প্রতীকী ছবি।
রাখিবন্ধনের দিন খোলা থাকবে অফিস। দফতরে ঢুকলেই মহিলা সহকর্মীরা পরাবেন রাখি— এমনই ফরমানে হতবাক হয়েছিলেন মণিপুরের সরকারি কর্মীরা।
তা আবার হয় নাকি! কোথাও একই দফতরে কাজ করেন স্বামী-স্ত্রী। কোনও দুই সহকর্মীর মধ্যে রয়েছে গোপন ভালবাসা। সে সব সম্পর্কে রাখির জায়গা কোথায়? কিন্তু সরকারি ‘ফতোয়া’ না মেনেও উপায় নেই। দিনদু’য়েক আগে এক মোবাইল বার্তা পান অনেক সরকারি কর্মী। তাতে লেখা ছিল, সোমবার রাখি উৎসবের দিন খোলা থাকবে অফিস। মহিলা কর্মীরা রাখি বাঁধবেন পুরুষ সহকর্মীদের হাতে।
প্রথমে বিশ্বাস করতে চাননি কেউ কেউ। কিন্তু পরদিন সংবাদপত্রে একই খবর দেখে ক্ষোভ ছড়ায় গোটা রাজ্যে। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে— শুধু ধর্মাচরণের অধিকার নয়, ব্যক্তিগত সম্পর্কেও নাক গলাতে চাইছে তারা। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ে বীরেন সিংহের সরকার।
এ সব তারা কিছুই জানত না বলে রবিবার দাবি করল রাজ্য সরকার! ফেসবুকে মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ ঘোষণা করেন, ওই নির্দেশ ভুয়ো ও ভিত্তিহীন। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের সাইবার ক্রাইম দফতরে মামলা রুজু করা হয়েছে। খোঁজা হচ্ছে, কোথা থেকে নকল নির্দেশ ছড়ানো হয়েছে।
সরকারি কাগজে, কর্তার স্বাক্ষর-সহ বিজ্ঞপ্তি। তাতে উল্লেখ রয়েছে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের। বলা হয়েছে, নারী-পুরুষের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধন দৃঢ করতে কবি শান্তিনিকেতনে রাখিবন্ধন উৎসবের সূচনা করেছিলেন। লেখা ছিল, কর্মক্ষেত্রে পুরুষ ও মহিলা কর্মীদের মধ্যে সুস্থ সম্পর্ক বজায় রাখতে রাখির গুরুত্ব অপরিসীম। নির্দেশনামায় স্বাক্ষর ছিল পার্সোনেল দফতরের অবর সচিব ভবানন্দ শর্মার।
কিন্তু তাঁর নামের বানান দেখে কারও কারও সন্দেহ হয়। ভবানন্দের বদলে লেখা ছিল ‘ভবনাদন্দ শর্মা’। সংবাদমাধ্যমের কাছ থেকে ফোন পেয়ে ভবানন্দবাবু বিষয়টি জানতে পারেন। তড়িঘড়ি পাল্টা বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়, এমন কোনও নির্দেশ সরকার দেয়নি। যাচাই না করে খবর প্রকাশ ও সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করার অভিযোগে একটি সংবাদপত্রের বিরুদ্ধেও মামলা রুজু করবে মণিপুর সরকার।