কী নিয়ে কথা? পাক চরবৃত্তি ও সন্ত্রাসে মদতের প্রশ্নে তিক্ততার আবহেও একান্তে আলোচনা দুই প্রধানমন্ত্রীর। সোমবার প্যারিসে বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলনে নরেন্দ্র মোদী এবং নওয়াজ শরিফ। ছবি: পিটিআই।
উষ্ণ করমর্দন। তার পরে সোফায় পাশাপাশি বসে নিচু স্বরে মিনিট তিনেকের একান্ত আলাপচারিতা। মূলত বক্তা নরেন্দ্র মোদী। নিবিষ্ট শ্রোতা নওয়াজ শরিফ।
প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক সম্মেলনে হঠাৎই এমন ছবিটি তৈরি হল আজ। দু’দেশের কূটনৈতিক প্রতিনিধিদলের কোনও সদস্য ছাড়াই অতিসংক্ষিপ্ত বৈঠকটি সারলেন ভারত এবং পাকিস্তানের দুই প্রধানমন্ত্রী। এ বছর জুলাইয়ে রাশিয়ার উফাতে একান্তে বৈঠক করেছিলেন দু’জন। যৌথ বিবৃতি দিয়ে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পথনির্দেশেরও চেষ্টাও হয়েছিল তখন। দু’দেশের সম্পর্কে নতুন মোড় আসবে কিনা, তা নিয়ে জল্পনাও হয়েছিল বিস্তর। কিন্তু পরে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নতাবাদী হুরিয়ত নেতাদের দিল্লির হাইকমিশনে আমন্ত্রণ জানিয়ে দু’দেশের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ের বৈঠক ভেস্তে দেয় পাকিস্তান। তাই সেপ্টেম্বরে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভার বৈঠকে যোগ দিতে গিয়ে নিউ ইয়র্কে এক হোটেলে থেকেও বাক্যালাপ পর্যন্ত হয়নি মোদী ও শরিফের। শুধু সেই সম্মেলন শুরুর আগে মোদীর দিকে তাকিয়ে হাত নাড়িয়ে ছিলেন শরিফ। হেসে পাল্টা সৌজন্য দেখিয়েছিলেন মোদীও। তার পরে প্যারিসে আজ ধরা পড়ল নতুন ছবি। কিন্তু কূটনৈতিক শিবিরের বক্তব্য, দু’দেশের মধ্যে শীতল হয়ে যাওয়া জলবায়ুতে বড় কোনও পরিবর্তন আসেনি আজও।
এই মুহূর্তে প্যারিসে হাজির রয়েছেন বারাক ওবামা, ডেভিড ক্যামেরন-সহ পশ্চিম বিশ্বের তাবড় নেতারা। দক্ষিণ এশিয়ার পরমাণু শক্তিধর বিবদমান দু’টি দেশ ভারত ও পাকিস্তান আলোচনায় বসুক—এ জন্য হোয়াইট হাউসের চাপও রয়েছে যথেষ্ট। অনেকেই মনে করছেন, আজকের আলোচনার পিছনে এই চাপও পরোক্ষে কাজ করেছে। এদিন ওবামার সঙ্গেও আলাদা ভাবে বৈঠক করেন মোদী।
ভারতের সঙ্গে সামগ্রিক আলোচনা শুরু করে দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্ক সচল করতে আগ্রহী নওয়াজ শরিফ। কিন্তু ভারত বিরোধী সন্ত্রাস-কারখানা বন্ধ করার কোনও ক্ষমতা যে তাঁর নেই, তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। নয়াদিল্লিকে যা হতাশ করেছে। তবে দু’দিন আগে শরিফ তাঁর দেশের একটি চ্যানেলকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন, ভারতের সঙ্গে শর্ত ছাড়াই আলোচনা শুরু করতে চান তিনি। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনকেও বলেছিলেন একই কথা। বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, নওয়াজ চাইলেও এখনই অগ্রসর হওয়ার চিন্তাভাবনা করছে না সাউথ ব্লক।