অরুণ জেটলি (বাঁ দিকে) ও অরুণ শর্মা।-ফাইল চিত্র।
চতুর্দশ রাষ্ট্রপতির ভাষণের বিষয়বস্তু নিয়ে বুধবার তুলকালাম হল রাজ্যসভায়।
লড়াইটা কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা বনাম বিজেপি সাংসদ, কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মধ্যে শুরু হলেও তা পরে শাসক জোট ও বিরোধীদের মধ্যে তুমুল বাদানুবাদ পর্যন্ত গড়ায়। আনন্দের বক্তব্যটি সভার রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়ার আর্জি জানান অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি।
এ দিন রাজ্যসভার ‘জিরো আওয়ার’-এ তাঁর ভাষণের শুরুতেই কংগ্রেস সাংসদ আনন্দ শর্মা মঙ্গলবার সংসদে দেওয়া রাষ্ট্রপতির উদ্বোধনী ভাষণের একটি অংশ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
পরোক্ষে প্রশ্ন তোলেন, দেশের চতুর্দশ রাষ্ট্রপতির উদ্বোধনী ভাষণে মহাত্মা গাঁধী ও দীন দয়াল উপাধ্যায়ের নামোল্লেখ থাকলেও কেন আধুনিক ভারতের রূপকার জওহরলাল নেহরুর কথা এক বারও বলা হল না? আনন্দ বলেন, ‘‘সব দেশই তাঁদের রূপকারদের সম্মান জানায়। সেটা ভারতেরও সংস্কৃতি। মহাত্মা গাঁধীর মতো জওহরলাল নেহরুরও একটা মর্যাদার আসন রয়েছে এই দেশে। নেহরু দেশকে স্বাধীন করতে জেলও খেটেছিলেন।’’
মঙ্গলবার এক বিজেপি সাংসদ দীন দয়াল উপাধ্যায়ের সঙ্গে মহাত্মা গাঁধীর তুলনা করায় কিছুটা উষ্মাও প্রকাশ করেন আনন্দ শর্মা। এর পরেই শাসক জোটের সাংসদরা চিৎকার করে আনন্দের ভাষণে বাধা দিতে শুরু করেন। ওই সময় রীতিমতো উত্তেজিত হয়ে পড়তে দেখা যায় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে।
আনন্দের ভাষণে দৃশ্যতই অসন্তুষ্ট জেটলিকে রাজ্যসভার চেয়ারম্যানের দিকে তাকিয়ে বলতে শোনা যায়, ‘‘আপনি ভাল করেই জানেন, টেলিভিশন কভারেজের জন্য সভার ‘জিরো আওয়ার’কে ব্যবহার করতে দেওয়া যায় না। কিন্তু সেটাই এখানে চলছে। দেশের সাংবিধানিক প্রধান কী করবেন, কী বলবেন, তা নিয়ে সভায় আলোচনা হওয়াটা ঠিক নয়। আনন্দ শর্মার ভাষণের ওই অংশটুকু সভার রেকর্ড থেকে বাদ দেওয়া হোক।’’
আরও পড়ুন- কোত্থাও যাওয়া নয়, অবসরে লেখার কাজ শুরু করছেন প্রণব
জেটলির ওই মন্তব্যের পর কংগ্রেস সহ বিরোধী জোটের সাংসদরা হইচই শুরু করেন। কেন জওহরলাল নেহরুর নাম বাদ পড়ল সংসদে দেওয়া চতুর্দশ রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের উদ্বোধনী ভাষণে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কংগ্রেস সাংসদরা। তাঁদের থামাতে নিজেদের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে বিজেপি সাংসদরাও শুরু করে দেন তুমুল চেঁচামেচি। বিজেপি সাংসদদের বক্তব্য ছিল, রাষ্ট্রপতির ভাষণ নিয়ে সভায় এ ভাবে প্রশ্ন তোলা যায় না। এর পর দু’পক্ষের মধ্যে শুরু হয়ে যায় তুমুল বাদানুবাদ।
তারই মধ্যে জেটলিকে বিরোধীদের উদ্দেশে বলতে শোনা যায়, ‘‘ভাববেন না, আমরা কালকের শিশু। বফর্স কেলেঙ্কারি নিয়ে সভায় যাতে আজ আলোচনা না হতে পারে, সে জন্যই কংগ্রেস এ সব বলছে।’’
তাতে আরও চটে যায় কংগ্রেস শিবির। আনন্দ শর্মা বলেন, ‘‘টেলিভিশন কভারেজের জন্যই জেটলি এই সব বলছেন।’’ আরেক কংগ্রেস সাংসদ কপিল সিবাল আঙুল তোলেন সরকার পক্ষের ‘ঔদ্ধত্য’-এর দিকে। তাঁর মতে, ঔদ্ধত্যের জন্যই সরকার পক্ষ ঠিককে ঠিক, ভুলকে ভুল বলে মানতে চান না।