সংসদদের বাদল অধিবেশনের দিন ঘোষণা করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। — ফাইল চিত্র।
অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশের জল্পনার মধ্যেই শনিবার সংসদদের বাদল অধিবেশনের দিন ঘোষণা করল নরেন্দ্র মোদী সরকার। সংসদীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী জানিয়েছেন, আগামী ২০ জুলাই থেকে শুরু হবে বাদল অধিবেশন। চলবে ১১ অগস্ট পর্যন্ত। ২৩ দিনের অধিবেশন পর্বে ১৭ দিন কাজ হবে বলে জানিয়েছেন সংসদীয় মন্ত্রী। সংসদীয় মন্ত্রক সূত্রের খবর, সংসদের পুরনো ভবনে শুরু হবে বাদল অধিবেশন। সমাপ্তি হবে সংসদের নতুন ভবনে, গত ২৮ মে নতুন ভবনের উদ্বোধন করেছিলেন মোদী। সূত্রের খবর, বাদল অধিবেশনে একাধিক বিল পেশ করতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তার মধ্যে অন্যতম অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল। দিল্লির বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র শুক্রবার টুইটারে লেখেন, ‘‘৫ অগস্ট কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার হয়েছিল। ৫ অগস্ট রামমন্দিরের শিলান্যাস হয়েছিল। আর আগামী ৫ অগস্ট অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আসতে চলেছে।’’
শুধু বিজেপি বা তার সহযোগী দলগুলি নয়, বিরোধী শিবিরের শিবসেনা (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে) এবং আম আদমি পার্টিও ইতিমধ্যেই অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল সমর্থনের বার্তা দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা এবং রাজ্যসভায় বিল পাশ করতে সরকার পক্ষকে তেমন বেগ পেতে হবে না বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন। যদিও কংগ্রেস, তৃণমূল, বাম-সহ বিরোধীরা, এমনকি বিজেপির সহযোগী মেঘালয়ের শাসক দল এনপিপি এবং বিজেপির একদা সহযোগী শিরোমণি অকালি দল অভিন্ন দেওয়ানি বিধির বিরোধিতা করেছে।
গত ১৪ জুন কেন্দ্র-নিযুক্ত ২২তম আইন কমিশনের তরফে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি চালুর বিষয়ে বিভিন্ন ধর্মীয় সংগঠন এবং আমজনতার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছে। গত মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত এ বিষয়ে সাড়ে আট লক্ষ ব্যক্তি এবং সংগঠনের প্রতিক্রিয়া জমা পড়েছে বলে আইন কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে। আইন কমিশন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আইন প্রসঙ্গে জনগণের মতামত নেওয়া শুরু করতেই জল্পনা শুরু হয়, লোকসভার আগে হিন্দু ভোটের মেরুকরণের লক্ষ্যে কেন্দ্র ওই আইন আনতে চলেছে। সেই সম্ভাবনা উস্কে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় কমিটির তরফে এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় আইন কমিশন এবং আইন মন্ত্রকের মত জানতে চাওয়া হয়েছে। আগামী ৩ জুলাই প্রতিনিধি পাঠিয়ে এ বিষয়ে মত জানানোর জন্য নোটিস পাঠানো হয়েছে আইন কমিশন এবং আইন মন্ত্রককে।
এরই মধ্যে গত মঙ্গলবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে দলীয় কর্মসূচির মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী মোদী বিষয়টি নিয়ে সরব হন। তিনি বলেন, ‘‘কোনও পরিবারে যদি প্রত্যেক সদস্যের জন্য আলাদা আলাদা আইন থাকে, তা হলে কি সেই সংসার চালানো যায়?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘দেশের এক একটি সম্প্রদায়ের জন্য যদি এক এক রকম আইন থাকে, তা হলে দেশ এগোতে পারে না। এই পরিস্থিতিতে বাদল অধিবেশনে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ হলে সংসদে নতুন করে অশান্তি তৈরি হতে পারে বলে আশঙ্কা।