অসমের মাটি বাংলাদেশের হাতে হস্তান্তর করার সিদ্ধান্তে মর্মাহত জমির মালিক থেকে আরম্ভ করে রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ। জমি হস্তান্তরে অসমের সব থেকে বেশি লোকসান হচ্ছে এই করিমগঞ্জ জেলায়। আর সেই করিমগঞ্জেই বাংলাদেশের সমর্থনে গলা ফাটালেন হাজার হাজার মানুষ। উত্সাহের মূলে ছিল একটি প্রীতি ফুটবল ম্যাচ।
করিমগঞ্জের ইতিহাসে বোধহয় এত লোক সমাগম হয়নি জেলা ক্রীড়া সংস্থার মাঠে। গ্যালারিতে তিল ধারনের জায়গা ছিল না। মাঠে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তা সামাল দিতে মাঠের পাশে রাখা ছিল অ্যাম্বুল্যান্স। সেই অ্যাম্বুল্যান্সের উপরেও কিনা উপচে পড়ল দর্শক। মাঠের চারপাশে থাকা বড় বড় গাছ, উঁচু বাড়ির ছাদ—সর্বত্রই শুধু মানুষের মাথা।
মণিপুর একাদশের সঙ্গে বাংলাদেশের মৌলভিবাজার একাদশের প্রীতি ফুটবল ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় ক্রীড়া সংস্থার মাঠে। উপস্থিত দর্শকদের নব্বই শতাশংই ছিলেন বাংলাদেশের সমর্থক। খেলাধুলোয় জাত-ধর্ম-দেশ কোনও কিছুই যে প্রাধান্য পায় না তাই প্রমাণ হল করিমগঞ্জে। তবে ফুটবলেও অনেকে ভূত দেখছেন। ভারতের এক অঙ্গ রাজ্যের ফুটবল দলকে ছেড়ে দর্শকরা যে ভাবে ভিন দেশি দলকে সমর্থন করেছে তাতে শঙ্কিত খেলার আয়োজক থেকে আরম্ভ করে জেলার গোয়েন্দারাও। উপস্থিত দর্শকদের সমর্থনে হতবাক অনেকেই। প্রীতি ফুটবল ম্যাচের কুড়ি টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। গাড়ি ভর্তি করে গ্রাম থেকে অনেকে জেলা সদরে খেলা দেখতে এসেছেন। খেলার ফলাফল মৌলভিবাজার-২, মণিপুর-০। মণিপুর একাদশের খেলোয়াড়দের ধারণা ছিল, দেশের কথা বিবেচনা করেই দর্শকদের একটি বড় অংশ তাদের সমর্থন করবে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল, মৌলভিবাজারের জয়ের পর মাঠের প্রায় সব ব্যারিকেড ভেঙে দর্শকরা ওপারের খেলোয়াড়দের সঙ্গে করমর্দন করতে দৌড়চ্ছে।