগে থামবে না প্রধানমন্ত্রীর ‘বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা’-র চাকা। আজ এই প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে ভিডিয়ো সংযোগে বৈঠক করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জানিয়েছেন, গোটা দেশে যে ভাবে ‘অভূতপূর্ব সমর্থন’ এই যাত্রা পেয়েছে, তাতে পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা অনুযায়ী ফেব্রুয়ারিতে একে বন্ধ করা হবে না। উন্নয়নের এই রথ চলতেই থাকবে আগামী দিনেও।
রাজনৈতিক শিবিরের মতে, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পকে সুকৌশলে কাজে লাগিয়ে লোকসভা ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছে বিজেপি। বিরোধী মঞ্চ ‘ইন্ডিয়া’-র যখন ঘুটি সাজানোই স্থির হয়নি, বেশির ভাগ রাজ্যে আসন বণ্টনের কোনও সূত্র তৈরি হয়নি, প্রধানমন্ত্রী মোদী দাক্ষিণাত্য-সহ গোটা দেশে কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন উন্নয়ন এবং হিন্দুত্বের জোড়া অস্ত্র নিয়ে। বিভিন্ন রাজ্যে গিয়ে সরকারি যোজনার প্রাপ্য বকেয়া দেওয়ার সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছেন নিজের উপস্থিতি। সেই সঙ্গে নিয়ম করে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের জনপ্রিয় মন্দিরগুলিতে গিয়ে পুজো দিতেও দেখা যায় তাঁকে। ভোট ঘোষণা পর্যন্ত এই ধারা চলবে বলে মনে করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রী আজ ভিডিয়ো মাধ্যমে সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের উদ্দেশে বলেন, “এই যাত্রা শুরু করি ১৫ নভেম্বর ভগবান বিরসা মুন্ডার আশীর্বাদ নিয়ে। কিন্তু দু’মাসের মধ্যে এই যাত্রা জন আন্দোলনে পরিণত হল। ১৫ কোটিরও বেশি মানুষ এতে অংশগ্রহণ করলেন। শেষ প্রান্তের মানুষের কাছেও সরকারের যোজনার সুফল পৌঁছে দেওয়ার উৎকৃষ্ট উদাহরণ এই যাত্রা।” তাঁর কথায়, “বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা যে ভালবাসা এবং সমর্থন পেয়েছে, তা দেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছি একে ফেব্রুয়ারির পরেও চালানো হবে।”
আজ সুবিধাভোগীদের সামনে কার্যত নির্বাচনী জনসভারই বক্তৃতাই করেছেন মোদী। তাঁর নিজের ‘গ্যারান্টি’র কথা বার বার বলে সরকারের বিভিন্ন যোজনাকে তুলে ধরেছেন। তাঁর সরকার আসার আগে রূপান্তরকামী মানুষদের চূড়ান্ত অবহেলার শিকার হতে হতো, জানিয়েছেন সে কথাও। মোদীর বক্তব্য, “স্বাধীনতার পর বহু দশক ধরে রূপান্তরকামীদের কথা কেউ ভাবেনি। আমাদের সরকারই প্রথম এই সম্প্রদায়ের মানুষের সমস্যার দিকগুলি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয় তাঁদের জীবনকে সহজ করাকে অগ্রাধিকার দেয়। ২০১৯-এ আইন তৈরি করা হয় রূপান্তকামীদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য।” মোদীর বক্তব্য, ২০১৪ সালের আগে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীগুলি শুধু কাগজ কলমেই ছিল। নেতাদের প্রচারের লোক জড়ো করার অস্ত্র ছিল। তাঁর সরকার এসে এই গোষ্ঠীগুলিকে ব্যাঙ্কের সঙ্গে যুক্ত করে। ঋণের পরিমাণ ১০ লক্ষ থেকে বাড়িয়ে ২০ লক্ষ করে দেয়।
কাল প্রধানমন্ত্রী যাচ্ছেন মহারাষ্ট্র, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের শিলান্যাসের সঙ্গে প্রচারও চালাবেন তাঁর সরকারের। এক মাসে তিন বার দাক্ষিণাত্য সফর করে মোদী বুঝিয়েছেন, দক্ষিণেও আসন বাড়াতে তিনি ব্যগ্র। চেন্নাইয়ে ‘খেলো ইন্ডিয়া ইয়ুথ গেমস’-এর উদ্বোধন করে সেখানকার দূরদর্শনকে ঢেলে সাজানোর জন্য ২৫০ কোটি টাকার প্রকল্প চালু করবেন। বেঙ্গালুরুতে ‘বোয়িং ইন্ডিয়া ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি সেন্টার’-এর উদ্বোধনও রয়েছে তাঁর কর্মসূচিতে।