বাহরাইচের সভায় মোবাইল-বাণী। ছবি: পিটিআই।
কুয়াশায় নামতে পারেনি চপার। অগত্যা মোবাইলেই দিতে হল বক্তৃতা। তাতে মোবাইল ব্যাঙ্কিংয়ের গুণগান করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সংসদ থামিয়ে রাখায় এক হাত নিলেন বিরোধীদেরও।
উত্তরপ্রদেশে মোদীর পঞ্চম পরিবর্তন সভার জন্য ভারত-নেপাল সীমান্তের বাহরাইচকে বেছে নিয়েছিল বিজেপি। জাল টাকার আদানপ্রদান আর জঙ্গিদের টাকা জোগানোর জন্য পরিচিত এই শহরে প্রধানমন্ত্রী যে নোট বাতিল নিয়ে সরব হবেন তা প্রত্যাশিতই ছিল। কিন্তু বিধি বাম। লখনউ থেকে চপারে বাহরাইচে পৌঁছেও কুয়াশার জন্য নামতে পারেননি মোদী। বিজেপির তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়, সময় পেলে আবার আসবেন প্রধানমন্ত্রী। এ যাত্রা তিনি মোবাইলের মাধ্যমে বক্তৃতা দেবেন।
গত কয়েক দিন ধরে সুযোগ পেলেই মোবাইল ব্যাঙ্কিং, ই-ওয়ালেটের গুণগান করছেন মোদী-সহ সরকারের শীর্ষ নেতারা। আজ তিনি বলেন, ‘‘আপনার মোবাইলকেই ব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করতে শিখুন। তাতে অনেক সুবিধে। দেখুন না আজ কেমন মোবাইলে আপনাদের সঙ্গে কথা বললাম।’’
প্রধানমন্ত্রীর দাবি, ‘‘নোট বাতিল নিয়ে সরকার আলোচনায় রাজি। কিন্তু যে বিরোধীদের মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন তাঁরাই আমাদের কথা বলতে দিচ্ছেন না। প্রায় ২০ দিন সংসদ অচল করে রাখা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশের মানুষ নিশ্চয়ই সব দেখছেন।’’ নোট বাতিলের ফলে গরিব মানুষের হেনস্থা নিয়ে গত কয়েক দিনে সরকারের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়েছে বিরোধী দলগুলি। আজ তার জবাবে মোদী বলেন, ‘‘গরিবের হাতে আরও ক্ষমতা তুলে দিতে আমরা বদ্ধপরিকর। দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যেতে মানুষ কষ্টভোগ করছেন।’’ তাঁর কথায়, ‘‘মানুষ দেখতেই পাচ্ছেন সরকার কালো টাকার কারবারিদের নিশানা করছে। যে সব ব্যাঙ্ককর্মী বেআইনি কাজ করছেন তাঁদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। যাঁরা কালো টাকা জমাচ্ছেন দু’তিন মাসের মধ্যে তাঁদের বিচার হবে।’’
উত্তরপ্রদেশে স্থানীয় প্রতিদ্বন্দ্বী সমাজবাদী ও বহুজন সমাজ পার্টিকে আজ কার্যত একই রঙে রাঙিয়েছেন মোদী। তাঁর কথায়, ‘‘এই দুই দল খুব কম সময়েই এক সুরে কথা বলে। এখন দেখছি সেটাই হচ্ছে। কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এদের এত সমস্যা হচ্ছে কেন কে জানে?’’ রাজনীতিকদের মতে, মায়াবতী, মুলায়মের বিরুদ্ধে হিসাব-বহির্ভূত সম্পত্তির একাধিক মামলা আছে। তাই উত্তরপ্রদেশের ময়দানে তাঁদের বিরুদ্ধে সেই অস্ত্রই ব্যবহার করতে চেয়েছেন মোদী।
কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই জবাব দিয়েছে কংগ্রেস ও মায়াবতীর দল। কংগ্রেসের প্রশ্ন, লোকসভায় বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকা সত্ত্বেও মোদী কথা বলতে ভয় পাচ্ছেন কেন? আর বহুজন সমাজ পার্টির এক নেতার বক্তব্য, ‘‘বিরোধীদের দিকে আঙুল তুলে প্রধানমন্ত্রী সরকারের ঘাড় থেকে দায় ঝেড়ে ফেলার চেষ্টা করছেন।’’