জিতনরামের পর পাপ্পু যাদব। ভোটের আগে ঘর গোছাতে তত্পর বিজেপি এ বার পাপ্পুকেও এনডিএ-তে সামিল করতে চলেছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা ঘোর নীতীশ-বিরোধী জিতনরাম মাঁঝিকে জোটে নেওয়ার পক্ষে যুক্তি ছিল, দলিত ভোটকে দলে টানা। আর পাপ্পুর ক্ষেত্রে বিজেপি নেতাদের যুক্তি, এই যাদব নেতার হাত ধরে লালুপ্রসাদের তথাকথিত যাদব ভোটব্যাঙ্কে থাবা বসানো।
বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছ থেকে সবুজ সংকেত পাওয়ার পরেই পাপ্পুকে এনডিএ জোটে সামিল করতে মাঠে নেমেছেন কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী রাধামোহন সিংহ। আজ পটনায় রাজ্য দফতরে দিনভর দলের জেলা ও ব্লকস্তরের নেতাদের সঙ্গে এ ব্যাপারে তিনি কথাও বলেছেন। রাজ্যে যাদব ভোট প্রায় ১৪.৪ শতাংশ। সেই ভোটের কিছুটা হলেও নিজেদের দিকে টানতে চাইছে বিজেপি। সে কারণেই পাপ্পু যাদবকে জোটে নিতে আগ্রহ বেড়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের। নরেন্দ্র মোদীর বিহার সফরের আগেই, চলতি সপ্তাহের শেষে তাঁকে এনডিএ-তে সামিল করাতে উদ্যোগী হয়েছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব।
উত্তর বিহারের কোশী এলাকায় যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে পাপ্পুর। আরজেডি গত লোকসভা নির্বাচনে মাধেপুরা, আরারিয়া, বাঁকা এবং ভাগলপুর লোকসভা আসনে জিতেছিল। নরেন্দ্র মোদীর তুমুল হাওয়াতেও আরজেডি-র কোশী দূর্গে ফাটল ধরাতে পারেনি বিজেপি। সেই সাফল্যের জন্য রাজ্য-রাজনীতির পর্যবেক্ষকরা লালুপ্রসাদের থেকেও পাপ্পু যাদবকে বেশি কৃতিত্ব দিয়েছিলেন। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই লালুপ্রসাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন পাপ্পু। নিজেকে তাঁর উত্তরাধিকারী বলে দাবি করলে দল থেকে তাঁকে বহিস্কার করেন লালুপ্রসাদ। প্রথমে নীতীশ কুমারের দিকে ঝুঁকলেও পরে বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন তিনি। ইতিমধ্যেই দিল্লিতে অমিত শাহের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক করেছেন পাপ্পু যাদব। গত কাল দিল্লিতে সাংবাদিকদের কাছে পাপ্পুর এনডিএ-তে যোগ দেওয়ার সম্ভবনা নাকচ করেননি অমিত শাহও।
বিজেপির তরফে পাপ্পু যাদবকে কোশী এলাকার ১৮ থেকে ২০টি বিধানসভার আসন ছাড়ার প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে। বিজেপির সেই প্রস্তাব মানতে চাননি পাপ্পু। শুধু কোশী এলাকা নয়, গোটা বিহার জুড়েই যাদব প্রভাবিত ২৫টি আসন দাবি করেছেন তিনি। তাতে অবশ্য নারাজ বিজেপি। তবে দু’তরফেই জোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা হয়ে গিয়েছে। পাপ্পু বলেন, ‘‘লালুপ্রসাদ-নীতীশ কুমারের জোটকে হারাতে সব দরজাই খোলা। আর বিজেপি তো কেন্দ্রের শাসক দল।’’ আজ যাঁরা ধর্মনিরপেক্ষ সাজছেন তাঁরা যে একদা বিজেপির সঙ্গে জোটে ছিলেন, সে কথাও পাপ্পু বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন। লালুপ্রসাদের ১৫ বছর আর নীতীশ কুমারের ১০ বছরে সংখ্যালঘু এবং যাদব সম্প্রদায়ের জন্য কোনও উন্নয়নই হয়নি বলে পাপ্পুর দাবি। এনডিএ-তে সামিল হয়ে সেটাই তিনি করতে চান বলে মাধেপুরার সাংসদ পাপ্পুর ইঙ্গিত।