প্রতীকী ছবি।
এই তুমুল ঠান্ডায় বিহারের বহু মানুষের মুখে একটাই কথা, ‘দেখা যায় না, পাওয়া যায়।’ গোটা রাজ্য জুড়েই তার চাহিদা এখন তুঙ্গে। শুখা বিহার নামেই! একটু বেশি খরচ করলেই বাড়িতে পৌঁছে যায়। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় বিহারবাসী সুরাপ্রেমীদের কাছে কার্যত ‘দেবদূত’ এই ‘ডেলিভারি বয়’রা। তাদের ‘দয়ায়’ সন্ধ্যায় গলা ভিজিয়ে নিজেদের গরম রাখছেন সুরাপায়ীরা।
পুলিশ রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে কয়েক হাজার গ্যালন মদ আটক করেছে। তাতেও মদ মাফিয়াদের রোখা যাচ্ছে না। বাড়ির পরিচারক থেকে স্কুলছাত্র, সকলকেই হোম ডেলিভারির কাজে লাগাচ্ছে এই মাফিয়ারা। গত ১৫ বছরের মধ্যে রাজ্যে সব চেয়ে বেশি ঠান্ডায় তুঙ্গে উঠেছে তাদের ব্যবসা।
শুধু বিদেশি মদই নয়, দেশি মদের চাহিদার মেটাতেও সক্রিয় মাফিয়ারা। পটনা ও সারণ জেলার মধ্যে গঙ্গার বুকে গজিয়ে ওঠা দিয়ারাই (চর) দেশি মদ তৈরির জন্য ব্যবহার হচ্ছে। দিন কয়েক আগে সারণের পুলিশ সুপার, ক্যাপ্টেন হরকিশোর রায়ের নেতৃত্বে ভগবানবাজার থানার ওসি সুরেন্দ্র কুমার, নগর থানার ওসি রাজীব নয়ন এবং সিভিলগঞ্জ থানার ওসি সন্তোষ কুমার বিশাল বাহিনী নিয়ে দিয়ারায় অভিযান চালান। কম করে ৩৫টি দেশি মদের ভাটি ভেঙেছেন তাঁরা।
পুলিশের দাবি, এই সংখ্যা মোট ভাটির মাত্র ১০%। অত্যাধুনিক অস্ত্র ও বাহিনী নিয়ে নদীর বুকে ভাটিগুলি গড়ে উঠেছে এক শ্রেণির রাজনৈতিক নেতা ও মাফিয়াদের যোগসাজশে। শীতের ভোরে গঙ্গার বুক চিরে ছোট নৌকা দেশি মদের পাউচ পৌঁছে দিচ্ছে শহরের ডেলিভারি বয়দের কাছে।
এখানেই শেষ নয়, উত্তরপ্রদেশ লাগোয়া জেলা সারণ। সে রাজ্য থেকে আসা ট্রেন থেকে এবং রাজ্যসীমায় চেকপোস্টগুলি থেকে গত এক মাসে প্রতিদিনই মদ উদ্ধার করা হয়েছে। কখনও চাষের জমি থেকে বা কারও বাড়ি থেকে মদ উদ্ধার হচ্ছে। সেই মদ জমা হচ্ছে থানার মালখানায়। সারণ, গোপালগঞ্জ থেকে পূর্ণিয়া, কাটিহার-সর্বত্র একই ছবি। রাজ্যের জেলগুলিতে কয়েদি উপচে পড়ছে। বেশির ভাগই মদ পাচারের অভিযোগে ধৃত বিচারাধীন বন্দি।