গতবছর মোদির জন্মদিনে।ছবি: ফাইল চিত্র
ভোটের গুঁতোয় ফের নিজের রাজ্য গুজরাতে জন্মদিন পালন করতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় ফি-বছর তাঁর জন্মদিনটি শুরু হত প্রৌঢ়া মায়ের আশীর্বাদ নিয়ে, তাঁর হাতে লাড্ডু খেয়ে। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পরেও জন্মদিনে মায়ের আশীর্বাদ নিতে গিয়েছিলেন। আর সেই দিনই চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং-এর সঙ্গে ঝুলায় ঝুলে বৈঠক করেছিলেন গাঁধীনগরে। কিন্তু গত বছর জন্মদিনটি নির্বিঘ্নেই কাটিয়েছেন দিল্লিতে। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ ছিল, তাঁর জন্মদিন নিয়ে যেন কোনও আড়ম্বর না হয়। দলের নেতা-কর্মীদের কোনও ঢলও যেন তাঁর দুয়ারে দেখা না যায়।
তবে এ বারের বিষয়টি কিছুটা ভিন্ন। যে আনন্দীবেন পটেলের হাতে গুজরাতের ভার ছেড়ে এসেছিলেন, তাঁর জমানায় বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ক্ষয় ধরতে শুরু হয়েছে। সামনের বছরই বিধানসভা ভোট। আর নিজের রাজ্য গুজরাতে বিজেপির গড় ধরে রাখা তাঁর কাছে বড়সড় চ্যালেঞ্জ। মুখ্যমন্ত্রী বদল করেও তাই নিজেকেই হাল ধরতে হচ্ছে। বিজেপি সূত্র তাই বলছে, এ বারের জন্মদিনে ফের গুজরাতমুখী হচ্ছেন মোদী। ১৭ সেপ্টেম্বর মোদীর ৬৬তম জন্মদিনে গুজরাতের নবসারির কাছে আদিবাসী এলাকায় একটি বড় সভা করবেন। হতে পারে তাঁর আগে ফের মায়ের কাছে আশীর্বাদ নিতেও যাবেন।
ক’দিন আগেই মোদী গুজরাত সফরে গিয়েছিলেন। তখনই বলেছিলেন, এ বার থেকে ঘন ঘন গুজরাত সফর করবেন। জন্মদিনে যাওয়ার পর নভেম্বরের গোড়ায় ফের যেতে পারেন বিশ্ব কবাডি টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করতে। আর জানুয়ারিতে ঢাকঢোল পিটিয়ে যে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ হবে, তখনও ফের যাবেন। অগস্টের শেষে যখন জামনগরে গিয়েছিলেন, সেই সময় মোদী তাঁর বক্তৃতা আগাগোড়া গুজরাতি ভাষায় দিয়েছিলেন। পরের সফরগুলিতেও গুজরাতি ভাষায় হবে বলে বিজেপি সূত্রের দাবি। কারণ একটাই, ভোটের আগে গুজরাতি আবেগকে তিনি ফিরিয়ে আনতে চাইছেন। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময় যে মোদীকে ঘিরে গুজরাতে উন্মাদনা তৈরি হয়েছিল, সেটিকে ফের চাঙ্গা করাই তাঁর লক্ষ্য।
লোকসভা নির্বাচনের আগে গুজরাতে কোনও সভা থাকলেও মোদী বলতেন হিন্দিতে। কারণ, সেই সময় তাঁর লক্ষ্য ছিল গোটা দেশ। এ বারে তাঁর ঘন ঘন সফর ও গুজরাতি বলার পিছনে যে সে রাজ্যের ভোটই লক্ষ্য, এটি নিয়ে কোনও দ্বিমত নেই দলের মধ্যে। বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে ক্ষয় ধরতেই কংগ্রেস, এমনকী অরবিন্দ কেজরীবালের দলও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। দলের এক নেতার কথায়, ‘‘এর আগে দিল্লি, বিহারে দলের ভরাডুবি হয়েছে। তার পর থেকেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, মোদী-জাদুতে ভাটা পড়েছে। গুজরাতে প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভাপতি অমিত শাহ কোনও ঝুঁকিই নিতে চাইছেন না। আগামিকালও সুরাতে অমিত শাহ যাচ্ছেন দলের নতুন দফতরের উদ্ঘাটন করতে।’’