জোশীমঠের একটি বাড়িতে ফাটল। ফাইল চিত্র।
জোশীমঠে যে ভয়ঙ্কর কিছু হতে চলেছে, তার ইঙ্গিত আগেই পেয়েছিলেন সেখানকার বাসিন্দারা। তাঁরা তাঁদের উদ্বেগের কথা জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিংহ ধামি এবং স্থানীয় জেলাশাসককেও। এক বার নয়, তিন বার। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে চিঠির উত্তর দেওয়া দূরস্থান, প্রাপ্তিস্বীকারও করা হয়নি। আর জেলাশাসক চিঠি পেয়েও বুঝতে পারেননি কী উত্তর দেবেন। ‘এনডিটিভি’-তে সম্প্রতি এই খবর প্রকাশিত হয়েছে।
জোশীমঠ থেকে ১ কিলোমিটার দূরেই এনটিপিসির জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ চলছে। নির্মীয়মাণ সেই প্রকল্পে সু়ড়ঙ্গ খননের জন্য বিস্ফোরণ ঘটানো হচ্ছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতিটি বিস্ফোরণের পরেই কেঁপে উঠত জোশীমঠ। গত ডিসেম্বরেই শহরের বেশ কিছু বাড়িতে সরু ফাটল দেখা যায়। তাই তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীকে বারংবার চিঠি লিখে প্রকল্পের কাজ বন্ধ করার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডিসেম্বর মাসে দেখতে পাওয়া ফাটলগুলিই ক্রমশ চওড়া হচ্ছে এখন।
জোশীমঠের একটি হোটেলের মালিক ঠাকুর সিংহ রানা জানান, ৭ কোটি টাকা দিয়ে হোটেল বানিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু হোটেলের নানা প্রান্তে ফাটল দেখা দিয়েছে। আর এক বাসিন্দার কথায়, “সরকার যদি আমাদের কথা শুনে আগে থেকে কোনও পদক্ষেপ করত, তবে হয়তো এত বড় বিপর্যয় হত না।” চামোলির জেলাশাসক হিমাংশু খুরানা জানিয়েছেন, তিনি বাসিন্দাদের চিঠি পেলেও, তাঁর করণীয় কী, তিনি জানতেন না। একই সঙ্গে তাঁর দাবি, এনটিপিসি যাবতীয় সুরক্ষাবিধি মেনেই কাজ করছে। বাসিন্দারা অবশ্য জানিয়েছেন, তাঁদের চিঠি পেয়ে জেলাশাসক এক বার এলাকা পরিদর্শনে এসেছিলেন। কিন্তু এর বেশি কিছু হয়নি।
জোশীমঠের পরিস্থিতি এখন এতটাই ভয়াবহ যে, সেখানকার প্রায় ৬০০টি পরিবার প্রবল শীতেও বাড়ি থেকে বেরিয়ে খোলা আকাশের নীচে রাত কাটাচ্ছেন। এর মধ্যে অল্প কয়েকটি পরিবারকেই পুনর্বাসন দেওয়া গিয়েছে। বাকিদেরও দ্রুত পুনবার্সিত করছে সরকার। যে হারে শহরের বাড়ি, জমিতে ফাটল দেখা যাচ্ছে, তাতে আগামী দিনে হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই ছোট্ট জনপদটি থাকবে কি না, তা নিয়েই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে।