শাহপুর গ্রাম শিবপুর হোক, দাবি বিহারে

কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের বেশ কিছু শহর, গ্রাম, রাস্তা, স্মারকের নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ বেশ কয়েকটি হিন্দুবাদী সংগঠন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা শেষ আপডেট: ০৫ অগস্ট ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

মুসলিম অধ্যুষিত ‘শাহপুর’ গ্রামের নাম পাল্টে ‘শিবপুর’ করার দাবি তুলল গ্রামবাসীদের একাংশ।

Advertisement

বিহারের বৈশালী জেলার লালগঞ্জ থানার শাহপুরে গত কাল হনুমান যজ্ঞ করে ওই গ্রামবাসীরা সংশ্লিষ্ট সার্কেল অফিসারের কাছে গিয়ে একটি দাবিপত্রও জমা দিয়েছেন। গোটা ঘটনার পিছনে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মদত রয়েছে বলে অভিযোগ আরজেডির। যদিও বিশ্ব হিন্দু পরিষদের বিহারের নেতারা তা স্বীকার করেননি। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘স্থানীয় গ্রামবাসীরাই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’’ সার্কেল অফিসার মুন্না প্রসাদ বলেন, ‘‘আমি ওঁদের জানিয়ে দিয়েছি, নাম পরিবর্তন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নেবেন। আমি শুধু দাবিপত্র জমা নিয়েছি।’’ শাহপুরের বাসিন্দা লালমুনি কুমারের দাবি, ‘‘অনেক আগে গ্রামের নাম শিবপুর ছিল। সেই নাম ফেরানোর দাবি আমরা করেছি।’’ তাঁর দাবি, যজ্ঞ হয়েছে গ্রামের শান্তির জন্যই।

কেন্দ্রে মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই দেশের বেশ কিছু শহর, গ্রাম, রাস্তা, স্মারকের নাম পরিবর্তনের দাবি তুলেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ-সহ বেশ কয়েকটি হিন্দুবাদী সংগঠন। নয়াদিল্লির ঔরঙ্গজেব রোডের নাম পাল্টে এপিজে কালাম রোড করার পর থেকেই সেই দাবি আরও জোরালো হয়েছে। মুঘলসরাই রেল স্টেশনের নাম পাল্টে ‘পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় স্টেশন’ করার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে রেল মন্ত্রক। গুজরাতের আমদাবাদের নাম পাল্টে ‘কর্ণাবতী’ করার দাবি তুলেছেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। বিহারের বখতিয়ারপুরের নামও পাল্টে দেওয়ার দাবি করছে হিন্দু সংগঠনগুলি।

Advertisement

সেই পথে হেঁটেই শাহপুরকে ‘শিবপুর’ করার দাবি উঠেছে। তবে দাবিপত্রে কোনও সংগঠনের নাম নেই। সম্প্রতি আরজেডি-কংগ্রেসের মহাজোট ছেড়ে এসে বিজেপির সঙ্গে জোট করে সরকার গড়েছেন নীতীশ কুমার। আর তারপরেই বিহারে হিন্দু সংগঠনগুলি সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ। গত কালই ভোজপুর জেলার আর এক ‘শাহপুরে’ গো-মাংস ভর্তি একটি ট্রাক আটক করে চালক-খালাসিকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। পরে ‘দ্য বিহার প্রিজার্ভেশন অ্যান্ড ইমপ্রুভমেন্ট অব অ্যানিম্যালস অ্যাক্ট’ অনুযায়ী পুলিশ চালক-খালাসি সহ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে।

পর পর এই ধরনের ঘটনায় বিহারে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। আরজেডি মুখপাত্র ভাই বীরেন্দ্র বলেন, ‘‘এমনটা তো হওয়ারই ছিল। এই তো সবে শুরু। নীতীশ কুমার বিজেপির সঙ্গে যাওয়ায় রাজ্যের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার পথেই এগোচ্ছে।’’ বিজেপি নেতা দেবেশ ঠাকুর অবশ্য বলেন, ‘‘গ্রামের নাম পরিবর্তনের ক্ষমতা রাজ্য প্রশাসনের হাতে। এতে রাজনৈতিক দলের কিছু করার নেই।’’ দলের কর্মীরা এর সঙ্গে যুক্ত কিনা তা নিয়ে কিছু বলতে চাননি তিনি। জেডিইউ মুখপাত্র নীরজ কুমার বলেন, ‘‘এ সব ঘটনার কোনও মূল্যই নেই। নাম কামানোর জন্যই কিছু লোক এ সব করে থাকে। কোনও সংগঠনের দাবিতে গ্রামের নাম পাল্টানো হয় না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement